আবু বকর ছিদ্দিক রনি, শার্শা প্রতিনিধিঃ
যশোরে খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির ১৫ টাকা কেজির চাল নিয়ে চালবাজির অভিযোগ হরহামেশাই পাওয়া যায়। চাল চুরির অভিযোগে স্থানীয় এক জনপ্রতিনিধি ইতোমধ্যে জেলও খেটেছেন। কিন্তু চালবাজি থামেনি। জেলার কোথাও না কোথাও সরকারের সাশ্রয় মূল্যের চাল নয়-ছয় হচ্ছে। এমনি একটি ঘটনা ফাঁস হলো জেলার ঝিকরগাছা উপজেলার গদখালীতে। গদখালী বাজারে হাসান রেজার ডিলার পয়েন্টে এক ব্যক্তি বিশেষ ব্যবস্থায় ১০ কার্ডধারীর চাল একাই বছরের পর বছর উত্তোলন করে হজম করে আসছেন। অথচ যাদের নামে কার্ড, তারা পাত্তা পান না এই ডিলার পয়েন্টে। বিষয়টি ফাঁসের পর তোলপাড় সৃষ্টি হয়েছে।
জানা যায়- উপজেলার পটুয়াপাড়া গ্রামের বাসিন্দা বাদল হোসেন আওয়ামী লীগ নেতা পরিচয়ে এই অনৈতিক সুবিধা ভোগ করে আসছেন। তবে স্থানীয় আওয়ামী লীগের কোনো কমিটিতে নাম গন্ধ নেই। প্রশ্ন উঠেছে তাহলে ডিলারের লাভ কী ? বাড়তি দাম নিয়ে তিনি এ কাজ করে আসছেন-এমন তথ্য চাউর হয়েছে।
সরেজমিনে দেখা গেছে, হাসান রেজার ডিলার পয়েন্টে ৩০ কেজি করে প্রায় ১০ জনের চাল একাই উঠিয়ে নিচ্ছেন বাদল। সংশ্লিষ্ট প্রতিবেদক শাহাজান মোড়ল নামে এক কার্ডধারীর সাথে কথা বলে জানতে পারেন ডিলার তাকে পাত্তাই দেয় না। তিনি বলেন, ‘আমি দীর্ঘদিন চাল পাই না। তবে নিয়মিত চাল পাই-এ কথা বলতে বাধ্য করে আসছে অভিযুক্ত বাদল হোসেন।
ডিলার পয়েন্ট সূত্রে জানা যায়, বাদল হোসেন গত কয়েক চালান ধরে পটুয়াপাড়া গ্রামের জাহাঙ্গীর আলম, ফাহিমা বেগম, শাহাজান মোড়ল, আব্দুল লতিফ, নাজিম উদ্দিন, শিমুল হোসেনসহ অন্তত ১০ জনের চাল উত্তোলন করছেন।
ফাহিমা বেগম নামে এক কার্ডধারী বলেন, ‘গতবার আমার স্বামী চাল নিতে গেলে বাদল জোরপূর্বক আমাদের কার্ডটি কেড়ে নেয়। টু-শব্দ করলে কপালে দুঃখ আছে বলেও সে জিানিয়ে দেয়। যেকারণে ভয়ে মুখ খুলতে সাহস পাননি।
আব্দুল লতিফ বলেন, ‘চাল আনতে গেলে তার কার্ডটিও কেড়ে নেয় বাদল। তিন দিন পর টাকা ফেরত দিয়ে দিলেও কার্ড দেয়নি। সেই থেকে তিনি চাল উঠিয়ে নিচ্ছিলেন। এবার সাংবাদিকের শরণাপন্ন হয়ে বাদলের হেফাজত থেকে কার্ড ফেরত পেয়েছেন।
অভিযুক্ত আওয়ামী লীগ নেতা বাদল হোসেন বলেন, ‘আমি পাঁচটি কার্ডের চাল উঠিয়ে নিয়ে অসহায়দের মাঝে বিতরণ করি। এবার যার কার্ড তাঁকে বুঝিয়ে দিয়ে দায়মুক্ত হলাম।’
ঝিকরগাছা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) বিতান কুমার মণ্ডল বলেন, ‘একজনের কার্ডে অন্যজনের চাল ওঠানোর সুযোগ নেই। বিষয়টি তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়া হবে।’তদন্ত করে দেখা হবে ডিলারের কোনো যোগসাজস আছে কি-না-যোগ করেন ইউএনও।