নওগাঁ প্রতিনিধি:

বগুড়া জেলার সান্তাহারে প্রতিষ্ঠিত ৫০ মেগাওয়াট পিকিং বিদ্যুৎ কেন্দ্র। গত ২০২৩ সালের ১৫ আগষ্ট জাতীয় শোক দিবসের আলোচনা সভায় সহকারি প্রকৌশলী মাহাথির মোহাম্মদ জাতির জনককে  নিয়ে কটুক্তি করেন।

সেখানে উপস্থিত থাকা কেউ সেটার প্রতিবাদ করেন না। সঙ্গে সঙ্গে অত্র প্রতিষ্ঠানের সাহায্যকারী মাসুদ রেজা প্রতিবাদ করেন। এই প্রতিবাদই কাল কাল হয়ে দাড়িয়েছে মাসুদ রেজার। এ বছর ১৫ আগষ্ট আসার আগেই  সান্তাহার থেকে কুমিল্লায় তাকে শাস্তিমূলক  বদলি করার অভিযোগ পাওয়া গেছে।

সান্তাহার ৫০ মেগাওয়াট পিকিং বিদ্যুৎ কেন্দ্রের অফিস সূত্রে জানা যায়, ২০২৩ সালের ১৫ আগষ্ট জাতীয় শোক দিবসে আলোচনা সভায় সহকারি প্রকৌশলী মাহাথির মোহাম্মদ জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে নিয়ে অবমাননাকর ও কটুক্তিকর  বক্তব্য প্রদান করেন।

  সেখানে উপস্থিত থাকা কেউ প্রতিবাদ না করলেও সঙ্গে সঙ্গে অত্র প্রতিষ্ঠানের সাহায্যকারী মাসুদ রেজা মৌখিক ভাবে প্রতিবাদ করেন। প্রতিবাদে তিন দিন পারহলেও প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপক এস, এম, ফরহাদ হোসেন কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করে নাই।

এরপর ২০২৩ সালের ১২ অক্টোবর মাসুদ রেজা লিখিত অভিযোগ প্রদান করেন। অভিযোগের পর বিভিন্ন ভাবে মাসুদকে ভয় ভীতি ও হুমকি প্রদান করে অভিযোগ প্রত্তাহার করতে বলে। এরপরও কোন ব্যবস্থা গ্রহণ না করলে আবারও ১৫ অক্টোবর লিখিত অভিযোগ প্রদান করেন।

লিখিত অভিযোগ প্রদান করার পর ৭ মাসেও কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করে নাই প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপক। পরে গত ২০২৪ সালের ১৯ মে আবারও একটা লিখিত অভিযোগ প্রদান করেন মাসুদ রেজা।

অভিযোগের কারনে ব্যবস্থাপক ক্ষিপ্ত হয়ে উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের সাথে অসদাচরনের অভিযোগ এনে মাসুদ রেজাকে হয়রানি করার উদ্দেশ্যে কৈফিয়ত তলব করে। এরপর ২৫ মে মাসুদ রেজা মিথ্যা অভিযোগ অস্বীকার করে কৈফিয়ত তলবের উত্তর প্রদান করেন।

সে উত্তরে অসন্তোষ প্রকাশ করে আবারও ২৯ মে কৈফিয়ত তলব করলে ৪ জুন সে লিখিত উত্তর প্রদান করেন। কিন্তু বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে কটুক্তিকর বক্তব্য প্রদানকারী এবং তার সহমত পোষণকারীদের কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করে নাই।

এরপর মাসুদ রেজা গত ৮ জুলাই বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে কটুক্তিকর বক্তব্য প্রদানকারী এবং তার সহমত পোষণকারীদের বিচারের দাবিতে সিবিএ অফিসে ব্যানার লাগায়।

ব্যানার লাগানোর পর ব্যবস্থাপকের আদেশে অফিস সিকিউরিটি গার্ডের সদস্যরা জোর পূর্বক মাসুদ রেজার থেকে ব্যানার ছিনিয়ে নেয় এবং ৯ জুলাই সকালে মাসুদ রেজাকে উক্ত কর্মস্থল থেকে স্ট্যান্ড রিলিজ করে তিতাস কুমিল্লাতে বদলি করে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বেশ কিছু কর্মচারীরা জানান, আমরা কটুক্তির কথা ভয়ে কাউকে কিছু বলতে পারি না। কিছু বলতে গেলে বিভিন্ন ভাবে হয়রানি করতে পারে এবং বদলি করতে পারে। তাই সবাই ভয়ে মুখ খুলতে চায় না।

এ ব্যাপারে মাসুদ রেজার সাথে কথা হলে তিনি জানান, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে নিয়ে সহকারি প্রকৌশলী মাহাথির মোহাম্মদ কটুক্তিকর বক্তব্য রাখেন। তিনি বলেন, শেখ মুজিবুর রহমান বাকশাল কায়েম করে সাধারন মানুষের বাক স্বাধীনতা কেড়ে নিয়েছে।

যার কারনে সেনাবাহিনী ক্ষিপ্ত হয়ে মুজিবকে হত্যা করে। তার বক্তব্যে উপস্থিত কর্মকর্তারা একমত পোষণ করেন কিন্তু আমি সেটা মানতে না পেরে বক্তব্য প্রদানকারী ও তার সাথে একমত পোষনকারীদের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রদান করি।

এরপর থেকে আমার প্রতি তারা  বিভিন্ন ভাবে অভিযোগ এনে আমাকে নানাভাবে ভয় ভীতি দেখিয়ে  হয়রানি করে আসছে। সর্বশেষ আমাকে সান্তাহার থেকে কুমিল্লায় বদলি করেছে। কিন্তু কটুক্তিকারী এবং সহমত পোষণকারীদের বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করে নাই। আমি এর যথাযথ বিচার চাই।

কটুক্তিকারী সহকারী প্রকৌশলী মাহাথির মোহাম্মদের সাথে বিভিন্ন ভাবে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলেও তার সাথে কোন ভাবে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।

সান্তাহার ৫০ মেগাওয়াট পিকিং বিদ্যুৎ কেন্দ্রের ব্যবস্থাপক এস, এম, ফরহাদ হোসেনের সাথে মুঠোফোনে কথা হলে তিনি বিষয়টি কৌশলে এড়িয়ে জান এবং তিনি বলেন, বদলির সাথে বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে কটুক্তির কোন সম্পর্ক নেই।

Share.
Leave A Reply

Exit mobile version