মোঃ মহিবুল ইসলাম বরগুনা জেলা প্রতিনিধি:
বরগুনার পাথরঘাটায় খালাকে ধর্ষণের চেষ্টার অভিযোগে ভাগিনা কাওসার (২০) সহ ৮ জনের বিরুদ্ধে বরগুনার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে মামলা দায়ের করেছে খালা সামিহা ইসলাম ঐশী (১৮)। এর প্রতিবাদে মঙ্গলবার বিকেল পাঁচটায় কালমেঘা ইউনিয়নের ছোট পাথরঘাটা সাইক্লোন শেল্টার বাজারে প্রায় পাঁচ শতাধিক এলাকাবাসী গণস্বাক্ষর ও মানববন্ধন করে প্রতিবাদ জানিয়েছে
এর আগে গত বুধবার বরগুনার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে মামলা দায়ের করেছে খালা সামিহা ইসলাম ঐশী। সামিহা ইসলাম ঐশী কালমেঘা ইউনিয়নের ছোট পাথরঘাটা এলাকার মো: সফিকুল ইসলামের মেয়ে।
স্থানীয় অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক আবদুল মোতালেব মিয়া’র সভাপতিত্বে মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন, স্থানীয় ইউপি সদস্য মো. আইয়ুব আলী, পৌর আ’লীগের সাধারণ এডভোকেট নাসির উদ্দিন সোহাগ, সাবেক ইউপি সদস্য গোলাম ছগির, কালমেঘা ইউনিয়নের ৮ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি মো, সিদ্দিকুর রহমান, মাওলানা আব্দুল কাদেরসহ স্থানীয় প্রায় পাঁচ শতাধিক এলাকাবাসী উপস্থিত ছিলেন।
সরেজমিন গিয়ে জানা যায় ১৮ জুন বাধন সিকদার নামের এক হিন্দু যুবকের সাথে আপত্তিকর অবস্থায় সামিহা ইসলাম ঐশিকে দেখে ফেলে এলাকাবাসী। বিষয়টি ঐশির খালাতো ভাই মামুনকে জানালে মামুন তাৎক্ষণিক বাধন শিকদারকে চড় থাপ্পর দেয় এবং ঐশীকে দিয়ে জুতাপেটা করায়। এই ঘটনা বেশ কিছু ইউৎসুক জনতা মোবাইলে ধারণ করে। মোবাইল ভিডিও করাকে কেন্দ্র করে মামুন আব্দুল্লাহ নামে এক যুবককে দোকানের মধ্যে আটকিয়ে মারধর করে। এরপর এ ঘটনাকে অন্যদিকে মোর ঘুরাতে গত তিন জুলাই বরগুনার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে মামলা দায়ের করেন।
ঐশী খালাতের বোন নাজমা বেগম জানান, তার খালা মুন্নি এবং খালাতো বোন একই স্বভাবের লোক, দীর্ঘ বছর ধরেই বিভিন্ন পরপুরুষের সাথে মেলামেশা করে। তাদের জন্য এলাকায় লজ্জায় মুখ দেখাতে পারছি না। গত ১৮ জুনের ঘটনাকে ধামাচাপা দেয়ার জন্য আমার ছেলে কাওসার হাওলাদার শুভকে ১ নম্বর আসামি দিয়ে ধর্ষণের চেষ্টার মামলা করেছে। এমনকি এ মামলা দিয়ে এলাকার কোরআনের হাফেজ ও শিক্ষার্থীরাও বাদ যায়নি।
মানববন্ধনে উপস্থিত কালমেঘা ইউনিয়নের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য আইউব আলী ও সাবেক ইউপি সদস্য সগীর হোসেন বলেন, কালমেঘা ইউনিয়নের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের শফিকুল ইসলামের বাড়িতে অসামাজিক কার্যক্রম চলাকালে তার মেয়ের সঙ্গে একটি হিন্দু ছেলের বস্ত্রহীন অবস্থায় এলাকাবাসীর হাতে ধরা পড়ে। এই ঘটনা থেকে বাঁচতে ওই পরিবারটি এলাকাবাসীর নামে মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি করছে। তবে ওই মিথ্যা মামলার প্রতিবাদে তিন শতাধিক এলাকাবাসী গণস্বাক্ষর দিয়ে মিথ্যা মামলার ওই আসামীদের পক্ষে দাঁড়িয়েছে। তাই আমরাও নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে দায়ের করা ওই মিথ্যা মামলার বিরুদ্ধে ও এলাকাবাসীর গণস্বাক্ষরের পক্ষে রয়েছি।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা গেছে, পাথরঘাটা কলেজে যাওয়া আসার পথে এইচএসসি পরীক্ষার্থী সামিহা ইসলাম ঐশীকে কাওসার হাওলাদার কুপ্রস্তাব দিত। এতে সামিহা ইসলাম ঐশী রাজি না হওয়ায় তার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করতে থাকে। ঘটনার দিন গত ১৮ জুন সকাল ১০টার দিকে ৮ থেকে ১০ জন লোক নিয়ে সামিহা ইসলাম ঐশীর বাড়িতে ঢুকে কাওসার হাওলাদার ও মোঃ আব্দুল্লাহ সামিহা ইসলাম ঐশীকে বস্ত্রহীন করে ধর্ষণের চেষ্টা করে। অপর লোকজন ভিডিও ধারণ করে। এবং বাঁধন সিকদারের নামে মিথ্যা অপবাদ দিয়ে সকল ঘটনা তার উপর চাপিয়ে দেয়ার চেষ্টা করা হয়।
এবিষয়ে জানতে ঐশীর বাড়িতে গেলে তাদের ঘর তালা বদ্ধ পাওয়া যায়। মুঠোফোনে যোগাযোগ করার চেষ্টা করেও তাদের সাথে যোগাযোগ করা যায় নি।
ঐশী খালতো ভাই মামুনের কাছে জানতে চাইলে তিনি বিষয়টি এড়িয়ে যান এবং বলেন, এটা তাদের পারিবারিক বিষয় তারা নিজেরাই বুজবে।
এ ব্যাপারে পাথরঘাটা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোঃ আল মামুন বলেন, শুনেছি বরগুনা নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের মামলা প্রত্যাহারের দাবিতে এলাকাবাসী একটি মানববন্ধন করেছে। জানতে পেরেছি মামলাটি তদন্তাধীন রয়েছে। তবে এ বিষয়ে আমার কাছে লিখিত অভিযোগ আসলে তদন্ত করে আইনের ব্যবস্থা গ্রহণ করব।