কে এম নুর মোহাম্মদ
কক্সবাজার জেলা প্রতিনিধি
কক্সবাজারের টেকনাফ থানাধীন শাহপরীরদ্বীপ এলাকায় অভিযান চালিয়ে ২৫টি ড্রামে মোট ১ হাজার ৪১৫ লিটার অকটেন, ৪০ কেজি পেঁয়াজ, ৩১ কেজি রসুন, ৩৬ কেজি আদা উদ্ধার করেছে
র্যাব-১৫ এর সদস্যরা। এসময় সমুদ্রের বিভিন্ন চ্যানেল ব্যবহার করে অবৈধভাবে চোরাইপথে পার্শ্ববর্তী দেশ মিয়ানমারে পাচারকারী চক্রের ২ জন চোরাকারবারীকে আটক করা হয়েছে।
আটককৃতরা হলেন,টেকনাফ উপজেলার সাবরাং ইউনিয়নের শাহপরীরদ্বীপ ৭নং ওয়ার্ড মাঝের পাড়ার আমান উল্লাহর ছেলে ফয়েজ উল্লাহ (২২),
একই এলাকার আব্দুল গফুরের ছেলে আব্দুল্লাহ(২০)।
কক্সবাজার র্যাব-১৫ অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ও সিনিয়র সহকারী পরিচালক (ল’ এন্ড মিডিয়া) মোঃ আবু সালাম চৌধুরী গণমাধ্যমকে এসব তথ্য নিশ্চিত করেন।
তিনি জানান,সাম্প্রতিক সময়ে সমুদ্রের বিভিন্ন চ্যানেল ব্যবহার করে কতিপয় চোরাকারবারী জ্বালানী তৈল অকটেনসহ বিভিন্ন নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র অবৈধভাবে চোরাচাইপথে পার্শ্ববর্তী দেশে পাচার করছে মর্মে তথ্য পায় র্যাব-৫।
মঙ্গলবার (১৬ জানুয়ারি) রাতে র্যাব-১৫, কক্সবাজার উক্ত চোরাকারবারী ও পাচারকারী চক্রের সদস্যদের আটক এবং পাচার রোধে গোয়েন্দা নজরদারি বৃদ্ধি করে। এরই ধারাবাহিকতায় গোপন সংবাদের ভিত্তিতে র্যাবের আভিযানিক দল,অবৈধভাবে পাচার করার উদ্দেশ্যে কতিপয় পাচারকারী জ্বালানী তৈল অকটেন টেকনাফ থানাধীন সাবরাং ইউনিয়নের ৭নং ওয়ার্ডের শাহপরীরদ্বীপ মাঝের পাড়া এলাকার ডাঙ্গরপাড়া-মাঝেরপাড়া রোডের পশ্চিম পাশে একটি দোকানের সামনে রাস্তার উপর অবস্থান করছে। এমন সংবাদের ভিত্তিতে র্যাব-১৫, সিপিসি-১, টেকনাফ ক্যাম্পের চৌকস আভিযানিক দল উক্ত এলাকায় একটি বিশেষ অভিযান পরিচালনা করে। এ সময় র্যাবের আভিযানিক দলের উপস্থিতি বুঝতে পেরে তিনজন ব্যক্তি তাদের হেফাজতে থাকা অকটেন ভর্তি প্লাস্টিকের ড্রামসহ অন্যান্য জিনিসপত্র রেখে পালানোর চেষ্টাকালে দুইজনকে আটক করতে সক্ষম হয়। অপর একজন চোরাকারবারী দ্রুত কৌশলে দৌড়ে পালিয়ে যায়। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আটককৃত চোরাকারবারী তাদের নাম-ঠিকানা প্রকাশ করে। এছাড়াও তারা জ্বালানী তৈল অকটেনসহ নিত্য প্রয়োজনীয় খাদ্য সামগ্রী,পেঁয়াজ, রসুন ও আদা পাচারের উদ্দেশ্যে উক্ত স্থানে মজুদ করেছে বলে স্বীকার করে। পরবর্তীতে উপস্থিত সাক্ষীদের সম্মুখে আটককৃতদের হেফাজত থেকে ২৫টি ড্রামে সর্বমোট ১ হাজার ৪১৫ লিটার অকটেন (যার আনুমানিক বাজারমূল্য ১ লক্ষ ৮৩ হাজার ৯৫০ টাকা,৪০ কেজি পেঁয়াজ, ৩১ কেজি রসুন, ৩৬ কেজি আদা উদ্ধার এবং ০৩টি সীমসহ ০১টি বাটন ও ০১টি স্মার্ট ফোন জব্দ করা হয়।
জিজ্ঞাসাবাদে আরও জানা যায় যে, আটককৃত চোরাকারবারীরা দীর্ঘদিন যাবৎ এই চোরাকারবারী এবং পাচারের সাথে জড়িত। তারা পরস্পর-পরস্পরের সহযোগীতায় দেশের বিভিন্ন পেট্রোল পাম্প থেকে পাইকারি দামে জ্বালানী তৈল অকটেনসহ নিত্য প্রয়োজনীয় বিভিন্ন সামগ্রী ক্রয় করে নিজেদের হেফাজতে মজুদ করতো। পরবর্তীতে আর্থিকভাবে অধিক লাভবান হওয়ার জন্য সমুদ্রের বিভিন্ন চ্যানেল ব্যবহার করে অবৈধভাবে চোরাইপথে পার্শ্ববর্তী দেশে এ সকল জ্বালানী ও পণ্য পাচার করে থাকে। অদ্য অবৈধভাবে পার্শ্ববর্তী দেশে পাচারের লক্ষ্যে জ্বালানী তৈল অকটেন, পেঁয়াজ, রসুন ও আদা উক্ত স্থানে মজুদ করেছিল এবং একপর্যায়ে উপরোল্লিখিত আলামতসহ র্যাবের আভিযানিক দলের কাছে ধৃত হয়।
তিনি আরো জানান,উদ্ধারকৃত আলামতসহ আটককৃত ও পলাতক চোরকারবারীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।