শুভ তংচংগ্যা, জেলা প্রতিনিধি বান্দরবান:
মিয়ানমারের অভ্যন্তরে চলমান সংঘর্ষের জেরে এখন পর্যন্ত মিয়ানমার সীমান্তরক্ষী বাহিনী বর্ডার গার্ড পুলিশের (বিজিপি) ৬৮ জন সদস্য অস্ত্রসহ বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে। তাদেরকে নিরস্ত্রীকরণ করে নিরাপদ আশ্রয়ে নিয়েছে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) ।
সোমবার (৫ ফেব্রুয়ারি) সকালে বিজিবির জনসংযোগ কর্মকর্তা মো. শরীফুল ইসলাম সংবাদমাধ্যমকে এ তথ্য জানিয়েছেন। তিনি আরো বলেন, আহত ১৫ জন বিজিপি সদস্যের চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হয়েছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, নাইক্ষ্যংছড়ি ঘুমধুম-তুমব্রু সীমান্তে মিয়ানমারের নিরাপত্তা বাহিনী ও আরকান আর্মি (এএ) এবং রোহিঙ্গা সলিডারি অর্গানাইজেশন (আরএসও) মধ্যে ব্যাপক গোলাগুলির ঘটনায় গুলি ,মর্টার শেল, বিস্ফোরিত রকেট লাঞ্চারের খোল এপারের ঘরবাড়িতে পড়ার কারনে স্থানীয়দের মধ্যে চরম আতংক বিরাজ করছে। এসময় প্রবীর ধর (৬৫) ও শামসু (৫৫) নামের দুইজন গুলিবিদ্ধ হয়। তাদের বাড়ি তুমব্রু ঘোনার পাড়ায়। এই ঘটনায় নিরাপত্তার জন্য ৫টি স্কুল ও ১টি মাদ্রাসা বন্ধ রয়েছে।
নিজের স্কুল পরিদর্শন করে তুমব্রু সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় এর সহকারী শিক্ষক হামিদুল হক বলেন, গতকাল আমাদের স্কুলে মিয়ানমারের ৬০ জন সৈনিক অস্ত্রসস্ত্র নিয়ে আশ্রয় গ্রহন করেছে। তাদের মধ্যে বিজিপির ৫ জন গুলিবিদ্ধ হয়ে আহত হওয়ায় তাদের স্থানীয় হাসপাতালে নেওয়া হয়।
শনিবার (৩ ফেব্রুয়ারি) বিকালে থেকে রবিবার দুপুর পর্যন্ত লাগাতার গোলাগুলি, মার্টারশেল নিক্ষেপ ও রকেট লান্সার বিস্ফোরণের বিকট শব্দে কেপে ওঠে সীমান্তবর্তী ঘুমধুম-তুমব্রুর বিস্তীর্ণ এলাকা। এসময় তুমব্রুর কোনা পাড়ায় ভুলুর বাড়িতে এসে পড়েছে রকেট লান্সার উড়ে এসে পড়ার কারনে ঘর ক্ষতিগ্রস্ত হয় এবং স্থানীয় প্রবীর ধর গুলিবিদ্ধ হয়।
এসময় বান্দরবানের জেলা প্রশাসক শাহ মোজাহিদ উদ্দিন জানিয়েছেন, পরিস্থিতি বিবেচনায় সীমান্তবর্তী পাঁচটি প্রাথমিক বিদ্যালয় বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। যানবাহন এবং জনচলাচল সীমিত করা হয়েছে। কোণারপাড়া, ভাজাবানিয়া, বাইশফাঁড়ি এলাকার লোকজনও নিরাপদ আশ্রয়ে রয়েছে। পরিস্থিতির ওপর সার্বক্ষণিক নজরদারি করা হচ্ছে। সীমান্তে বিজিবি টহল এবং নিরাপত্তা চৌকিগুলোতে শক্তি বৃদ্ধি করা হয়েছে। পরিস্থিতি মোকাবিলায় বিজিবি সতর্কাবস্থায় রয়েছে।