নোয়াখালী-প্রতিনিধি মোহাম্মদ শহিদ
নোয়াখালীর কবির হাট উপজেলার বাটইয়া ইউনিয়ন কাছারি হাট বাজারে অবস্থিত ইউনিয়ন ভূমি অফিস যেন এক দুর্নীতির স্বর্গরাজ্যে পরিণত হয়েছে।
এই অফিসের উপসহকারী ( তসিলদার ) দেলোয়ার হোসেন টাকা ছাড়া কোন কাজই করেন না। ভূমি সংক্রান্ত যেকোন সেবার বিনিময়ে হাতিয়ে নিচ্ছে তিনি লক্ষ লক্ষ টাকা । এই অফিসে গ্রাহকদের হয়রানি চরম আকার হয়ে দাঁড়িয়েছে।
সরেজমিনে গিয়ে জানা যায় , বাটইয়া ইউনিয়ন ভূমি অফিসে নামজারি, জমা খারিচ, খাজনা আদায়, জমির পর্চা (খসড়া) তুলা সহ ভূমি সংক্রান্ত সকল কাজে সরকারি নিয়মকে তোয়াক্কা না করে অনৈতিক ভাবে হাতিয়ে নিচ্ছে লক্ষ লক্ষ টাকা ।
চুক্তির টাকা ছাড়া কোন ফাইলই নড়ে না। টাকা দিলেও নির্ধারিত সময়ে কোন কাজ আদায় হয় না । ভূমি অফিসের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা গ্রাহক থেকে বাড়তি টাকা নেয়ার পরও বিভিন্ন ভাবে হয়রানির স্বীকার হয় এমনও অভিযোগ উঠেছে।
বাটইয়া ইউনিয়ন ভূমি অফিসে আসা এক গ্রাহক (নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক) তিনি বলেন উপসহকারী (তসিলদার) দোলেয়ার হোসেন এর কাছে আমি ছয় শতাংশ জায়গা নাম জারি করতে গেলে তিনি আমাকে বলে নামজারি করতে হলে আপনাকে আট হাজার টাকা দিতে হবে এক টাকা ও কম হবে না।
এই বিষয় একাধিক গ্রাহক বলেন, ইউনিয়ন ভূমি অফিসের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা বিভিন্ন অনিয়ম, দুর্নীতিতে জড়িয়ে পড়ছে। চুক্তি ছাড়া কোন কাজ করেন না এই অফিসের কর্মকর্তা কর্মচারীরা।
সেবা প্রাপ্তির ৯০ শতাংশ লোকই চরম হয়রানির শিকার হতে হয় আজ না-কাল এইভাবে চলে দিনের পর দিন মাসের পর মাস । সরকারি নীতিমালা উপেক্ষা করে অতিরিক্ত হারে দাবিকৃত উৎকোচ না দিলে সেবা গ্রহীতারা পান না তাদের কাঙ্খিত
এই বিষয় দলিল লেখক রিপন তিনি বলেন , বাটইয়া ইউনিয়নে তসিলদার দেলোয়ার হোসেন আমার ইউনিয়নে মানুষদের চুষে খাচ্ছে, একটা নামজারি জন্য ৮/১০ হাজার টাকা করে নিচ্ছে জমির পরিমাণ বেশি হলো বেড়ে যায় টাকার অংক।
তিনি আরো বলেন, আমরা যারা দলিল লেখক আমাদের থেকেও তিনি ৮ হাজার টাকা করে নেন , তিনি আরো বলেন এই টাকা উপজেলার ভূমি অফিসের বিভিন্ন দপ্তরে নাকি টাকা দিতে হয় এমন মন্তব্য ও করেছেন তসিলদার বলে জানান তিনি।
ভুক্তভোগী মফিজ মিয়া বলেন, বাটইয়া ইউনিয়নের তসিলদার দেলোয়ার হোসেন একজন ঘুষখোর তার অফিসে নামজারি করতে গেলে দুই দলিলে আমার কাছ থেকে ৩০ হাজার টাকা নিয়ে কাজ করে নি,আমাকে নানা ভাবে হয়রানি করে। পরবর্তীতে বাধ্য হয়ে আমার ছেলে উপজেলা থেকে নামজারি করায়।
দেলোয়ার হোসেন এখনো আমার পরিচিত লোকদের কাছে বলে বেড়ায় আমার কাছে তিনি নাকি টাকা পাবেন, ঘুষখোর দেলোয়ার হোসেন বাটইয়া ভূমি অফিস থেকে না যাওয়া পর্যন্ত সেবার গ্রহণের জন্য যাবেন না বলে জানান তিনি,
ভূক্তভোগীরা আরো জানান, বাটইয়া ইউনিয়ন ভূমি অফিসের দুর্নীতি এমন চরমে পৌঁছেছে সরকারি নীতিমালার বাইরে চুক্তি অনুযায়ী মোটা অংকের ঘুষ ছাড়া কোন নামজারি হয় না। নামজারির জন্য ৮ /১০ হাজার থেকে শুরু করে মোটা অংকের টাকা আদায় করা হয়।
উপজেলা ভূমি অফিসের কতিপয় কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বিভিন্ন স্তরে ভাগ দেয়ার কথা বলে। ভুক্তভোগীদের দাবি তসিলদার দেলোয়ার হোসেন সহ যারা এ এইসব কর্মকান্ডের সাথে জড়িত তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বান জানান।
বিভিন্ন মাধ্যমে জানা যায় ২০১৬ সাল থেকে ভারতে চিকিৎসার জন্য প্রতি বছর ১৮ থেকে ১৯ লক্ষ টাকা খরচ করে চিকিৎসা নেন, বাটইয়া ইউনিয়ন ভূমি অফিসের উপসহকারী (তসিলদার) দেলোয়ার হোসেন।
অভিযোগের বিষয় জানতে চাইলে বাটইয়া ইউনিয়নের ভূমি অফিসের উপসহকারী( তসিলদার) দেলোয়ার হোসেন বলেন,আমার বিরুদ্ধে অভিযোগ গুলো মিথ্যা আমাকে নিয়ে ষড়যন্ত্র চলতেছে, তবে ভারতের চিকিৎসা নেওয়ার বিষয় তিনি সত্যতা নিশ্চিত করেন। তিনি বলেন বাবার জমিন বিক্রি করে ভারতে গিয়ে চিকিৎসা নিয়েছি বলে এমনটাই দাবি তার।
এই বিষয়ে উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) নিগার সুলতানা এর মুঠোফোনে যোগাযোগ করার চেষ্টা করলে তিনি ফোন রিসিভ করেন নি।