রুহুল আমিন,ডিমলা (নীলফামারী)
শারমিন আক্তার মনির বাবা বুদ্ধি প্রতিবন্ধী। মা থেকেও নেই। ছোট বয়স থেকেই চাচার বাড়িতে আশ্রিত। খুপড়ি ঘরে দাদীর সঙ্গে তার বসবাস। বয়সের ভারে সেও নুয়ে পড়ছে। নিজে প্রাইভেট পরিয়ে সেই টাকায় নিজের এবং বৃদ্ধ দাদীর যৎসামান্য খরচ জোগাড় করেছে। এমন প্রতিকূল পরিস্থিতির মধ্যে এসএসসি পরীক্ষায় জিপিএ-৫ পেয়ে উত্তীর্ণ হয়েও কলেজে ভর্তি নিয়ে চরম অনিশ্চয়তায় থাকা শারমিন আক্তার মনির পাশে দাঁড়িয়েছে ডিমলা উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) উম্মে সালমা।
সোমবার (২০ মে) দুপুর তিনটায় উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) তার কার্যালয়ে শারমিন আক্তার মনিকে ডেকে এনে তার হাতে পাঁচ হাজার টাকা তুলে দেন। এবং ভবিষ্যতে লেখাপড়ার পূর্ণ সহযোগিতার আশ্বাস দেন তিনি।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা উম্মে সালমা বলেন, জিপিএ-৫ পেয়েও পড়াশোনা অনিশ্চিত শারমিনের খবরটি জানতে পেরে আজ উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে তার হাতে পাঁচ হাজার টাকা তুলে দেই। এরপরও পড়াশোনা চালাতে যা যা করণীয় আমাদের জানালে সহযোগিতা অব্যাহত থাকবে। তাছাড়া শারমিন আক্তার যে কলেজে ভর্তি হবে সেখানেও যেন তাকে সুযোগ-সুবিধা দেওয়া হয় সে ব্যাপারেও আমরা তাকে সহযোগিতা করব। এছাড়া ইউএন তার ছাত্র জীবনের কঠিন বাস্তবতার গল্প বলে অনুপ্রেরণা যোগায় মেধাবী ছাত্রী শারমিন আক্তারকে।
এ নিয়ে গত ১৮ই মে শনিবার দৈনিক জনবাণী তে ”জিপিএ-৫ পেয়েও পড়াশোনা অনিশ্চিত শারমিনের” শিরোনামে একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। এরপর প্রতিবেদনটি নজরে এলে তার কলেজে ভর্তির জন্য উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ৫ হাজার টাকা প্রদান করা হয়।
শিক্ষার্থী শারমিন আক্তার মনি জানায়, আমার বাবা বুদ্ধি প্রতিবন্ধী। মা থেকেও নেই। সেই ছোট বয়স থেকেই চাচার বাড়িতে থাকছি। নিজে কোচিং অথবা প্রাইভেট পড়িনি কখনো নিজের লেখাপড়া চালাতে অন্যের বাচ্চাদের প্রাইভেট পরিয়েছি। পাঠ্য বইয়ের অভাবে বড় ভাই বোনদের বই এনে পড়েছি। অভাব ও দারিদ্রতার সঙ্গে যুদ্ধ করছি প্রতিনিয়ত। শত প্রতিকূল পরিবেশের মধ্যেও পড়াশোনা ছাড়িনি লেখাপড়া চালিয়ে গেছি। এসএসসি পরীক্ষায় জিপিএ-৫ পেয়েও কলেজে ভর্তি নিয়ে দুশ্চিন্তায় ছিলাম। আজকে ইউএনও স্যারের এ সহযোগিতার জন্য আমি অনেক খুশি স্যারের প্রতি চির কৃতজ্ঞ আমি। মন দিয়ে পড়াশোনা করে সামনে আরো ভালো রেজাল্ট করবো ইনশাল্লাহ।