কমলগঞ্জে বাংলাদেশ ভূঁইয়া সম্প্রদায় উন্নয়ন পরিষদের মহাসমাবেশ অনুষ্ঠিত
ভূঁইয়া সম্প্রদায়কে ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর গেজেটে অন্তর্ভূক্তির দাবী..
কমলগঞ্জ(মৌলভীবাজার)প্রতিনিধিঃ
মৌলভীবাজারে কমলগঞ্জে বাংলাদেশ ভূঁইয়া সম্প্রদায় উন্নয়ন পরিষদের আয়োজনে ১১৮টি চা বাগানের প্রতিনিধিদের অংশগ্রহণে মহাসমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।
সোমবার (২৯ জানুয়ারি) দুপুরে উপজেলার আলীনগর চা বাগানে অনুষ্ঠিত সমাবেশে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মৌলভীবাজারের জেলা প্রশাসক ড. উর্মি বিনতে সালাম। সমাবেশে বাংলাদেশ ভূঁইয়া সম্প্রদায়কে ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর গেজেটে অন্তর্ভূক্তির জন্য জোর দাবী জানানো হয়।
বাংলাদেশ ভূঁইয়া সম্প্রদায় উন্নয়ন পরিষদের সভাপতি অনিরুদ ভূঁইয়ার সভাপতিত্বে ও চা ছাত্র-যুব পরিষদ নেতা সজল কৈরীর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন কমলগঞ্জ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা অধ্যাপক মো: রফিকুর রহমান, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জয়নাল আবেদীন, ওসি তদন্ত আব্দুর রাজ্জাক, আলীনগর চা বাগানের ব্যবস্থাপক হাবিব আহমদ চৌধুরী, লোক গবেষক আহমদ সিরাজ, আলীনগর চা বাগান পঞ্চায়েত সভাপতি গণেশ পাত্র, সাংবাদিক শাহীন আহমদ, আলীনগর ইউপি সদস্য রামবরচ কৈরী। স্বাগত বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ ভূঁইয়া সম্প্রদায় উন্নয়ন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক মহাদেব ভূঁইয়া।
মহাসমাবেশে বাংলাদেশ ভূঁইয়া সম্প্রদায় উন্নয়ন পরিষদের পক্ষ থেকে অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি মৌলভীবাজারের জেলা প্রশাসক ড. উর্মি বিনতে সালাম এর কাছে বাংলাদেশ ভূঁইয়া সম্প্রদায়কে ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর গেজেটে অন্তর্ভূক্তির জন্য একটি স্মারকলিপি প্রদান করা হয়। অনুষ্ঠানে ভূঁইয়া সম্প্রদায়ের কৃতি শিক্ষার্থী ও সমাজসেবকদের সম্মাননা ক্রেস্ট প্রদান করা হয়।
মহাসমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে মৌলভীবাজারের জেলা প্রশাসক ড. উর্মি বিনতে সালাম বলেন, কাউকে পিছনে ফেলে দেশের সার্বিক উন্নয়ন সম্ভব নয়। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকার সকল সম্প্রদায়ের মানুষের উন্নয়নে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। বাংলাদেশ ভূঁইয়া সম্প্রদায়কে ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর অন্তর্ভূক্তি করার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের আশ্বাস প্রদান করেন। তিনি উচ্চ শিক্ষা গ্রহণে ভূঁইয়া সম্প্রদায়ের কৃতি শিক্ষার্থীদের বৃত্তির ব্যবস্থা করবেন বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
সমাবেশ শেষে চা বাগানের ঐতিহ্যবাহী কাঠিনৃত্য, ঝুমুর নৃত্যসহ মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। মহাসমাবেশে সারাদেশের ১১৮টি চা বাগানের ভূঁইয়া সম্প্রদায়ের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।
উল্লেখ্য, বাংলাদেশের ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী ভূঁইঢা সম্প্রদায় আদিকাল থেকে এখন পর্যন্ত তাদের নিজস্ব ভাষা, সংস্কৃতি, কৃষ্টি কালচার, রীতি রেওয়াজ লালন করে আসছে। বাংলাদেশের বৃহত্তর রংপুর, রাজশাহী, মৌলভীবাজার, হবিগঞ্জ ও সিলেটের চা বাগান ও চা বাগানের বাহিরে সরকারি নিজস্ব ভূমিতে বসবাস করে আসছে। অদ্যাবধি কিছু কিছু অঞ্চলে তাদের ভাষা, সংস্কৃতি, কৃষ্টি কালচার হারাতে বসছে। তাই সরকারের সহযোগিতা প্রয়োজন। বাংলাদেশ ভূঁইয়া সম্প্রদায়কে ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী গেজেটে অন্তর্ভূক্তি করা হলে শিক্ষা, খাদ্য, বাসস্থান, চিকিৎসাসহ তাদের সংস্কৃতি নিয়ে বাংলাদেশে বসবাস করতে পারবে।