বুধবার, জুন ২৬, ২০২৪

পতিত জমিতে সূর্যমুখীর হাসিতে হাসছে হাকালুকি হাওর

যা যা মিস করেছেন

তিমির বনিক,মৌলভীবাজার প্রতিনিধি:

এশিয়ার বৃহত্তম হাকালুকি হাওরের সুর্যমুখীর হাসিতে দিগন্তে জুড়ে হলুদের হাঁসি ছড়িয়েছে। বাণিজ্যিক ভিত্তিতে চাষ করা হাওরের সুর্যমুখী ফুল নিয়ে প্রতিদিন শত শত মানুষের ছবি জায়গা পাচ্ছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে।

কৃষি অফিস সূত্রের বরাতে জানা যায়, হাকালুকি হাওর তীরে মৌলভীবাজারের জুড়ী উপজেলায় প্রণোদনার আওতায় ২৩০ জন কৃষক ২৩০ বিঘা জমিতে সূর্যমুখী ফুলের চাষ করেছেন। চাষকৃত সূর্যমুখীর ফুলের মধ্যে হাইসান-৩৩, আরডিএস ২৭৫ জাতের আবাদ করা হয়েছে। বিনোদনের পাশাপাশি মূলত তেল উৎপাদনের লক্ষ্যে সরকার সূর্যমুখী চাষে কৃষকদের প্রণোদনাসহ বিভিন্নভাবে উৎসাহ দিচ্ছে।

সকালের সূর্যোদয় থেকে বিকেলের সূর্যাস্ত পর্যন্ত পশ্চিম আকাশে হেলে পড়ে ঠিক তখনই হাকালুকির সৌন্দর্য যেন ফুটে উঠে সূর্যমুখীর হাসিতে। মৃদু রৌদ্র দূর থেকে মনে হয় যেন সূর্য যেন হাট বসিয়েছে। সূর্যমুখীর অপরূপ সৌন্দর্য উপভোগ করার জন্য প্রতিদিন হাওর পাড়ে ভিড় করছেন পর্যটকরা। তাছাড়া সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে সূর্যমুখী ফুলের সাথে জুড়ে নিজের ছবি ছড়িয়ে দিতে টিনেজ ছেলে-মেয়েরাই হুমড়ি খেয়ে পড়ছে। হাকালুকি হাওরে হলুদ ফুলের মন মাতানো সৌরভ আর মৌমাছির গুঞ্জনে মুখরিত হয়ে উঠেছে কৃষকের মায়ার ফসলি জমি।

চাষিরা জানান, সূর্যমুখী চাষ করার পদ্ধতি একদম সহজ। প্রতি বিঘা জমিতে তিন কেজি বীজ, সামান্য সার ও কীটনাশক হলেই আর কোনোকিছুর প্রয়োজন হয় না। সবকিছু মিলিয়ে খরচ হয় ৪-৫ হাজার টাকা। ফলন ভালো হলেও তেল সংগ্রহ করার কোনো মেশিন স্থাপন করা হয়নি। ফলে ফুল থেকে তেল সংগ্রহ করা নিয়ে কৃষকরা দুঃশ্চিন্তায় আছেন।

হাকালুকি হাওরে সূর্যমুখীর বাগান দেখতে আসা পর্যটক নন্দিনী মল্লিক ও নিখিল মালাকার বলেন, পড়ন্ত বিকেলে সূর্যমুখীর সৌন্দর্য্য সত্যি অসাধারণ। সূর্যমুখীর সৌন্দর্য উপভোগ করতেই আমরা হাকালুকি হাওরে এসেছি। যদি ফুল থেকে তেল সংগ্রহ করা যায়, তাহলে সূর্যমুখী চাষে কৃষকদের আগ্রহ বাড়বে। অল্প ব্যয়ে বাম্পার ফলন হওয়ায় সূর্যমুখী চাষে কৃষকদের আগ্রহ আছে। সরকারি পৃষ্ঠপোষকতা ও কৃষি বিভাগের পরামর্শ পেলে এশিয়ার বৃহত্তম এই হাওরে সূর্যমুখী চাষে ভাগ্য পরিবর্তনে খুলে দিতে পারে সম্ভাবনার নতুন দ্বার।

চাষি কামরুল ইসলাম বলেন, হাকালুকি হাওরের পতিত জমিতে সূর্যমুখী চাষ করেছি। ফলনও খুবই ভালো হয়েছে। সরকারের পৃষ্ঠপোষকতা পেলে সূর্যমুখী চাষে আরও সম্প্রসারণ করবো। সরকারের কাছ থেকে উপজেলা কৃষি অফিসের মাধ্যমে পরামর্শের পাশাপাশি বিনামূল্যে বীজ পেয়েছি।

হাওর তীরের জুড়ী উপজেলা কৃষি অফিসার মো. মাহমুদুল আলম খান বলেন, সূর্যমুখী চাষ করে কৃষকরা যাতে লাভবান হয় সেই লক্ষ্যে সরকার কৃষকদের প্রণোদনা দিচ্ছে। সূর্যমুখী ভোজ্যতেল হিসেবে গুণগতমানের দিক থেকে বেশ ভালো। বাজারে সূর্যমুখীর চাহিদা ও দাম ভালো থাকায় এবং হাওরের মাটি ও আবহাওয়া সূর্যমুখী চাষের উপযোগী হওয়ায় এ বছর ভালো ফলন হয়েছে। সূর্যমুখী চাষে কৃষকদের আগ্রহ বাড়াতে আমরা নিয়মিত উঠান বৈঠক ও প্রয়োজনীয় পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছি।

তিনি ফুল থেকে তেল বের করার প্রক্রিয়া কোন দুঃশ্চিন্তা না করার পরামর্শ দিয়েছেন। সরিষা থেকে তেল বের করার মেশিন দিয়েই সূর্যমুখীর তেল সংগ্রহ করা সম্ভব। জুড়ীতে এ ধরনের মেশিন না থাকলেও কুলাউড়া উপজেলার স্কুল চৌমুহনী এলাকায় একটি মেশিন আছে। সেখানে কৃষকদের সুর্যমুখীর বিজ নিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দেন।

অনুমতি ব্যতিত এই সাইটের কোনো কিছু কপি করা কপিরাইট আইনে দণ্ডনীয়।

প্রিয় পাঠক অনলাইন নিউজ পোর্টাল দ্যামেইলবিডি.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন themailbdjobs@gmail.com ঠিকানায়।

More articles

সর্বশেষ

x  Powerful Protection for WordPress, from Shield Security
This Site Is Protected By
Shield Security