ঢাকা, ২৪ জুলাই, ২০২৪: গত কয়েক দিনে দেশে সহিংসতার সঙ্গে জড়িত সবাইকে বিচারের মুখোমুখি হতে হবে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।
বুধবার (২৪ জুলাই) রাজধানীর তেজগাঁওয়ে ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগের কার্যালয়ে দলের নেতাকর্মীদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় সভাপতির বক্তব্যে ওবায়দুল কাদের এসব কথা বলেন।
ঢাকা মহানগর দক্ষিণ ও ঢাকা মহানগর উত্তরের অন্তর্গত জাতীয় সংসদ এবং সংশ্লিষ্ট এলাকার আওয়ামী লীগ, সহযোগী সংগঠনের নেতারা এতে উপস্থিত ছিলেন।
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, যারা এ ধরনের ঘৃণিত সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড ও অগ্নিসন্ত্রাসের সঙ্গে জড়িত- সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে চিহ্নিত করে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ সরকার দেশের জনগণের প্রতি দায়বদ্ধ। এই দায়বদ্ধতা পূরণে কোনো অপশক্তিকে কোনো ছাড় দেওয়া হবে না। এই সহিংসতার সঙ্গে জড়িত সবাইকে বিচারের মুখোমুখি হতে হবে।
তিনি বলেন, বিএনপি-জামায়াত অপশক্তির মূল উদ্দেশ্যই হলো বাংলাদেশকে পিছিয়ে দেওয়া। শেখ হাসিনার অদম্য স্পৃহা ও বলিষ্ঠ নেতৃত্বে বাংলাদেশ বিশ্বের বুকে এক মর্যাদাশীল রাষ্ট্র হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। উন্নয়ন-অগ্রগতির চলমান চাকাকে থামিয়ে দিতে বিএনপি-জামায়াত ও তাদের দোসররা সুপরিকল্পিতভাবে এই ধ্বংসযজ্ঞ চালায়। যে উন্নয়ন-অগ্রগতির মাধ্যমে জনগণের কল্যাণ হয়েছে, জীবনমানের উন্নয়ন ঘটেছে সেই উন্নয়ন-অগ্রগতির চাকাকে থমকে দেওয়ার অপচেষ্টা করা এবং তার উপরে ন্যক্কারজনক ধ্বংসযজ্ঞ চালানো একটি গণবিরোধী রাজনৈতিক অপশক্তির পক্ষেই সম্ভব। এই অপশক্তি মহান মুক্তিযুদ্ধ ও স্বাধীনতার মূল চেতনার বিপরীতে দাঁড়িয়ে বাংলাদেশকে একটি অকার্যকর রাষ্ট্রে পরিণত করতে চায়। যা আমরা কোনোভাবেই হতে দিতে পারি না।
সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী আরও বলেন, দেশবিরোধী এই অপশক্তি বিভিন্ন ধরনের গুজব সৃষ্টি করছে। মিথ্যা তথ্য দিয়ে আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি নষ্ট করার অপতৎপরতায় লিপ্ত। এদের বিরুদ্ধে সবাইকে সতর্ক থাকতে হবে এবং ঐক্যবদ্ধভাবে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে।
ওবায়দুল কাদের আরও বলেন, সম্প্রতি শিক্ষার্থীদের আন্দোলনকে ঢাল হিসেবে ব্যবহার করে রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে ইতিহাসের জঘন্যতম নারকীয় ধ্বংসযজ্ঞ চালিয়েছে বিএনপি-জামায়াত ছাত্রদল-শিবিরের সশস্ত্র ক্যাডাররা। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিএনপি সম্পর্কে যে বক্তব্য দিয়েছেন, তা সম্পূর্ণ নিখাদ এবং সুনির্দিষ্ট তথ্যের ভিত্তিতে। প্রধানমন্ত্রী শুধু নয়, সমগ্র দেশবাসীর কাছে এটা দিবালোকের ন্যায় পরিষ্কার যে এই সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড ও অগ্নিসন্ত্রাসের পেছনে বিএনপি-জামায়াতের রাজনৈতিক মদদপুষ্ট সন্ত্রাসী ক্যাডারবাহিনী জড়িত।
শিক্ষার্থীদের আন্দোলনকে পুঁজি করে যে নৈরাজ্যকর পরিস্থিতি সৃষ্টি করা হয়েছে, সন্ত্রাস ও সহিংসতার বিস্তার ঘটানো হয়েছে তা বাংলাদেশের ইতিহাসে নজিরবিহীন। শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের সমন্বয়করা প্রকাশ্যে বিবৃতি দিয়ে জানিয়েছে যে, এ ধরনের ন্যক্কারজনক সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড ও অগ্নিসন্ত্রাসের সঙ্গে তাদের কোনো সম্পর্ক নেই এবং তারা এর দায়ভার নেয়নি।
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের আরও বলেন, তারা আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীসহ অনেক নিরীহ মানুষকে নির্মমভাবে হত্যা করেছে। পুলিশ বাহিনীর সদস্যদের ওপর হামলা করেছে এবং অনেককে হত্যা করেছে। নজিরবিহীনভাবে সাংবাদিকদের উপর বর্বরোচিত হামলা করেছে। এমনকি এরা বাংলাদেশের উন্নয়ন-অগ্রগতির বিভিন্ন স্মারক যেমন মেট্রোরেল, এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে, মেয়র হানিফ ফ্লাইওভারের টোল প্লাজাসহ বাংলাদেশ টেলিভিশন ভবন, সেতু ভবন, স্বাস্থ্য অধিদপ্তর ভবন, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তর ভবন, বিআরটিএ, ডাটা সেন্টার, বিভিন্ন পুলিশি থানা ও পুলিশ বক্স, নরসিংদী কারাগার এবং বিভিন্ন স্থাপনা ও হাসপাতালে হামলা চালিয়েছে, অগ্নিসংযোগ করেছে।
নিজেদের সামর্থ্যের সর্বোচ্চ দিয়ে অসহায়, গরিব, দুস্থ মানুষের পাশে থাকার জন্য আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনগুলোর সব স্তরের নেতাকর্মীদের প্রতি আহ্বান জানান ওবায়দুল কাদের ৷ তিনি বলেন, সাম্প্রতিক সময়ে বিএনপি-জামাতের সহিংসতার ফলে দেশের সাধারণ মানুষের জীবিকা নির্বাহের কার্যক্রম স্থবির হয়ে পড়েছে। এমতাবস্থায় নিম্নবিত্ত, গরিব ও খেটে খাওয়া মানুষের প্রতি হাত বাড়িয়ে দেওয়ার জন্য দলীয় নেতাকর্মীদের পাশাপাশি সমাজের বিত্তবানদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা।