সুনামগঞ্জ প্রতিনিধি:

২৫০ শয্যা বিশিষ্ট সুনামগঞ্জ জেলা সদর হাসপাতালে স্বাস্থ্যসেবার মান বাড়াতে ২০২২ সালে নিয়োগ দেয়া হয় ৬৪ জন আউটসোর্সিং স্বাস্থ্য কর্মী। এরপর ২০২৩ সালে তাদের মেয়াদ বাড়ানো হয় ২০২৪ সালের জুন মাস পর্যন্ত। মেয়াদ শেষ হওয়ার পর তাদের সাথে করা চুক্তি অনুযায়ী হাসপাতালে না আসার জন্য নির্দেশনা দেয়া হয়। যদিও তাদের নিয়োগ ও কাজ নিয়ে নানান সময় প্রশ্ন উঠেছিল। কাজে না এসেও অনেকের বিরুদ্ধে বেতন নেয়ার অভিযোগও ছিল। আউটসোর্সিং কর্মীদের দাবী হচ্ছে তাদের চাকরি পুনর্বহাল করা, বকেয়া বেতন পরিশোধ, আরএমও ও তত্বাবধায়কের পদত্যাগ।

তবে মন্ত্রণালয়ের উপসচিব মোহাম্মদ ইকবাল হোসেনের স্বাক্ষরিত ১২ জুনের অফিস আদেশ বলছে, আউটসোর্সিংয়ে নিয়োগকৃত কর্মীদের চুক্তি বৃদ্ধি করা যাবেনা। নতুন টেন্ডার আহবান করে নতুন মানুষ নিতে হবে। এর কারণ হিসেবে দেখানো হয়েছে একই সেবা সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান সুনির্দিষ্ট একটি হাসপাতাল/প্রতিষ্ঠানে একাধারে কাজ করার ফলে বিভিন্ন অনিয়ম ও দুর্নীতি পরিলক্ষিত হয়। তাই আউটসোর্সিং প্রক্রিয়ায় কর্মী সেবা ক্রয়ে মন্ত্রণালয়ের এই নির্দেশনা মানার আদেশ দেয়া হয়।

নিয়ম অনুযায়ী চুক্তি বাতিলের পর চুপ থাকলেও ১৯ আগস্ট বিভিন্ন দাবী দাওয়া নিয়ে সরব হন তারা। ৫ দিন ধরে অবস্থান নিয়েছেন হাসপাতালে।

হাসপাতালের সেবা বিঘ্নিত হচ্ছে এমন অবস্থায় শনিবার সকালে তাদের সাথে শান্তিপূর্ণ সমাধানের লক্ষ্যে আলোচনায় বসেন হাসপাতাল কতৃপক্ষ। যেখানে হাসপাতালের দায়িত্বশীল সবাই উপস্থিত ছিলেন। এসময় অবস্থান কর্মসূচি থেকে সরে এসে আলোচনায় বসার জন্য একাধিকবার আহবান জানানো হয় অবস্থানরত স্বাস্থ্য কর্মীদের। হাসপাতাল কতৃপক্ষের ডাকে তারা সাড়া দেননি। ক্ষুব্ধ হন  হাসপাতাল কতৃপক্ষ ও স্থানীয়রা। এসময় তারা জানান, তাদের উদ্দেশ্য সৎ থাকলে আলোচনার মাধ্যমে সুষ্ঠু সমাধান করা যেতে পারে। তারা আলোচনায় আসতে চাইছে না কারণ তাদের উদ্দেশ্য অন্য কিছু। তাদেরকে কে ইন্ধন দিচ্ছে হাসপাতালের স্বাভাবিক পরিবেশ অস্বাভাবিক করতে সেটা খুজে বের করে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া উচিৎ। একটা হাসপাতাল এরকম সিন্ডিকেটের পাল্লায় পড়ে বে আইনি কাজ করতে পারে না।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক চিকিৎসক বলেন, তাদের আন্দোলনের তোপে যদি তাদেরকে পুনর্বাহলের সুযোগ দেয়া হয় সেটা হবে বে আইনি। এর জবাব মন্ত্রণালয়কে দিতে হবে কতৃপক্ষের। এরকম অন্যায় দাবি একবার মানা হলে বারবার তারা সাহস পাবে। তারা এখন হাসপাতালের কেউ না তারা কোন যুক্তিতে পদত্যাগ দাবী করে। পদত্যাগ চাইলে আমরা যারা হাসপাতালে আছি কর্মরত তারা চাইবো। এদের বিষয়টা এখন বাড়াবাড়ি পর্যায়ে চলে যাচ্ছে।

তত্বাবধায়ক ডা. মাহবুবুর রহমান বলেন, আমি চাইতেছিলাম যেন তাদেরকে বুঝিয়ে যা করার শান্তিপূর্ণ ভাবে করা যায়। কিন্তু দিন দিন পরিস্থিতি ঘোলাটে করা হচ্ছে। আমাদেরকে হুমকি ধামকি দেয়া  হচ্ছে। হাসপাতালের ডাক্তার ও স্টাফরা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন। রোগীদের সেবা বিঘ্নিত হচ্ছে। হাসপাতালের স্বাভাবিক পরিবেশ অস্বাভাবিক করা হচ্ছে। এখন আইনের সহায়তা নেয়ার চিন্তা করতেছি।

Share.
Leave A Reply

Exit mobile version