আল নোমান শান্ত,
দুর্গাপুর (নেত্রকোনা) প্রতিনিধি –
নেত্রকোনা জেলার দুর্গাপুরে সৌন্দর্য বৃদ্ধির জন্য রং-তুলি হাতে নিয়ে কাজ করছেন বৈষম্য বিরোধী তরুন আলেম সমাজ। দুর্গাপুরে দেয়াল লিখন ও আরবী ক্যালীগ্রাফির মাধ্যামে বদলে গেছে দুর্গাপুরের দেয়ালগুলোর চিত্র।
ছাত্র-জনতার আন্দোলনে হাসিনা সরকারের পতনের পর সারা দেশের মতো দুর্গাপুরেও রংতুলির আঁচরে দেয়ালগুলোকে রাঙিয়ে দিয়েছে দুর্গাপুরের বৈষম্য বিরোধী আলেম সমাজ।
সরেজমিনে দেখা যায় সুসং সরকারি কলেজ, দুর্গাপুর মহিলা ডিগ্রি কলেজ, জামিউল উলুম কাচারী মাদ্রাসা এবং অডিটনিয়ামের দেয়ালগুলোতে শোভা পাচ্ছে জুলাই বিপ্লবের নানা শ্লোগান সহ বিভিন্ন গ্রাফিতি।
দেয়ালে দেয়ালে বিভিন্ন ধরনের প্রতিবাদী স্লোগান এবং আরবী ক্যালিগ্রাফির মাধ্যমে ছাত্র আন্দোলনের চিত্র ফুটিয়ে তুলেছেন তরুন আলেমরা। বিভিন্ন মাদরাসার আলেম, হাফেজ এবং মাদরাসায় পড়ুয়া শিক্ষার্থীরা অংশ নেন এই কর্মসূচিতে। স্কুল-কলেজ পড়ুয়া শিক্ষার্থীরাও তাঁদের সমর্থন জানিয়ে উৎসাহ প্রদান করে। তাদের ছিল না কোন ক্লান্তি, অবসাদ।
সকাল থেকে রাত পর্যন্ত ঝিরিঝিরি বৃষ্টিতে ভিজেই তরুন আলেমগন ফুটিয়ে তুলছিলেন সৌন্দর্য। সুসং সরকারি মহাবিদ্যালয়ের দেয়াল, মহিলা ডিগ্রি কলেজের দেয়াল,অডিটোরিয়ামের দেয়ালসহ, কাচারী মাদরাসার দেয়ালেও চোখে পড়ে, রং-তুলির মাধ্যমে ফুটিয়ে তোলা তাঁদের এই প্রতিবাদী স্লোগান এবং আরবী ক্যালিগ্রাফি।
এসব লিখনীতে রয়েছে, আবরার ফাহাদ থেকে আবু সাঈদের কথা। জালিমের সামনে প্রতিবাদের ভাষা। প্রয়োজনে আবারও যুদ্ধে যাওয়ার অঙ্গীকার। বিভিন্ন দৃশ্যে ফুুঠে উঠেছে এই বাংলার নতুন স্বাধীনতা, তিতুমীরের সেই বাঁশের কেল্লা। এর সাথে আরবী ক্যালিগ্রাফিও সৌন্দর্য বৃদ্ধি করেছে এই পৌর শহরের।
মুফতী ইসলাম মাহমুদ বলেন, জালিমের সামনে মুসলিমরা কখনও মাথা নত করে না, তা আবু সাঈদ এ প্রজন্মকে দেখিয়ে দিয়েছে। জালিমের মসনদকে তছনছ করার জন্য এভাবেই যুগে যুগে তৈরি হবে নতুন প্রজন্মের আবু সাঈদরা। তিতুমীরের সেই পুরনো ঘুনে ধরা বাঁশের কেল্লা থেকে যদি আবারও যুদ্ধের ঘোষণা আসে, এই প্রজন্ম সেই যুদ্ধে প্রাণ বিলিয়ে দিয়ে বিজয় অবশ্যই ছিনিয়ে আনবে। ইনশাআল্লাহ।
হাফেজ মোবাশ্বির হাসান বায়জিদ বলেন, এদেশে স্বাধীনতার নতুন সূর্যের উদয় হয়েছে এবার সংস্কারও হবে। নতুন প্রজন্ম যেন জানতে পারে, ২৪ এর এই আন্দোলন সম্পর্কে তাই আমাদের এই দেয়াল লিখন এবং আরবী ক্যালিগ্রাফি করা।
আরও কয়েকজন মাদরাসা শিক্ষার্থীদের সাথে কথা বললে তারা বলেন , এদেশ আমাদের সকলের, এদেশে বৈষম্যের জায়গা নেই। সকল শ্রেণী পেশার মানুষ একত্রে বসবাস করবে এটাই আমাদের চাওয়া। এমন একটা দেশ গড়াই আমাদের অঙ্গীকার।
তরুন আলেম সমাজের এমন উদ্যোগে, প্রবীণ ওলামাগন তাঁদের প্রেরণা দিয়ে তাঁদের কাছ থেকে নতুন কিছু আশা করেন, আশা করেন আদর্শ একটি রাষ্ট্রের। এবং স্থানীয়রা অনেক খুশি হয়েছেন, পথচারীরাও দাঁড়িয়ে থেকে অবাক হয়ে উপভোগ করেছেন এই লিখনীর সৌন্দর্য।