স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান বলেছেন, শিক্ষার্থীদের আন্দোলন ঘিরে সহিংসতায় কোনো শিশু মারা যায়নি। শিশু বলতে আমরা যা বুঝি তেমন কেউ মারা যায়নি, হয়ত দুয়েকজন কিশোর মারা গেছে।
শনিবার (০৩ আগস্ট) রাতে সচিবালয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের নিজ দপ্তরে শীর্ষ কর্মকর্তাদের সঙ্গে দীর্ঘ আড়াই ঘণ্টা বৈঠক শেষে সম্মেলন কক্ষে সাংবাদিকদের এ কথা জানান তিনি।
এদিকে, জাতিসংঘ বলেছে সহিংসতায় এ পর্যন্ত ৩২টি শিশু মারা গেছে। এ বিষয়ে জানতে চাইলে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, আমার মনে হচ্ছে, শিশুর ব্যাখ্যা আপনি সঠিকভাবে দিচ্ছেন না। শিশুর একটা সংজ্ঞা আছে। ১৮ বছর বয়সীদের কিশোর বলে, শিশু বলে না। আর ১৮ বছরে আমার মনে হয়, যৌবনপ্রাপ্ত হয়ে যায়। সে তখন আর কিশোরও থাকে না, সে যুবক, আমার মতে।
তিনি বলেন, যেহেতু বয়সের একটি বাধা আছে, সেহেতু তাকে এখন কিশোর বলা হয়। কোনো শিশু এখানে মারা যায়নি। শিশু বলতে আমরা যা বুঝি, তাতে কোনো শিশু মারা যায়নি। এখানে হয়ত দুয়েকজন কিশোর মারা গেছে। এই আন্দোলনে তাদের ঢাল হিসেবে নিয়ে আসা হয়েছিল। তারা সামনে ছিল, পিছনে ছিল আসল, যাদের চেহারাটা শিশুদের আড়ালে ছিল। পেছনের শক্তিটাকে রুখতেই এ ঘটনাগুলো ঘটেছে।
এই আন্দোলনে পুলিশের গুলিতে কেউ মারা যায়নি, তাহলে কাদের গুলিতে মারা গেছে? জানতে চাইলে মন্ত্রী বলেন, আমরা যে গুলিগুলো পেয়েছি, সেগুলোর অনেকগুলোই পুলিশের রাইফেলের গুলি না, পুলিশ ব্যবহার করেনি।
তাহলে কারা করেছেন, দেখা গেছে যুবলীগের নেতাও গুলি করেছেন? এর জবাবে মন্ত্রী বলেন, যুবলীগের নেতা তাদের বাধা দিতে গেছেন। গুলি করতে যাননি। ছাত্রলীগ, আওয়ামী লীগের নেতা কতজন মারা গেছেন, নিশ্চয়ই জানেন।
অসহযোগ আন্দোলন নস্যাৎ করতে আপনাদের কী পরিকল্পনা? জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমরা নস্যাৎ করতে চাই না। আন্দোলন যদি এ দেশের জনগণ যুক্ত হয়, হবে। সেগুলো আমরা নস্যাৎ করতে চাই না।
তাহলে আন্দোলনকারীরা কোনো আক্রমণের শিকার হবে না, নিশ্চিত? এমন প্রশ্নের জবাবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, এখন আপনাকে যদি কেউ মার দেয়, আপনি তাকে মার দেবেন না? আপনি কী বসে থাকবেন? আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে আত্মরক্ষা অধিকার দেওয়া আছে। আপনাকেও অধিকার দেওয়া আছে। আপনাকে যদি কেউ হামলা করে, তাহলে প্রাণ ও সম্পদ রক্ষায় আত্মরক্ষা করতে পারেন। এটা আইনি অধিকার।
আন্দোলনকারীদের সরকার পতনের একদফা দাবি নিয়ে তিনি বলেন, আন্দোলনকারীরা এখন আর কোটা আন্দোলনে নেই, ছাত্রদের আন্দোলনে নেই। এটা এখন রাজনৈতিক আন্দোলনে চলে গেছে। কাজেই ছাত্রদের ভুল বুঝিয়ে অন্যদিকে নিয়ে যাওয়ার জন্য যারা চেষ্টা করেছেন, তারাই এই কাজগুলো করেছেন।