মশিউর রহমান, জামালপুরঃ
একটি মাত্র সেতু পালটে দিতে পারে দুই উপজেলার মানুষের জীবণচিত্র। সরিষাবাড়ী উপজেলার ০২ নং পোগলদিঘা উইনিয়নের গামারতলা খেয়াঘাটে একটি সেতুর অভাবে চরম দূর্ভোগে রয়েছে জামালপুরের সরিষাবাড়ী এবং সীমান্তবর্তী সিরাজগঞ্জ জেলার কাজিপুর উপজেলার দুই পারের লাখো মানুষের জীবন এবং জীবিকা।
সরজমিনে গিয়ে জানা যায়, যমুনা নদীর প্রস্থ ধারা সূবর্ণখালি নদীর গামারতলার এই খেয়াঘাটে দুই পাড়ে বসবাস করে ২৫ টি গ্রামের প্রায় কয়েক লক্ষাধিক মানুষ। অথচ সেতুর অভাবে গ্রামের লোকজন আধুনিকতার ছোঁয়া থেকে বঞ্চিত স্বাধীনতার প্রায় ৫০ বছর যাবত।
জামালপুর জেলা সিমান্তবর্তী সিরাজগঞ্জ জেলার কাজিপুর উপজেলার হাজারো মানুষ দৈনিন্দিন কাজে এ খেয়ঘাট পারি দিয়ে আসতে হয় সরিষাবাড়ীতে। দীর্ঘদিন স্থানীয়রা সেতু নির্মাণের দাবি জানালেও তা বাস্তবায়ন হচ্ছে না। তাই বর্ষা মৌসুমে নৌকা দিয়ে পারাপার হতে গিয়ে দূর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে এলাকার সাধারণ লোকজনের।
এ যেনো স্বাধীন বাংলাদেশের একটি অবহেলিত বিচ্ছিন্ন জনপদ এটি।
নদীর পশ্চিম পাড়ে অবস্থিত যমুনা উচ্চ বিদ্যালয় এবং কাজিপুর উপজেলার যাতায়তের রাস্তা। পুর্বপাশে রয়েছে পশ্চিম তীরের মানুষের রাজধানী ঢাকাসহ বিভিন্ন জেলা শহরের যাতায়তের প্রধান মাধ্যম তারাকান্দি রেলওয়ে স্টেশন, তারাকান্দি বাস টার্মিনাল কান্দারপাড়া বাজার, রয়েছে তারাকান্দি যমুনা সার কারখানা, পোগলদিঘা মহাবিদ্যালয়, পোগলদিঘা বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় ,পোগলদিঘা বহুমুখি উচ্চ বিদ্যালয়, সরিষাবাড়ী উপজেলা হাসপাতাল,বিভিন্ন চিকিৎসা কেন্দ্র ব্যাংক বিমা প্রতিষ্ঠানসহ সরকারী-বেসরকারী স্থাপনা। সব মিলয়ে কাজিপুরের মানুষের সকল প্রয়োজনেই আসতে হয় এ উপজেলা শহরসহ তারাকান্দি শিল্পাঞ্চলে।
কোমলমতি শিক্ষার্থী সহ নানা পেশাজীবী লোকজনের সাথে কথা হলে এই সময় তারা বলেন,‘ স্বাধীনতার ৫০ বছর পর এসেও প্রতিদিন এভাবেই পারাপারের জন্য আমাদের গামারতলার এই খেয়াঘাটে বসে থাকতে হয়। অধিকাংশ শিক্ষার্থীরা এ সময় বলেন, ‘বিদ্যালয় থেকে বের হই নদী পারাপারের জন্য অথচ নদীর পাড়ে এসে বসে থাকতে হয়। সঠিক সময়ে পারাপার হতে না পেরে আমরা অনেক সময় গুরুত্বপূর্ণ ক্লাস করতে পারি না। তাছাড়া বর্ষার মৌসুমে প্রায় দিনই বৃষ্টির পানিতে ভিজতে হয় এবং ভিজে কাপড় নিয়েই ক্লাস করতে হয়। তাছাড়া ঝড়ের কবলে পড়ে অনেক সময় দূর্ঘটনার শিকার হতে হয় আমাদের’।
এই সময় খেটে খাওয়া শ্রমজীবী মানুষজন বলেন,‘ ফসল আবাদ করে পারাপারের অভাবে সঠিক সময়ে ফসলাদী শহরের হাট-বাজারে নিতে পারি না। অসুস্থ্য হলে দ্রুত সময়ে হাসপাতালে নেয়া যায় না। তাছাড়াও রাতের বেলা পড়তে হয় বড় বিপদে, অনেক সময় ঘটে যায় বড় ধরনের দূর্ঘটনা’।
এ ব্যাপারে ২ নং পোগলদিঘা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আশরাফুল আলম মানিক গ্রামবাসীর সঙ্গে একাত্মতা পোষণ করে বলেন,‘ প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণা প্রতিটি গ্রাম হবে শহর। তারই ধারাবাহিকতায় কাজ করে যাচ্ছে বর্তমান সরকার। নদীর পশ্চিম তীরে লাখ লাখ মানুষের বসবাস। তাই তিনি চরাঞ্চলের মানুষের যোগাযোগ এবং জীবন মান উন্নয়নের জন্য সূবর্ণখালি নদীর উপর একটি সেতুর জন্য প্রধানমন্ত্রীর নিকট আবেদন জানান’।
তবে দ্রুত বাস্তবায়নের আস্বাস দিয়ে উপজেলা আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মোঃ রফিকুল ইসলাম বলেন, আমাদের বর্তমান সংসদ সদস্য মোঃ আব্দুর রশিদ স্যার এর সাথে এ বিষয়টি নিয়ে কথা হয়েছে। স্যার অত্যান্ত সৎ, জনবান্ধব ও জনপ্রিয় ব্যাক্তি। এ ব্রিজটি দ্রুত বাস্তবায়নের জন্য তিনি সর্বাত্তক ভাবে ব্যাবস্থা গ্রহন করবেন।
উপজেলা প্রকৌশলী জাহিদুল ইসলাম বলেন, এ ব্রিজটির জন্য যে সকল কাগজপত্র চেয়েছিল সকল কাগজপত্র জেলা অফিসে পাঠিয়ে দিয়েছি।