আনোয়ারা (চট্টগ্রাম) প্রতিনিধি:
চট্টগ্রামের আনোয়ারা উপজেলা কার ও মাইক্রোবাস শ্রমিক সমবায় সমিতির নামে টোকেন বাণিজ্য করে প্রতি মাসে হাতিয়ে নিচ্ছে লক্ষ লক্ষ টাকা। সমিতির সদস্য হয়ে টোকেন দিয়ে চলছে সহস্রাধিক অবৈধ কার ও মাইক্রোবাস।
লাইন খরচের নাম দিয়ে সমিতি কর্তৃক প্রতি মাসে গাড়ি থেকে ১০০ টাকা নির্ধারিত একটি ফি আদায় করে যাচ্ছেন সমিতির লাইনম্যান অভি ও সানি নামের দুইজন লোক। এসমস্ত অধিকাংশ গাড়ির নেই কোনো রুট পারমিট। অনেক চালকের নেই ড্রাইভিং লাইসেন্স।
এসব গাড়ির চালকরা সমিতির দেওয়া নির্দিষ্ট টোকেন বা স্টিকার দেখিয়ে পুলিশের তল্লাশি থেকে মুক্তি পান। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক চালক জানান, গাড়ির যাবতীয় কাগজপত্র ঠিক থাকা সত্ত্বেও সমিতির মাসিক টোকেন কিনতে হয়।
না হলে পরতে হয় নানার হয়রানিতে। মাসে লাখ লাখ টাকা কোথায় যায় তাহা চালকরা জানেন না। শ্রমিক সমবায়ের নামে টোকেন ব্যবহার করে এই টাকা কাদের পকেটে যায় তা নিয়ে অনুসন্ধানী কাজ চালিয়ে যাচ্ছে সংবাদ কর্মীরা তাদের মুখোশ উম্মোচন করতে তথ্য সংগ্রহ করা হচ্ছে।
সমিতিতে ভর্তি হতে প্রথমে সাধারণ সম্পাদককে দিতে হয় ১১০০ টাকা। প্রতিমাসে দিতে হয় ১০০টাকা। সমিতিতে এই পর্যন্ত মোট সদস্য সংখ্যা প্রায় ১৫০জন তাহলে ভর্তি টাকা উঠেছে প্রায় দেড় লক্ষ টাকার মতো।
প্রতিদিন প্রতিটি কার ও মাইক্রোবাস হতে প্রতিবার সিরিয়াল পেতে দিতে হয় ৫০ টাকা। প্রতিটি গাড়ী দৈনিক চার-পাঁচ বার টানেলে এপার ওপার আসা যাওয়া করে। তাহলে প্রতিদিন ১০ হাজার টাকা মতো চাঁদা উঠে।
চাঁদাগুলো তুলে অভি ও সানি নামের দুইজন লোক। তাদের গ্রেফতার করতে র্যাব-৭ এর হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন ভুক্তভোগী চালকরা। এ ব্যাপারে কার ও মাইক্রোবাসের সাধারণ সম্পাদক মো: দিদারুল আলম ও সভাপতি মো: এসকান্দর জানান, টাকাগুলো সমিতির একাউন্টে জমা হয়।
যারা দায়িত্ব পালন করে তাদের বেতন ভাতা ও খাওয়া দাওয়া বাবদ খরচ করে বাকী টাকা সমিতির একাউন্টে জমা হয়। আনোয়ারা উপজেলা সমবায় অফিসার মমতাজ বেগম বলেন, আমাদের কাজ হচ্ছে সমিতির নিয়ম মাফিক রেজিষ্ট্রেশন দেওয়া।
তারা মাসে কিভাবে টাকা নেবে তাহা ঐ সমিতির সদস্যরা নির্ধারণ করেন। তারপরেও কোন সমিতি নামে অনিয়মের অভিযোগ ফেলে আমরা ব্যবস্থা নেবো।
এ ব্যাপারে আনোয়ারা ট্রাফিক পুলিশের টিআই হাফিজুর রহমানের কাছে সড়ক থেকে এভাবে টাকা তুলার নিয়ম আছে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, সড়ক থেকে সমিতির নামে চাঁদা তুলার কোন নিয়ম নেই। কেউ অভিযোগ দিলে আমরা শতভাগ ব্যবস্থা নেবো।
ভুক্তভোগী চালকরা জানান, এই টাকা কোন একাউন্টে যায়, কত খরচ হয়, কেউ জানে না। সভাপতি, সাধারণ সম্পাদকসহ গুটি কয়েকজন মিলে খাচ্ছে। কেউ জমাকৃত টাকা ফেরত পেয়েছে এই রকম কোনে নজির নেই।
আনোয়ারা প্রশাসন কার্যকরী কোনো ব্যবস্থা না নিলে র্যাব-৭ যেন এসমস্ত চাঁদাবাজির বিষয়ে ব্যবস্থা গ্রহণ করার আবেদন জানান আনোয়ারা প্রেসক্লাবের সভাপতি আব্দুল নুর চৌধুরী।