রুহুল আমিন (গাজীপুর জেলা প্রতিনিধি)
গাজীপুর জেলার শ্রীপুর উপজেলায় মাওনা ইউনিয়নের মাওনা উত্তরপাড়া গ্রামের আবদুস সামাদের বহুতল ভবনের তিনতলার একটি কক্ষ থেকে মীম আক্তার (২২) এর মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। শ্বাসরোধে ওই নারীকে হত্যার কথা স্বীকার করে স্বামীর লেখা একটি চিরকুট পাওয়া গেছে মরদেহের পাশে।
খবর পেয়ে পুলিশ মরদেহ উদ্ধার করে গাজীপুর শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে পাঠিয়েছে।
নিহতের স্বামীর নাম আল আমীন মিয়া। তিনি টাঙ্গাইলের কালিহাতি উপজেলার কালাই গ্রামের আমিরুল ইসলামের ছেলে। নিহত মীম আক্তার সিরাজগঞ্জের বেলকুচি উপজেলার বেড়া খাইয়া ছোটপাড়া গ্রামের ইউসফ আলীর মেয়ে। ছয় মাস আগে আল আমীন ও মীম আক্তারের পারিবারিকভাবে বিয়ে হয়। তারা মাওনা এলাকায় ভাড়া থেকে পোশাক কারখনায় চাকরি করতেন।
আল আমীন তার মায়ের কাছে চিরকুটে (চিঠি) লিখেছেন- মা আমারে মাফ কইরা দিও। অনেক স্বপ্ন ছিল তুমাকে কোনদিন কষ্ট দিব না। কিন্তু এমন একজন মানুষ আমারে আইনা দিছ। যাঁর অত্যাচার থেকে বাঁচতে এই সিদ্ধান্ত নিলাম। তিলে তিলে মরার চাইতে একেবারে মরে গেলাম। সবাই আমাকে মাফ কইরা দিও। সে আমাকে কয়েক মাসের মধ্যে মানসিক রোগী বানাইয়া ফালছে। নিজে একাই মইরা জাইতাম কিন্তু এরে যদি বাঁচাইয়া রাইখা যায় এ আরো অনেক মানুষের জীবন নষ্ট করবো। তাই মাইরা ফেললাম। অনেক স্বপ্ন ছিল রাসূলের সব সুন্নতগুলি আমার জীবনে বাস্তবায়িত করবো। কিন্তু পারলাম না। পরিশেষে সবার জন্য দোয়া করে গেলাম এমন বউ যেন কারো কপালে না জোটে। কাওসার ভাইদের দোকান থেকে ৫০০ টাকা নগদ দিয়া ৯০০ টাকা বাকি রাখিয়া চাউলের বস্তা আনছিলাম। রুম ভাড়া রুমের আসবাবপত্র বিক্রি করে দিয়া দিও।
মাওনা ইউনিয়ন পরিষদ সদস্য (১ নং ওর্য়াড) শামীম মৃধা জানান- তালাবদ্ধ একটি কক্ষ থেকে নারীর মরদেহ পুলিশ উদ্ধার করেছে। পরে পুলিশ লাশ মর্গে পাঠিয়ে দিয়েছে। নিহতের স্বজনরা খবর পেয়ে ঘটনাস্থল আসছে।
ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে শ্রীপুর মডেল থানার (ওসি) আকবর আলী খান জানান- খবর পেয়ে পুলিশ একটি তালাবদ্ধ কক্ষ থেকে নারীর মরদেহ উদ্ধার করেছে। ওই নারীকে শ্বাসরোধ করে মারা হয়েছে এটা নিশ্চিত হওয়া গেছে। পুলিশ মরদেহের পাশ থেকে একটি চিরকুট উদ্ধার করেছে। স্বামী পালিয়ে গেছে। তাকে গ্রেপ্তার করতে পারলে খুনের আসল রহস্য বের করা সহজ হবে।