শুক্রবার, জুন ২১, ২০২৪

বশেমুরবিপ্রবিতে বিধি ভেঙে বহিষ্কারের অভিযোগ

যা যা মিস করেছেন

বশেমুরবিপ্রবি প্রতিনিধিঃ-

গোপালগঞ্জের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (বশেমুরবিপ্রবি) বিধি ভেঙে বহিষ্কারের অভিযোগ করেছে শিক্ষার্থীরা।

বশেমুরবিপ্রবি ডিবেটিং সোসাইটি ও সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের রুম বিষয়ক দ্বন্দ্বে বশেমুরবিপ্রবি প্রক্টর ড. মো. কামরুজ্জামানকে অশ্রাব্য ভাষায় গালিগালাজ করার কারণে গত বৃহস্পতিবার (১৩ জুন) রেজিস্ট্রার মো. দলিলুর রহমান স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে শৃঙ্খলা বোর্ডের ১০ জুন অনুষ্ঠিত আলোচ্যসূচি-৪ অনুযায়ী আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী মাহমুদুর রহমান (মুগ্ধ) কে ২ সেমিস্টার বহিষ্কার ও দুই হাজার টাকা জরিমানা করা হয়, আইন বিভাগ ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী মোহাম্মদ জাকারিয়াকে এক সেমিস্টারের জন্য বহিষ্কার ও ২ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।

এছাড়াও একই ঘটনায় আইন বিভাগের ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী মো: ইমন হোসেনকে ১০০০ টাকা জরিমানা এবং প্রাক্তন শিক্ষার্থী হয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে হুমকি প্রদানের কারণে একই বিভাগের ২০১৬-১৭ শিক্ষাবর্ষের ইজাজুর রহমানকে দুই বছরের জন্য সার্টিফিকেট স্থগিত ও কর্তৃপক্ষের কাছে লিখিত ক্ষমা চাওয়া এবং বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে। একই সাথে এই ঘটনায় শাস্তি প্রাপ্ত প্রথম তিনজনকে ক্ষমা চেয়ে মুচলেকা প্রদান করার কথা উল্লেখ করা হয়েছে।

তবে এই সংক্রান্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের শৃঙ্খলা বোর্ডের নীতিমালা থেকে জানা যায় শৃঙ্খলা বোর্ডের ১৯ নং বিধি অনুযায়ী কাউকে বহিষ্কার করার পূর্বে তাকে কমপক্ষে ৭ দিনের সময় দিয়ে নোটিশ দেওয়া বাধ্যতামূলক। কিন্তু উক্ত ঘটনায় এই বিধির কোনো তোয়াক্কা না করেই গত ৯ই জুন তদন্ত কমিটির শেষ মিটিং হয় এবং ১০ তারিখ শৃঙ্খলা বোর্ডের সভায় শাস্তির সিদ্ধান্ত হয়। যা ১৩ তারিখ প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে ঘোষণা করা হয়। যার কারণে শৃঙ্খলা বোর্ডের এমন সিদ্ধান্তের প্রতি স্বচ্ছতার অভিযোগ তুলেছে সাধারণ শিক্ষার্থীরা।

তাছাড়াও উক্ত ঘটনায় প্রক্টর ড. মো. কামরুজ্জামান নিজে বিচার প্রার্থী হওয়ায় এবং একই সাথে তিনি উক্ত ঘটনায় বিচারক বোর্ডের একজন সদস্য হিসেবে থাকায় শাস্তির নিরপেক্ষতা নিয়েও প্রশ্ন উত্থাপিত হয়েছে।

এ বিষয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ইতিহাস বিভাগের শিক্ষার্থী শরিফুল ইসলাম সোহাগ বলেন, “কেউ আইনের ঊর্ধ্বে নয়, আইন সবার জন্য সমান। অপরাধ করলে শাস্তি পেতেই হবে। নিয়মের বাহিরে গিয়ে আপনি কাউকে শাস্তি দিতে পারেন না। এই শাস্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের আইনের সুস্পষ্ট লঙ্ঘন এবং আত্মপক্ষ সমর্থন এর সুযোগ না দিয়ে শাস্তি দেওয়ার মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন দেশের সংবিধান এবং ন্যায়বিচারের নীতির লঙ্ঘন করেছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন নিয়মিত শিক্ষার্থী হিসাবে এর তীব্র নিন্দা এবং প্রতিবাদ জানাচ্ছি।

তিনি আরও বলেন,” ৬ বছরের বিশ্ববিদ্যালয় জীবনে কোনো শিক্ষক কে অপমান করা হবে এমন কোন কিছু করিনি, ভবিষ্যতে এমন পরিস্থিতি না আসুক সৃষ্টিকর্তার কাছে এই কামনা করি। আমাদের ৫৫ একরে ছাত্র রাজনীতি থেকে শুরু করে শিক্ষক রাজনীতি সম্পর্কে সবকিছু অজানা নেই কারোর কাছে। কোথায় কি হয় আর কী কারণে হয় সবকিছু সবাই বুঝে এবং জানে।

সব শেষে একটা কথাই বলতে চাই, কেউ অপরাধ করলে শাস্তি পাবে এটাই স্বাভাবিক। তবে শিক্ষক রাজনীতির জাঁতাকলে পড়ে নিরপরাধ কেউ শাস্তি পাক তা চাই না।”

এই বিষয়ে রেজিস্ট্রার মো:দলিলুর রহমান বলেন,” আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ তাদেরকে দেওয়া হয়নি,অতীতেও এই ধরনের বিষয়ে দেওয়া হয়নি। ”

বিশ্ববিদ্যালয়ের শৃঙ্খলা বোর্ডের ১৯তম বিধিতে আত্মপক্ষ সমর্থনের বিষয়ে বলা থাকলেও তাদেরকে কেনো দেওয়া হয়নি এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন,”এটা শৃঙ্খলা বোর্ডেতো সিদ্ধান্তটি সেভাবে আসেনি। শৃঙ্খলা বোর্ডে যেভাবে সিদ্ধান্ত ছিল সেভাবেই প্রকাশ করা হয়েছে। প্রশাসন খতিয়ে দেখবে।”

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর বিচার প্রার্থী হয়েও কীভাবে বিচারক বোর্ডের সদস্য হিসেবে থাকতে পারার বিষয়ে বলেন,” বিশ্ববিদ্যালয়ের শৃঙ্খলা বোর্ডের নিয়মেই বলা আছে প্রক্টর এই বোর্ডের সদস্য হবেন।”

এই বিষয়ে উপাচার্য ও শৃঙ্খলা বোর্ডের সভাপতি ড.এ.কিউ.এম. মাহবুব বলেন, ” আমি এই বিষয়ে তেমন কিছু জানি না। এই বিষয়ে রেজিস্ট্রার ও প্রক্টরের সাথে যোগাযোগ করেন।”

অনুমতি ব্যতিত এই সাইটের কোনো কিছু কপি করা কপিরাইট আইনে দণ্ডনীয়।

প্রিয় পাঠক অনলাইন নিউজ পোর্টাল দ্যামেইলবিডি.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন themailbdjobs@gmail.com ঠিকানায়।

More articles

সর্বশেষ

x  Powerful Protection for WordPress, from Shield Security
This Site Is Protected By
Shield Security