আরিফ শেখ, রংপুর প্রতিনিধিঃ
রংপুরের তারাগঞ্জে পূর্ব শত্রুতার জের ধরে প্রায় দেড় শতাধিক ফলন্ত কলার গাছ ও ভুট্টা ক্ষেত, তামাক ক্ষেত বিনষ্ট করেছে প্রতিপক্ষের লোকজন। রবিবার দিবাগত রাতে উপজেলার সয়ার ইউনিয়নের দামোদরপুর এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
সোমবার (২৫ মার্চ) ক্ষতিগ্রস্ত চাষী শহীদুল ইসলাম তারাগঞ্জ থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন।
লিখিত অভিযোগে তারা বলেন, আমরা নিজস্ব জমিতে দীর্ঘদিন ধরে কলা, ভুট্টা, তামাকের আবাদ করে আসছি। একই গ্রামের মৃতঃ ফারতুল্লার ছেলে নজরুল ইসলামের সঙ্গে আমাদের জমিজমা নিয়ে বিরোধের মামলা আদালতে চলমান রয়েছে । সেই শত্রুতার জের ধরে বিভিন্ন সময়ে ফসলের নানা ক্ষতি করে আসছিল। গৃহপালিত পশু ক্ষেতে লাগিয়ে দিত যাতে ফসল খেয়ে ফেলে । সর্বশেষ গতকাল রবিবার দিবাগত রাতে নজরুল ইসলাম ও তাদের দোসররা সন্ত্রাসী কায়দায় প্রায় দেড় শতাধিক ফলন্ত কলার গাছ কেটে বিনষ্ট করেছে। আমার ভুট্টা ক্ষেতের অধিকাংশ গাছের আগা কেটে দিয়েছে । তামাক ক্ষেতের গাছগুলো কেটে টুকরো টুকরো করেছে । এতে আর্থিকভাবে ক্ষতি হয়েছে প্রায় ২ লাখ টাকা। সোমবার সকালে লোকমুখে খবর পেয়ে আমি কলা বাগানে যেয়ে দেখি তারা আমার তিনটি জমির সব ফসল ধ্বংস করে আমাকে নিঃস্ব করেছে । এমতাবস্থায় আমরা তারাগঞ্জ থানায় গিয়ে লিখিত অভিযোগ করি।
সরজমিনে গিয়ে দেখা যায়, অসংখ্য কলা গাছ মাটিতে পড়ে আছে । কিছু কিছু গাছে কলা ধরেছে । ভুট্টা ও ফলেছিল দারুন । তামাক প্রায় ঘরে তোলার বয়সী হয়েছিল। কিন্তু তিন ক্ষেতের ফসলই মাটিতে পরে আছে । ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে এসব ধ্বংস করা হয়েছে ।
এ ঘটনার অভিযোগের সাক্ষী একই এলাকার ওমর আলী, মোনায়েম হোসেন, মিজানুর রহমান সহ আরো কয়েকজন জানান, কলাগাছগুলি নির্দয়ভাবে কেটে ফেলেছে । ক্ষতিগ্রস্ত শহিদুল ইসলাম এই কলা চাষের ওপর নির্ভর করে চলে । ক্ষেতে ছাগল লেলিয়ে দিয়ে ক্ষতি করে শান্ত না হয়েও , রাতের অন্ধকারে গাছ গুলো হাসিয়া দিয়ে কুপিয়ে ডুম দেয় নজরুল । আবার তামাক ও ভুট্টা ক্ষেতও তছনছ করে ফেলে । আমারা সুষ্ট বিচার চাই ওই অমানুষের ।
অভিযুক্ত নজরুল ইসলামের সাথে কথা বলতে তার বসত বাড়িতে গেলে তাকে খুঁজে পাওয়া যায়নি। নজরুলের স্ত্রী ওমি বেগম জানান, আমার স্বামী সকাল থেকে বাড়িতে নেই । কোথায় গেছে জানি না । মুঠোফোন নাম্বার চাইলেও দিতে অস্বীকৃতি জানান । ক্ষেতে ছাগল লেলিয়ে দেওয়ার বিষয় তিনি জানান, ছাগল গেছিল কিন্তু কিছু খায় নাই । আমার মেয়ে গিয়ে ছাগল নিয়ে এসেছে ।
তারাগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সিদ্দিকুল ইসলাম বলেন, লিখিত অভিযোগ পেয়েছি, ইতোমধ্যে পুলিশ ও সাংবাদিকরা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। জমি নিয়ে সমস্যা থাকতে পারে, তাই বলে গাছ কেটে দেওয়ার এখতিয়ার কারো নেই। অভিযুক্তদের বিষয়ে তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও জানান ওসি।