কে. এম. সাখাওয়াত হোসেন: মাদরাসা পড়ূয়া ছাত্রকে অপরহণ মামলার অপহরণ চক্রের মূল পরিকল্পনাকারীসহ দুজনকে গ্রেফতার ও ভুক্তভোগী নিদানুর ইসলাম লাবিবকে (১৩) উদ্ধার করেছে র্যাব। তিনি ময়মনসিংহের নান্দাইল উপজেলার ডাংরা গ্রামের মো. নজরুল ইসলামে ছেলে এবং কিশোরগঞ্জ সদরে নগুয়া হেফজুল আরকাম হাফিজিয়া মাদরাসার হিফস বিভাগের ছাত্র।
অপহরণ চক্রের মূলহোতা বান্দরবানের আলীকদম থানাধীন নয়াপাড়া গ্রামের মনির আহমেদের ছেলে মো. আব্দুল্লাহ (২৬)। এ চক্রের অপর সদস্য কুমিল্লার মুরাদনগর থানাধীন দেওড়া গ্রামের আব্দুল কুদ্দুসের ছেলে মো. রাসেল (২৫)।
তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তা তাদেরকে শনিবার রাত সোয়া ৮টার দিকে সিলেটের দক্ষিণ সুরমা থানাধীন ভার্থখোলা এলাকা থেকে আটক ও ভুক্তভোগীকে উদ্ধার এবং মুক্তিপণের নগদ ২৪ হাজার পাঁচশো টাকা ও দুইটি মোবাইলসহ পাঁচটি সিম উদ্ধার করে র্যাব।
রবিবার (২১ জানুয়ারি) দুপুরে প্রেরিত প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে কিশোরগঞ্জ র্যাব-১৪ এর কোম্পানী অধিনায়ক স্কোয়াড্রন লীডার মো. আশরাফুল কবির জানান, গত ২২ ডিসেম্বর বিকেল আড়াইটার দিকে ভুক্তভোগী নিদানুর ইসলাম লাবিব বর্তমান কিশোরগঞ্জের রথখোলা নিজ বাসা থেকে মাদরাসার উদ্দেশ্যে বের হন। রাত ৭টার দিকে মাদরাসার শিক্ষক ভুক্তভোগীর মা মোছা. লুৎফা বেগমকে ফোনে জানায় লাবিব মাদরাসায় আসে নাই। ভুক্তভোগী মা ও তার আত্মীয়-স্বজনেরা মাদরাসা ও সম্ভাব্য স্থানে খোঁজাখুজি করেন। ভুক্তভোগীর সন্ধান না পেয়ে কিশোরগঞ্জ সদর থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন। জিডির কপি কিশোরগঞ্জ র্যাব ক্যাম্পকে অবগত করে।
এরই ধারাবাহিকতায় গত ১৭ জানুয়ারি তথ্য ও প্রযুক্তির মাধ্যমে লাবিব একটি সংঘবদ্ধ অপহরণকারী চক্র দ্বারা অপহরণ হয়েছে তা নিশ্চিত হয়। অপহরণকারীরা ভুক্তভোগীকে নিয়ে চট্টগ্রাম, ঢাকা, ভৈরব, সিলেটসহ দেশের বিভিন্ন প্রান্তে ঘন ঘন স্থান পরিবর্তন করায় ভুক্তভোগীকে উদ্ধার এবং অপহরণকারী চক্রকে ধৃত করতে কিছুটা বেগ পেতে হয় র্যাবকে।
এরমধ্যে অপহরণ চক্রের মূলহোতা আব্দুল্লাহ বিভিন্ন সময় বিভিন্ন মোবাইল নাম্বার হতে ভুক্তভোগীর পরিবারকে ফোন করে মুক্তিপণ হিসেবে আট লক্ষ টাকা দাবি করে। মুক্তিপণের টাকা না দিলে ভুক্তভোগীকে হত্যা করবে বলে তার পরিবারকে হুমকি দিতে থাকে। ভুক্তভোগীর পরিবার নিরুপায় হয়ে গত ২০ জানুয়ারি সকাল ৮টার দিকে তিন হাজার এবং সন্ধ্যা ৭টার দিকে পঁচিশ হাজার টাকাসহ মোট আটাশ হাজার টাকা অপহরণকারীদের দেওয়া বিকাশ নাম্বারে প্রেরণ করে। পরে ভুক্তভোগীর মাতা তার ছেলে অপহরণের বিষয়টি নিশ্চিত হয়ে কিশোরগঞ্জ সদর থানায় অজ্ঞাতনামা আসামীদের বিরুদ্ধে অপহরণ ও মুক্তিপণ দাবি সংক্রান্ত মামলাও দায়ের করেন।
তিনি আরও জানান, বিকাশের নাম্বারের সূত্র ধরে তথ্য ও প্রযুক্তির মাধ্যমে র্যাব আসামিদের অবস্থান নিশ্চিত হয় এবং দীর্ঘ প্রচেষ্টায় ভুক্তভোগীকে উদ্ধার ও অপহরণকারী চক্রের মূলহোতাসহ দুজনকে আটক করে। তাদের বিরুদ্ধে পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য কিশোরগঞ্জ সদর মডেল থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।