আবু বকর ছিদ্দিক রনি, শার্শা (যশোর) প্রতিনিধিঃ
তিন মাস বয়সী আফিয়া সুলতানা ঠান্ডাজনিত রোগে ভুগছে। যশোর সদর উপজেলার তপশীডাঙ্গা থেকে তিনদিন আগে শিশুর পরিবার যশোর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালের শিশু ওয়ার্ডে ভর্তি করেন। সদর উপজেলার বাহাদুরপুর পূর্বপাড়া গ্রামের একরাম হোসেনের চার বছর বয়সী শিশু কন্যা তাসলিমা শ্বাসকষ্টের সমস্যা নিয়ে ২দিন আগে হাসপাতালে ভর্তি হন।
একইভাবে ঠন্ডাজনিত রোগে আক্রান্ত ঝিনাইদহ কালীগঞ্জ উপজেলা থেকে ৭ বছরের শিশু তানিয়াকে উন্নত চিকিৎসার জন্য এ হাসপাতালে ভর্তি করেন তার বাবা-মা। হাসপাতালের ৪র্থ তলা শিশু ওয়ার্ড শিশু রোগীতে পরিপূর্ণ। বর্তমানে যারা ভর্তি আছেন তাদের বেশিরভাগই ঠান্ডাজনিত বিভিন্ন রোগে ভুগছে। শীতের প্রকোপে হাসপাতালে ঠান্ডাজনিত নানা রোগে আক্রান্ত হচ্ছে নবজাতক ও শিশু রোগীর সংখ্যা বাড়ছে।
হাসপাতালে শিশু ওয়ার্ডে গিয়ে দেখা যায়, ২০টি বেডের বিপরীতে বর্তমানে রোগী ভর্তি আছে ৫৫ জন। এর মধ্যে ১২জন শিশু নিউমোনিয়া এবং ৭জন শিশু নিওনেটাল বøকে ও বাকি ৩৬ জন সর্দি-কাশি, ব্রোণক্রাটিস এজমাসহ বিভিন্ন শীতকালীন রোগে আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসা নিচ্ছেন। শিশুদের পাশা-পাশি বয়স্করাও ঠান্ডাজনিত রোগে আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসা নিচ্ছেন।
এদিকে শিশু ওয়ার্ডের পরিসংখ্যান অনুযায়ী আক্রান্তদের মধ্যে শূন্য থেকে ৫ বছরের বয়সী শিশু এবং ৫০উর্ধ্ব বয়স্ক মানুষের সংখ্যাই বেশি। এছাড়া শিশু ওয়ার্ডে পাশাপাশি হাসপাতালের ডায়রিয়া ওয়ার্ডেও ভর্তি রোগীরা ক্লোল্ড ডায়রিয়ার চিকিৎসা নিচ্ছেন।
শিশু ওয়ার্ডের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক আব্দুস সামাদ জানান, হঠাৎ করে যশোরে শীতের প্রকোপ বেড়ে যাওয়ার কারনে হাসপাতালে ঠান্ডাজনিত নানা রোগে আক্রান্ত হচ্ছে নবজাতক ও শিশুরা। তাই অভিভাবকদের জন্য পরামর্শ শিশুদের হালকা গরম পানি দিয়ে শরীর মুছিয়ে দেন ও পুষ্টিকর তরল জাতীয় খাবার খাওয়ান।
হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডাক্তার পার্থ প্রতিম চক্রবর্তী বলেন, শীত বাড়ার সাথে সাথে হাসপাতালের ভর্তি রোগীর দ্বিগুণ হয়ে গেছে। বিভিন্ন বয়সের রোগী প্রতিদিন আউটডোরে চিকিৎসা নিচ্ছেন।
হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডাক্তার হারুন অর রশিদ জানান, হাসপাতালের ধারণ ক্ষমতার বেশি রোগী সেবা দিতে বাধ্য হচ্ছি। এর মধ্যে শীতে রোগী বেড়ে যাওয়ার কারনে সেবা দিতে গিয়ে হিমসিম খাচ্ছেন চিকিৎসক ও সেবিকারা। তারপরও সুষ্ঠভাবে সেবা প্রদান করে যাচ্ছেন ওয়ার্ডে কর্তব্যরতরা। তিনি আরও জানান, এ সময় ঠান্ডাজনিত রোগ বেড়ে যায়। তাই অভিভাবকদের সতর্ক থাকতে হবে। প্রয়োজনে প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা নিতে হবে।