আরিফুল ইসলাম রনক, নওগাঁ প্রতিনিধি:
নওগাঁর পত্নীতলা উপজেলার ফার্শপাড়া গ্রামে নিজ শয়নকক্ষে স্ত্রী জিহান আক্তার জেমি(২৫)কে শ্বাসরোধ করে হত্যা করার অভিযোগ উঠেছে। হত্যার পর স্বামী মোরসালিন পলাতক রয়েছে।
গত মঙ্গলবার (১১ জুন) সকাল ১০টা দিকে এই ঘটনা ঘটেছে। নিহত জিহান পাশ্ববর্তী ধামইরহাট উপজেলার চকমহেশ গ্রামের ফেরদৌস হোসেন কন্যা এবং পত্নীতলা উপজেলার লালাপুর গ্রামের আবুল কালাম আজাদের স্ত্রী।
মামলা ও পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, গত বছর জুন মাসে নিহত জিহান আক্তার জেমির (২৫) সাথে পত্নীতলা উপজেলার আবুল কালাম আজাদের পুত্র মোরছালিনের (২৮) বিয়ে হয় পারিবারিক ভাবে। কিন্তু বিয়ের পর থেকেই যৌতুকের জন্য মোরছালিন স্ত্রীকে বিভিন্ন ভাবে শারিরীক ও মানসিক নির্যাতন চালাত। মোরছালিনের নির্যাতনের কারনেই মেয়ে বাবা মেয়ের সুখের কথা চিন্তা করে গত বছর ২লক্ষ টাকা মোরছালিনকে দেয়। কিন্তু কিছু দিন না যেতেই আবারও টাকার জন্য স্ত্রীকে বিভিন্ন ভাবে চাপ দিতে থাকে। টাকা জন্য গত কয়েক দিন আগে স্বামী মোরছালিন কৌশলে স্ত্রী জেমিকে নিয়ে ধামইরহাট শশুর বাড়ি যায় এবং শশুড়কে টাকা দেয়ার জন্য বলে আসে। গতমঙ্গলবার সকালে শশুর ফিরোজ হোসেন ১ লক্ষ টাকা জামাইকে দেয়ার জন্য জামাইয়ের বাড়ি
যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন। এমন সময় অচেনা এক মোবাইল ফোন নাম্বার থেকে জানানো হয় তার মেয়ে জেমি মারা গেছে। খবর পেয়ে বাবা ফিরোজ হোসেন গ্রামের কয়েকজন লোককে নিয়ে মেয়ে জেমির বাড়ি গিয়ে দেখতে পায় শয়ন কক্ষে মেয়ে লাশ পড়ে আছে। তার জামাই, জামাইয়ের বাবা-মা বাড়ি ছেড়ে পালিয়েছে। পরে পুলিশকে খবর দিলে পত্নীতলা থানা পুলিশ গিয়ে লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য নওগাঁ সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠিয়ে দেয়। প্রাথমিক তদন্তে মরদেহের শরীরে ক্ষত চিহ্ন ও গলায় জখমের দাগ দেখা গেছে বলে পুলিশ জানায়।
এ ব্যাপারে নিহত জেমির বাবা ফিরোজ হোসেন (ফেরদৌস) জানান, বিয়ের পর থেকে জামাই মোরছালেন আমার মেয়ে জেমিকে বিভিন্ন ভাবে যৌতুকের জন্য নির্যাতন চালাত। এর আগের মেয়ে মুখের দিকে তাকিয়ে আমি ২ লাখ টাকা দিয়েছি। আবার ১লাখ টাকা দেয়ার জন্য ঐ দিন যেতে প্রস্তুতি নিচ্ছিলাম। কিন্তু তার আগেই আমার মেয়েকে হত্যা করে মোরছালিন ও তার পরিবারের সদস্যরা পালিয়েছে। এটা পরিকল্পিত হত্যা। বাবা হিসাবে আমি এর সুষ্ঠ বিচার চাই।
এ ব্যাপারে পত্নীতলা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোজাফ্ফর হোসেন জানান, নিহত জেমির প্রাথমিক তদন্ত, স্বামী ও তার পরিবারের সদস্যদের পালিয়ে থাকার বিষয়টি রহস্যজনক। আমরা ময়নাতদন্তের জন্য মরদেহ নওগাঁ মর্গে পাঠিয়েছি। ময়না তদন্তের রিপোর্ট পেলেই এর প্রকৃত ঘটনা উদঘাটন করা যাবে। আমরা বিষয়টি গুরুত্বের সাথে তদন্ত করছি। মেয়ে বাবা ফিরোজ হোসেন বাদী হয়ে পত্নীতলা থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন আইনে একটি মামলা দায়ের করেছেন।