তিমির বনিক, মৌলভীবাজার প্রতিনিধি:
মৌলভীবাজার জেলার শ্রীমঙ্গল উপজেলার উত্তর উত্তরসুর হাইল হাওর এলাকায় গড়ে উঠেছে কাজী এন্ড আজাদ এগ্রো: ফার্ম লিমিডেট। এখানে কৃষি খামারের সুবাদে হয়েছে বেকার যুবকদের কর্মসংস্থান।
২ বছর আগে প্রায় ৭ একর জমিতে কাজী অ্যান্ড আজাদ এগ্রো ফার্ম নামে কৃষি খামার করা হয়। এখন জমির পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ২৫ একরে।
প্রবাসে বসে শখের কাজী আয়েশা মনির স্বামী কাজী জয়নাল আবদীন এর সার্বিক সহযোগিতায় আয়েশা মনি গড়ে তুলেন এই কৃষি খামারটি।
কৃষি খামারে রয়েছে ২৬ প্রজাতির ৪ হাজার ৫’শ টি বিদেশি ও ৪০ প্রজাতির ৪৫০টি দেশীয় ফলজ ও বনজ গাছ। রয়েছে ক্যান্সার প্রতিরোধক ‘করসল’ ফলের গাছও।
শখের সমন্বিত কৃষি খামারে গিয়ে দেখা যায়, গাছে গাছে ঝুলছে দেশি- বিদেশি জাতের বারমাসি আম
এছাড়াও যে সকল ফলের গাছের দেখা মিলে, ব্যানানা ম্যাংগো, ডকমাই, কিং অফ চাকাপাত থাইল্যান্ড , কিউজার ও বারমাসি আম। রয়েছে দেশি জাতের বারি-১১ , বারি-৪, ল্যাংড়া, হাঁড়িভাঙা ও আম্ররুপালি জাতের আম, গোল্ডেন ৮ পেয়ারা। বল সুন্দরী কুল বড়ই, ছোট মিষ্টি ও টক বড়ই । খামারটিতে পুরোপুরি অরগানিক পদ্ধতিতে ফল ও সবজির চাষবাদ করা হয়। রয়েছে প্রায়১ হাজারের বেশি বিভিন্ন জাতের আম গাছ। এই শখের খামারে রয়েছে থাই জাম্বুরা, দার্জিলিং কমলা, চায়না-৩ লিচু,বুম্বাই লিচু, বল সুন্দরী কুল, ছফেদা, আনার, একোকেডু, সাউথ আফ্রিকান হলুদ মাল্টা, চায়না টক কুল, থাই বারোমাসি মালটা,থাই কাডিমুন বারমাসি, থাই পিংক কাঁঠাল, থাই বারোমাসি কাঁঠাল, থাই লংগান, রামভুটান, জি নাইন কলা, অগ্নিশ্বর কলা, পেঁপে মিষ্টি তেঁতুল ও রেড আইবেরি, ইন্ডিয়ান আলপানস, আমেরিকান পালমার, ভীয়েতনামের ছোট নারিকেল, চাষ হচ্ছে বিভিন্ন জাতের শাস সবজির তার মধ্যে, ফুলকপি, লাল ফুলকপি, চালকুমড়া,পুইশাক, অগ্নিশ্বর কলা, চাইনিজ কমলা, মিষ্টি কুমড়া, টমেটো, করলা, লাউ, বেগুন, কাঁচা মরিচ, বোম্বে মরিচ,পুই শাক সহ আরও বাহারি জাতের শাক সবজি। এছাড়াও রয়েছে মাছের ফিসারিজ গরু ও দেশি পাহাড়ি মুরগি।
কাজী আয়েশা মনির সাথে কথা বলে জানা যায় তিনি বলেন, আমার লন্ডন প্রবাসী স্বামী মো: জয়নাল আবদীন’র সহযোগিতা নিয়ে বাংলাদেশে প্রথম জায়গা কিনে হাওরে এলাকায় খামারের কাজ শুরু করি। তিনি আমাকে সব সময় মানসিক শক্তি জোগিয়েছেন। এই খামারটি করতে গিয়ে আমাকে নানান বাধাঁ সম্মুখীন হতে হয়েছে।
আমি সরকারি সহযোগিতা পেলে খামারটি আরও বড় পরিসরে করতে চাই। আমাদের সিলেটের প্রায় লোকজন প্রবাসে থাকার কারনে বহু জায়গা অনাবাধি পতিত জমি রয়েছে। এগুলিকে আবাদের আওতায় নিয়ে আসতে পারবো।
এ ব্যাপারে শ্রীমঙ্গল উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মো: মহিউদ্দিন বলেন, এই খামারটি একটি সমন্বিত কৃষি খামার। এমনিতে সিলেট অঞ্চলে অনাবাদি ও পতিত জমি আছে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বলেছেন কোন জমি অনাবাদি এক ইঞ্চিও জমি রাখা যাবে না। সেই অনাবাদি জমিকে খামারে আবাদের পর্যায়ের খামারটি অসাধারণ উদাহরণ।
এই খামারটিতে আমরা নিয়মিত বিভিন্ন পরামর্শ ইত্যাদি প্রদান করে আসছি। এই খামারটি পুরোপরি সিসি ক্যামেরার আওতায়, কুকুর ও আছে যা করলে একটি খামারের শতভাগ নিরাপত্তা ব্যবস্থা থাকা প্রয়োজন।
তিনি আরোও বলেন, আমরা আগামি বর্ষাকালে তাদের কে কিছু ফলের গাছের চারা কলম দিবো। তিনি যেভাবে এই খামারে ৪০ রকমের আম জাত আছে এবং বিভিন্ন জাতের মাল্টা আছে এই গুলিকে এ পরিবেশে টিকিয়ে রাখাটাই অনেকটা চ্যালেঞ্জ। এই চ্যালেঞ্জটা মোকাবিলায় টিকিয়ে রাখতে আমরা পরামর্শ প্রদানে উপজেলা কৃষি অফিস কার্যকর ভূমিকা রাখবো।
শ্রীমঙ্গল উপজেলা প্রাণীসম্পদ কর্মকর্তা কর্ণ চন্দ্র বলেন, শ্রীমঙ্গলে প্রথম স্মার্ট খামার হিসেবে স্মার্ট খামার হিসেবে আমি বলতে চাচ্ছি যা সুদূর লন্ডন থেকে ডিজিটাল প্রযুক্তির মাধ্যমে মনিটরিং করা হচ্ছে। উপজেলা প্রাণীসম্পদ এন্ড ভেটেনারি হসপিটাল শ্রীমঙ্গল সব সময় এরকম একটি খামার গড়াতে সাধুবাদ জানাই।