মশিউর রহমান, জামালপুর প্রতিনিধিঃ
ভাবছিলাম বাহি কয়ড়াদিন এইহানেই থাইকা যামু তা আর অইতে দিলোনা সর্বনাশি যমুনা আবারো ভাইঙ্গা দিলো। এহন আমার পোলা কড়া কোন হানে থাকবো কি ভাবে থাকবো আল্লাহই ভালো জানেন। হাউমাউ করে কান্না করে এমনি ভাবে প্রলাপ করছেন জামালপুর জেলার সরিষাবাড়ী উপজেলার পিংনা ইউনিয়নের মিরকুটিয়া গ্রামের শতবর্ষী বৃদ্ধা বাছিয়া বেগম। তিনি আরো বলেন এ পর্যন্ত আমি ২০-২৫ বার নদী ভাঙ্গনের কবলে পড়ে ঘর বাড়ী হারিয়েছি। সবশেষে এ মিরকুটিয়ায় প্রায় ত্রিশ বছর যাবৎ বসৎ করছি ভাবছিলাম জীবনের বাকী কয়ড়া দিন এহানেই থাইকা যামু তা আর হইলো না সর্বনাশি যমুনা আবারো বাড়ী ঘর ভাইঙ্গা নিলো।
উপজেলার পিংনা ইউনিয়ন একটি নদী ভাঙ্গন কবলিত ইউনিয়ন। এ ইউনিয়নের মধ্য দিয়ে বহমান যমুনা নদীর করাল গ্রাসে হাজারো পরিবার নিঃস্ব হয়েছে। অবস্থান নিয়েছে পরিকল্পনাহীন ভবিষ্যত জীবনে আবার অনেকেই পাড়ি দিয়েছেন অজানা গন্তব্যে। যমুনা নদী যেন এদের পিছু ছাড়ছেই না।
এবারো বন্যা শুরু হতে না হতেই শুরু হয়েছে তৃব্যনদী ভাঙ্গন। প্রতি বছর ভাংতে ভাংতে চরাঞ্চলের গ্রাম গুলি বিলিন হয়ে অবশিষ্টি ছিলো মিরকুটিয়া গ্রামের একাংশ কাঠাল তলা এলাকা ‘তাও আজ ভাঙ্গন কবলে।
পাঁচদিনের টানা ভাঙ্গনের ফলে নদীর বুকে বিলিন হয়েছে এ এলাকার, আফজাল তরফদার, আল আমিন, জাহাঙ্গির, মোতালেব, মিনহাজ, পারভেজ, তারাভানু, চাঁন মিয়া, আসলাম, জয়নাল আবেদিন, আনোয়ার হোসেনসহ প্রায় অর্ধ শতাধীক পরিবারের ঘরবাড়ী। আবার অনেকেই তাদের ঘরবাড়ী সরিয়ে নিয়ে যাচ্ছে অন্যত্র।
এ ছাড়াও ভাঙ্গন ঝুকিতে রয়েছে দক্ষিন নলসন্ধা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, মসজিদ, মাদ্রাসাসহ বিভিন্ন স্থাপনা।
স্থানীয় আশরাফ পরামানিক জানান, ধিরে ধিরে চরাঞ্চলের সব কটি গ্রাম বিলিন হয়েগেছে।
গত বছর বন্যায় এই মিরকুটিয়ার সব কটি পাড়া বিলীন হয়ে গেছে। বাকি ছিলো এই একটি পাড়া মিরকুটিয়া কাঠাল তলা এলাকা তাও আজ ভাঙ্গনের কবলে পড়েছে।
তাই অশিষ্ট এ গ্রাম টুকো রক্ষায় সরকার তথা সংশ্লিষ্ট দপ্তরের নিকট দাবি জানিয়েছেন এলাকাবাসি।