আরিফুল ইসলাম রনক, নওগাঁ প্রতিনিধি:
আদালতের রায় অমান্য করে ব্যক্তি মালিকানাধীন জমির উপর চেয়ারম্যান কর্তৃক জোর করে ড্রেন নির্মান ও জমির মালিককে প্রান নাশের হুমকি দেওয়ায় প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন করেছেন ভুক্তভোগী।
বৃহস্পতিবার (৬ জুন) সকালে পত্নীতলা উপজেলার মহেশপুর গ্রামের বাসিন্দা মো. আজিবর রহমান তার নিজ বাড়িতে এ সংবাদ সম্মেলন করেন।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে জানান- মহেশপুর কদম-কুড়ী গ্রামের পানি নিষ্কাশনের জন্য পত্নীতলা সদর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) বাস্তবায়নে মোন্নাপুকুর থেকে কদমকুড়ী মোড় পর্যন্ত প্রায় ১০০ মিটার দৈর্ঘ্যরে একটি নালা নির্মাণের কাজ চলছে। কদমকুড়ী মোড় গ্রামের পূর্ব দিকের অংশে যাওয়া সড়কের দক্ষিণ পাশ দিয়ে নালাটি নির্মাণের জন্য বর্তমানে মাটি খননের কাজ চলছে।
সেখানকার ৩০০ মিটার দৈর্ঘ্যের নির্মাণাধীন ওই নালার অধিকাংশ অংশই অভিযোগকারী আজিবর রহমান ও তাঁর ভাইদের। মহেশপুর কবরস্থান সংলগ্ন মোন্নাপুকুর নামের একটি পুকুর থেকে পূর্ব দিকে ১০০ মিটার দূরে সরকারি জলডারা থাকা সত্ত্বেও মোন্নাপুকুর থেকে পশ্চিম দিকে ব্যক্তি মালিকানাধীন জমির ওপর দিয়ে ৩০০ মিটার দৈর্ঘ্যরে ওই নালা নির্মাণ করা হচ্ছে। ৩০০ মিটার দৈর্ঘ্যরে ওই নালার প্রায় তিন-চতুর্থাংশ অংশই আজিবর রহমান ও ভাইদের।
“নালা নির্মাণের জন্য জমি দিতে অনিচ্ছা সত্ত্বেও জমি অধিগ্রহণ না করেই পত্নীতলা সদর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান ওবায়দুল ইসলাম গত বছরের নভেম্বর মাসে জোর করে নির্মাণের কাজ শুরু করেন”
ব্যক্তি মালিকানাধীন জমির ওপর দিয়ে সরকারি প্রকল্পের টাকা দিয়ে নালা নির্মাণকাজ বন্ধের দাবিতে আদালতে মামলা করলে আদালত গত বছরের ১২ নভেম্বর কাগজপত্র যাচাই-বাছাই করে নালা নির্মাণকাজের ওপর চিরস্থায়ী নিষেধাজ্ঞা আদেশ দেন।
আদালতের চিরস্থায়ী নিষেধাজ্ঞা আদেশ থাকা সত্ত্বেও গত ২৩ মে ইউপি চেয়ারম্যান ওবায়দুল ইসলামের ছত্রছায়ায় একদল লাঠিয়াল বাহিনী রাস্তার পাশে থাকা আজিবর রহমানের জমির ওপর দিয়ে নালা নির্মাণের জন্য খনন করেন। এ ঘটনায় আজিবর রহমান আদালতে ১০৭ ধারায় মামলা দায়ের করেন। অভিযুক্ত ব্যক্তিরা আদালতে হাজির হয়ে এ ধরণের কাজ আর করবেন বলে মুচলেকা দেন।
আদালতে মামলা চলমান থাকা সত্ত্বেও চেয়ারম্যান ওবায়দুল ইসলামের নেতৃত্বে সন্ত্রাসীরা আবারও যে কোনো সময় জোর করে নালা নির্মাণ করবেন বলে হুমকি-ধামকি দিয়ে যাচ্ছেন।
এ বিষয়ে থানা পুলিশ ও ইউএনওর কাছে বারবার অভিযোগ করার পরেও কোনো প্রতিকার পাচ্ছেন না ভুক্তভোগী আজিবর রহমান।
অভিযোগকারী আজিবর রহমান বলেন, ‘গ্রামবাসীর চলাচলের জন্য ক্রয়সূত্রে পাওয়া ৮৮ দশমিক ৫ শতাংশ জমি থেকে প্রায় ৮ শতাংশ জমি ছেড়ে দিয়েছি। আমার জমির দিয়ে করা সড়ক দিয়ে গ্রামের লোকজন চলাচল করে। এখন সেই সড়কের দক্ষিণ অংশ দিয়ে আমার বসতবাড়ীর প্রাচীর ও আম বাগানের কিছু অংশের ক্ষতি সাধন করে জোর করে নালা নির্মাণ করা হচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, পত্নীতলা ইউপি চেয়ারম্যান ওবায়দুলের নেতৃত্বে গ্রামের কিছু লোক আমার ক্ষতিসাধনের জন্য জোর করে নালা নির্মাণের পাঁয়তারা করছে। যাতায়াতের জন্য জমি ছেড়ে দিয়েছে এখন আমি নালা নির্মাণের জন্য কোনো জমি দিতে রাজি নই। এজন্য আমি আদালতে মামলাও করেছি।’
আজিবর রহমানের অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে ইউপি চেয়ারম্যান ওবায়দুল ইসলাম বলেন, ‘আজিবরের মামলার নিষেধাজ্ঞা আদেশের বিরুদ্ধে আপিল করা হয়েছে। আপিলের পর নিষেধাজ্ঞা আদেশ আর কার্যকর থাকে না। তাই এখন নালা নির্মাণে আইনি কোনো বাধা নেই বলে আমি মনে করি।’
এক ব্যক্তির জায়গার দিয়ে রাস্তা ও ড্রেন নির্মান করা বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, গ্রামের লোকের সুবিধার জন্য এটা করা যাবে।