জেলা প্রতিনিধি, নড়াইল:
অধিকাংশ রাস্তায় গোড়ালি, আবার কোথাও হাঁটুপানি জমেছে। এতে চরম দুর্ভোগে পড়েছেন শহরবাসী। তাঁদের অভিযোগ, পর্যাপ্ত নালা ব্যবস্থাপনা না থাকা, বিদ্যমান নালার অচলাবস্থা এবং অপরিকল্পিত নগরায়ণের ফলে সামান্য বৃষ্টিতেই পৌরসভার অনেক এলাকায় জলাবদ্ধতা দেখা দিচ্ছে।
রাতভর ভারী বৃষ্টিতে নড়াইল পৌর শহরের বিভিন্ন স্থানে জলাবদ্ধতার এমন চিত্র দেখা গেছে। পানি উঠেছে বিভিন্ন সরকারি কার্যালয়, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে শুরু করে ঘরবাড়িতেও।
নড়াইল পৌরসভা সূত্রে জানা যায়, ১৯৭২ সালে ২৮ দশমিক ৫০ বর্গকিলোমিটার এলাকা নিয়ে গঠিত হয় পৌরসভাটি। ১৯৯৯ সালে এটি প্রথম শ্রেণির পৌরসভায় উন্নীত হয়। শহরটির জন্য ৫৫ কিলোমিটার নালা ব্যবস্থাপনা প্রয়োজন হলেও আছে মাত্র ৩ কিলোমিটার, যা প্রয়োজনের তুলনায় নগণ্য।
সোমবার (২৬ আগস্ট) সকালে সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে, বৃষ্টিতে পৌরসভার ভাদুলিডাঙ্গা, বউবাজার, গোহাটখোলা, ভওয়াখালী, দুর্গাপুর, আলাদাতপুর, মহিষখোলাসহ পৌর এলাকার অনেক স্থানে ঘরবাড়ি, প্রতিষ্ঠান ও রাস্তায় পানি জমেছে। জলাবদ্ধতায় অনেক সড়ক চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। ঘরের সামনে পানি জমায় অনেকে গৃহবন্দী হয়ে পড়েছেন। কারও কারও রান্নাঘর-টিউবওয়েলের কিছু অংশ ডুবে গেছে পানির নিচে।
হাঁটুপানি জমেছে ভাদুলিডাঙ্গা এলাকার বাসিন্দা তাজিমুর রহমানের বাড়ির চারপাশে। তিনি বলেন, গত কয়েক দিন ধরে গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি নেমেছে, এরপর গতকাল রাতভর ভারী বৃষ্টি হয়েছে। ফলে আমাদের ঘরে পানি উঠে গেছে। বাড়ির চারপাশে হাঁটুপানি জমে আছে।
শহরের আলাদাতপুরের বাসিন্দা আশিকুর রহমান সৌরভ বলেন, এলাকার ৫০ থেকে ৬০টি বাড়িতে পানি উঠেছে, আমাদের বাড়ির নিচতলায় হাঁটুপানি জমেছে। টিউবওয়েলের কিছু অংশ পানিতে ডুবেছে। ফলে বিশুদ্ধ পানির সংকটে পড়েছি আমরা। এদিকে রান্নাঘরেও পানি প্রবেশ করায় আজ সকালের রান্নাও বন্ধ।
এ বিষয়ে নড়াইল পৌরসভার নির্বাহী কর্মকর্তা ওহাবুল আলম বলেন, প্রতিবছর পৌরসভার জলাবদ্ধতা নিরসনে কাজ করা হয়। এ বছরও বিভিন্ন স্থানে ঘুরে ঘুরে পানি সরাতে কাজ করা হয়েছে। তবে স্থায়ীভাবে জলাবদ্ধতার সমস্যা সমাধানের জন্য প্রয়োজন প্রায় ৫৫ কিলোমিটার নালা নির্মাণ। এর জন্য প্রয়োজনীয় অর্থ পৌরসভাটির হাতে নেই। তবে তাঁরা চেষ্টা করছেন, অর্থায়ন পেলে নালা নির্মাণের মাধ্যমে এ সমস্যার অনেকটাই সমাধান হবে।