তিমির বনিক,মৌলভীবাজার প্রতিনিধি:
মৌলভীবাজারে বন্যা পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি
মৌলভীবাজারে বন্যা পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হয়েছে, মনু ও কুশিয়ারা নদীর পানি কমতে শুরু করেছে। শুক্রবার (২১ জুন) বিকেলে মৌলভীবাজার জেলায় বৃষ্টিপাত না হওয়ায় বন্যা পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হয়েছে।
পাউবো সূত্রে জানা যায়, শুক্রবার বিকেল ৩টায় মনু নদীর রেলওয়ে ব্রিজ পয়েন্টে পানি বিপৎসীমার ২৭০ সে.মি. নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। চাঁদনীঘাট ব্রিজে মনুর পানি বিপৎসীমার ২৯ সে.মি. নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল।
ধলাই নদীর রেলওয়ে ব্রিজ পয়েন্টে পানি বিপৎসীমার ২৭৯ সে.মি. নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। কুশিয়ারা নদীর শেরপুর ব্রিজে পানি বিপৎসীমার ১৯ সে.মি. ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। তবে ধীরে ধীরে পানি কমতে শুরু করেছে। এদিকে জুড়ী উপজেলার জুড়ী নদীর ভবানীপুর ব্রিজে পানি বিপৎসীমার ২০৪ সে.মি. ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
গত কয়েকদিনের ভারী বর্ষণ, উজানের পাহাড়ি ঢল ও নদ-নদীর পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় সাত উপজেলার প্রায় ৪০টি ইউনিয়নের নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়ে বন্যা হয়েছে। একইসাথে ধলাই নদীর তিনটি পুরোনো ভাঙন দিয়ে পানি লোকালয়ে প্রবেশ করছে। গ্রামীণ রাস্তা ডুবে যোগাযোগ ব্যবস্থা ব্যাহত হচ্ছে। এতে ভোগান্তিতে পড়েছেন পানিবন্দি প্রায় আড়াই লাখ মানুষ। অনেকে বাড়ি ঘর ছেড়ে পরিবার নিয়ে আশ্রয়কেন্দ্রে উঠেছেন।
এদিকে জেলা প্রশাসন থেকে জেলার বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ২শ ৫টি আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হয়েছে। যেখানে অবস্থান করছে ১ হাজার ৫১৩টি পরিবার। তাদের দেওয়া হচ্ছে শুকনো খাবার, চাল, বিশুদ্ধ পানি ও পানি বিশুদ্ধকরণ ট্যাবলেট। গঠন করা হয়েছে ৭০টি মেডিকেল টিম। এ ছাড়া বিভিন্ন সংগঠন ও জনপ্রতিনিধিরা রান্না করা খাবার ও শুকনো খাবার নিয়ে বন্যার্তদের পাশে দাঁড়িয়েছেন।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী জাবেদ ইকবাল বলেছেন, মৌলভীবাজারে গত দুই দিন ধরে বৃষ্টি কম হয়েছে। এ ছাড়া উজানে বৃষ্টিপাত কম হওয়ায় জেলার নদনদীর পানি কমতে শুরু করেছে। তবে নদীর ঝুঁকিপূর্ণ স্পটগুলোতে বালু ভর্তি বস্তা ও মাটি দিয়ে ঝুঁকিমুক্ত রাখার কাজ চলমান রয়েছে।
জেলা প্রশাসক ড. উর্মি বিনতে সালাম জানান, পানিবন্দি এলাকার মানুষের সাহায্যে আশ্রয় কেন্দ্র খোলা হয়েছে। যাদের বাড়িতে বেশি পানি এমন প্রায় ১৫শ পরিবার আশ্রয় কেন্দ্রে উঠেছেন। শুকনো খাবার ও চাল দেওয়া হচ্ছে তাদের। এ ছাড়াও পানি বিশুদ্ধকরণ ট্যাবলেট বিতরণ করা হচ্ছে।
বন্যার পানিতে তলিয়ে গিয়ে বন্ধ হয়ে গেছে মৌলভীবাজার-শমসেরনগর আঞ্জলিক মহাসড়কের যান চলাচল।