তিমির বনিক,মৌলভীবাজার প্রতিনিধি:
মৌলভীবাজারের কুলাউড়া উপজেলায় স্কুল শিক্ষিকা স্ত্রীকে যৌতুকের জন্য শারিরীক নির্যাতনের মামলায় অগ্রণী ব্যাংক কুলাউড়া শাখার কর্মকর্তা সুজিত কুমার দে এর জামিন আবেদন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন কুলাউড়ার বিজ্ঞ আমলী আদালত।
সোমবার (১লা এপ্রিল) দুপুরে কুলাউড়া সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার দিপংকর ঘোষ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে সুজিত কুমার দে এর বসত ঘরে নির্মমতার চিহ্ন, ভিকটিম ও সাক্ষীদের বক্তব্য শুনেন। সেখানে আসামী পক্ষ কিছুলোক জড়িত করে মিথ্যা সাক্ষী দেয়ার চেষ্ঠা করে।
অপর দিকে, এই মামলার ২নং আসামী সুজিত এর বড় ভাই সন্তোষ দে মামলার সাক্ষীদের বিভিন্নভাবে হুমকি দিচ্ছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। নির্যাতিতা স্কুল শিক্ষিকার দাবি মূল আসামীর বড় ভাই সন্তোষ দে মামলাটিকে ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করতে কিছু লোক দিয়ে হুমকিসহ নানা অপতৎপরতা চালাচ্ছেন।
নারী নির্যাতন মামলার আসামী হয়ে কিভাবে সন্তোষ দে প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়াচ্ছে এবং সাক্ষীদের সাক্ষ্য না দেয়ার হুমকি দিচ্ছেন এ প্রশ্ন সচেতন মহলের!
ওই ব্যাংক কর্মকর্তার স্ত্রী উপজেলার চুনঘর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষিকা সঞ্চিতা রানী দেব কুলাউড়া থানায় নারী শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা নং- (১৯/২৪) দায়ের করলে গত ২৪শে মার্চ অগ্রণী ব্যাংক কুলাউড়া শাখার কর্মকর্তা সুজিত কুমার দে (৫৫) কে গ্রেপ্তার করে জেলহাজতে প্রেরণ করেছে পুলিশ।
থানায় দায়েরকৃত অভিযোগ থেকে জানা যায়, ২০০৫ সালে উপজেলার কাদিপুর ইউনিয়নের চুনঘরের বাসিন্দা সুনিল চন্দ্র দে’র পুত্র সুজিত কুমার দে’র সাথে পৌরশহরের বাসিন্দা স্কুল শিক্ষিকা সঞ্চিতা রানী দেবের বিয়ে হয়। তাদের ২ কন্যা সন্তানও রয়েছে। দীর্ঘ ১০-১১ বছর ধরে তিনি স্বামীর শারিরীক ও মানসিক নির্যাতন সহ্য করে আসছেন। এনিয়ে কয়েকবার শালিসী বৈঠক হলেও সুজিতের অমানুষিক আচরণের কোন পরিবর্তন হয়নি।
মামলার অভিযোগে স্কুল শিক্ষিকা সঞ্চিতা দেব উল্লেখ করেন, ৭-৮ বছর আগে থেকে বেতন ভাতার সম্পুর্ণ টাকা তুলে দেয়ার জন্য চাপ সৃষ্টি করতো, না দিলে শারীরিক নির্যাতন চালাতেন।
সম্প্রতি সুজিত কুমার দে তার বড় ভাইয়ের প্ররোচনায় ব্যাংক ঋণ পরিশোধের কথা বলে ১০ লক্ষ টাকা দাবি করে। সেই টাকার জন্য গত ১৯ ফেব্রæয়ারি বটিদা দিয়ে মাথায় আঘাতের চেষ্ঠা করেন। হামলায় মাথা বাঁচাতে সঞ্চিতা রানী দে’র হাতে তিনটি আঙ্গুলে মারাত্মক রক্তাক্ত জখম হয়। তিনি শারিরীকভাবে গুরুতর আহতব¯’ায় ৯৯৯ কল দিলে পুলিশ ঘটনা¯’ল থেকে তাকে উদ্ধার করে। প্রথমে তাকে কুলাউড়া হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। জখম গুরুতর হওয়ায় তাকে মৌলভীবাজার সদর হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়। চিকিৎসা গ্রহণ শেষে ২৩ মার্চ শনিবার কুলাউড়া থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। এদিকে অভিযোগের প্রেক্ষিতে কুলাউড়া থানা পুলিশ সুজিত কুমার দে’কে আটক করে রোববার ২৪ মার্চ তাকে আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে।
মামলার বাদী জানান- বুধবার (২৭শে মার্চ) মৌলভীবাজারের কুলাউড়ার বিজ্ঞ আমলী আদালতে ৮- ১০জন আইনজীবির মাধ্যমে সুজিত কুমার দে’র জামিন প্রার্থনা করলে বিজ্ঞ আমলী আদালতে দীর্ঘ শুনানী শেষে বিজ্ঞ আদালত জামিন নামঞ্জুর করে কারাগারে প্রেরণের আদেশ দেন।