ইবি প্রতিনিধি:
বেতন ভাতার দাবিতে মানববন্ধন করেছে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) ল্যাবরেটরি স্কুল এন্ড কলেজের শিক্ষক-কর্মচারী ও শিক্ষার্থীবৃন্দ। শনিবার (২৭ জানুয়ারি) বেলা সাড়ে ১১ টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন ভবনের সামনে এ মানববন্ধন কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়।
এসময় শিক্ষার্থীরা, ‘শ্রেণিকক্ষে ফিরতে চাই আমার শিক্ষককের বেতন চাই’, ‘আমার শিক্ষক রাস্তায় কেন প্রশাসন জবাব চাই,’ ‘আমরা সবাই পড়তে চাই আমার শিক্ষকের বেতন চাই,’ ‘স্কুল নিয়ে ষড়যন্ত্র বন্ধ করতে হবে’ ইত্যাদি দাবি সম্বলিত প্লা-কার্ড হাতে উপস্থিত ছিলেন।
মানববন্ধন এ উপস্থিত ছিলেন ল্যাবরেটরি স্কুল এন্ড কলেজের প্রধান শিক্ষক মুজাম্মিল হক মোল্লাহ ও সহকারী প্রধান শিক্ষক গোলাম মামুন সহ স্কুল এন্ড কলেজের ১৫ জন শিক্ষক ও কর্মচারী সকলেই উপস্থিত ছিলেন। এছাড়া স্কুল এন্ড কলেজের প্রায় শতাধিক শিক্ষার্থী উপস্থিত ছিলেন।
জানা যায়,এখন পর্যন্ত ২০২৩ সালের ডিসেম্বর মাসের বেতন ভাতা না পাওয়ায় ১৭ জানুয়ারি বিশ্ববিদ্যালয় রেজিস্ট্রার বরাবর স্মারকলিপি দিলেও তা সমাধান হয়নি।
মানববন্ধনে ইবি ল্যাবরেটরি স্কুল এন্ড কলেজের প্রধান শিক্ষক মুজাম্মিল হক মোল্লাহ বলেন, বাংলাদেশের সকল বিশ্ববিদ্যালয় স্কুল এন্ড কলেজের শিক্ষকরা যথা নিয়মে বেতন পেলেও আমরা কেন পাবোনা। আমাদের অপরাধটা কি? আমাদের কেন বেতন ভাতার দাবিতে মাঠে নামতে হবে। এই ক্যাম্পাসে অনেক ধরনের মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে কিন্তু এই প্রথম মনে হয় বেতন ভাতার দাবিতে আমরা মানববন্ধন করছি।
এছাড়া আরো বলেন বিশ্ববিদ্যালয় উপাচার্য, উপ-উপাচার্য, ট্রেজারাসহ সকলের সাথে কথা বলেছি তখন তারা বেতনের আশ্বাস দিলেও এখন পর্যন্ত আমরা তা পাইনি। স্কুল প্রতিষ্ঠার ২৮ বছরে এরকম কখনো হয়নি। হঠাৎ করে বর্তমান প্রশাসন কি কারণে বেতন বন্ধ করে রাখছে তা জানিনা।
তিনি আরও বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় উপাচার্য প্রথম দিকে বেতন দেওয়ার আশ্বাস দিলেও পরে দেখা করতে গেলে আমার সাথে তিনি রূঢ় আচরণ করছেন।প্রশাসনের কাছে আমরা জোর দাবি জানাচ্ছি আগামী ২৪ ঘন্টার মধ্যে আমাদের বেতন ভাতা পরিশোধ করার’।
এদিকে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ বলছেন, প্রতিষ্ঠানটির ব্যয় বাবদ প্রতি বছর প্রায় ১ কোটি ২০ লাখ টাকা খরচ হয়। তবে এই খাতে ইউজিসি থেকে পর্যাপ্ত অর্থ বরাদ্দ প্রদান করা হয় না। যে কারণে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন খাত থেকে ধার করে প্রতিষ্ঠানটির খরচ মেটাতে হয় প্রশাসনকে। সরকারের ব্যয় সংকোচন নীতির ফলে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ পূর্বের মতো অর্থ বরাদ্দ পাচ্ছে না। এ ছাড়াও বর্তমানে কোনো ফান্ডেও পর্যাপ্ত অর্থ নেই। যে কারণে স্কুল-শিক্ষকদের বেতন-ভাতা প্রদান করা সম্ভব হচ্ছে না বলে জানিয়েছেন কর্তৃপক্ষ।
আইআইইআর-এর পরিচালক অধ্যাপক ড. মামুনুর রহমান বলেন, ‘আইআইইআর ম্যানেজিং কমিটি হিসেবে প্রতিষ্ঠানটিকে পরিচালনা করে থাকে। ইউজিসি উনাদের ফান্ড পর্যাপ্ত দেয়নি। আনুমানিক ১ কোটি ২০ লাখের মধ্যে শুধু ২০ লাখ টাকা দিয়েছে। এজন্য আইআইইআরসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন খাত থেকে ধার হিসেবে নিয়ে তাদের বেতন দেওয়া হতো। তবে প্রশাসন ধার নেওয়ার পর আর পরিশোধ করা হয় না। আমাদের আইআইইআর সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন খরচ আছে। হিসাব-নিকাশ করলে দেখা যায় ওই খাতে অর্থ ধার দেওয়ার জন্য আমাদের এখানে অর্থের সংকট পড়ে যায়।’
এই বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. শেখ আবদুস সালাম বলেন, ‘এক মাসের বেতন বন্ধ থাকায় তারা মানববন্ধন করেছে। তাদের বেতন এক থেকে দেড় বছর আগে ইউজিসি থেকে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। তারপরও বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন খাত থেকে তাদের বেতন দেওয়া হতো। আমরা বিষয়টা নিয়ে ইউজিসির সঙ্গে আলোচনা করেছি। আশা করছি দ্রুতই সমাধান হয়ে যাবে।’