ঢাকা, গাজীপুর, নারায়ণগঞ্জ ও নরসিংদী জেলায় রোববার, সোমবার ও মঙ্গলবার কারফিউ অব্যহত থাকবে বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল। এই তিন দিন অবশ্য কারফিউ শিথিলের সময় আরও দুই ঘণ্টা করে বাড়ানো হয়েছে। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী জানিয়েছেন, এসব এলাকায় সকাল ৭টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত ১১ ঘণ্টা কারফিউ শিথিল থাকবে।
রাজধানীর ধানমন্ডিতে নিজ বাসায় শনিবার রাতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান। বৈঠক শেষে সংবাদ সম্মেলন করে কারফিউ বিষয়ে সাংবাদিকদের জানান তিনি।
কারফিউ শিথিল করার বিষয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘যেহেতু পরিস্থিতির ধীরে ধীরে উন্নতি হচ্ছে। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ভালোর দিকে যাচ্ছে। সে জন্য আমরা আমাদের যে সান্ধ্য আইন, যাকে কারফিউ বলা হয়, সেটি আরেকটু শিথিল করতে চাচ্ছি।’ তিনি বলেন, ‘ঢাকা মহানগর ও ঢাকা জেলা, গাজীপুর মহানগর ও গাজীপুর জেলা, নারায়ণগঞ্জ ও নরসিংদী জেলায় রোববার, সোমবার ও মঙ্গলবার কারফিউ শিথিল থাকবে সকাল সাতটা থেকে সন্ধ্যা ছয়টা পর্যন্ত। খুব শিগগিরই চেষ্টা করব কারফিউ আরও শিথিল করার জন্য।’
বাকি জেলাগুলোতে সংশ্লিষ্ট জেলা প্রশাসক ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী সমন্বয় করে তাঁদের নিজ নিজ জেলায় কারফিউ দেওয়ার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবেন বলে জানান স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী।
সংবাদ সম্মেলনে নারায়ণগঞ্জের কয়েকটি ঘটনা উল্লেখ করেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘নারায়ণগঞ্জে পুলিশ সন্দেহে এক ব্যক্তিকে পেটানোর পর মৃত ভেবে চলে যায়। পরে পুলিশ তাঁকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করেছে। এখন সে মৃত্যুর সঙ্গে লড়াই লড়ছে।’ পুলিশকে হত্যা করে রশি দিয়ে ঝুলিয়ে রাখার একটি স্থিরচিত্রও দেখান তিনি। এ ছাড়া হাইওয়ে পুলিশের দায়িত্বে থাকা ১২ পুলিশ সদস্যকে হত্যার উদ্দেশ্যে নারায়ণগঞ্জের একটি হাসপাতালে আগুন লাগিয়ে দেওয়ার কথা উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, র্যাব হেলিকপ্টার দিয়ে তাঁদের উদ্ধার করেছে।
আন্দোলনকারীদের মধ্যে পাঁচজনকে হেফাজতে নেওয়া হয়েছে বলে জানান স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘আন্দোলনকারীদের ওপর নানা আঘাত আসতে পারে, তাই তাঁরা লুকিয়ে ছিলেন বলে পরিবারকে জানিয়েছেন। আমাদের সঙ্গে তাঁরা যোগাযোগ করেছেন, সে জন্যই তাঁদের নিরাপদ হেফাজতে নিয়ে এসেছি। তাঁরা এখানে এসে অনেকের নাম–ঠিকানা বলছেন, তাঁদের আন্দোলন ডাইভার্ট করে নেওয়ার জন্য যাঁরা উসকানি দিয়েছেন, তাঁদের কথা বলছেন। পুলিশ কর্মকর্তারা তাঁদের থেকে শুনছেন। তাঁদের নিরাপত্তার বিষয়টিও খেয়াল করছেন। যাঁদের নাম–ঠিকানা বলছেন, সেগুলো আমরা আমলে আনছি। আমরা মনে করছি, শিগগিরই এগুলোর সম্পর্কে জানতে পারবেন।’
যাঁদের হেফাজতে নেওয়া হয়েছে, তাঁদের মামলার আসামি করার সম্ভাবনা আছে কি না, সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘এটা বলে দেবে তাঁরা কী করেছেন না করেছেন কিংবা তারা যদি কিছু করে থাকেন, আমরা তো এখনো জানি না।’