ডা.এম.এ.মান্নান
নাগরপুর(টাংগাইল)সংবাদদাতা:
সারাদেশের ন্যায় টাঙ্গাইলের নাগরপুরেও ঘন কুয়াশা ও কনকনে শীতে জনজীবন বিপর্যস্ত এবং জনজীবন অনেকটা স্থবির হয়ে পড়েছে ফলে চরম দুর্ভোগে পড়েছে শিশু ও বৃদ্ধরা। বাড়ছে শীতজনিত রোগ।শীতের কারণে অনেকেই কাজে যেতে পারছে না। হাসপাতালে বাড়ছে শীতজনিত রোগীর সংখ্যা।
বৃহস্পতিবার(১১ জানুয়ারী)সকালে নাগরপুরের বিভিন্ন এলাকা ও বাজার ঘুরে দেখা যায়,সমগ্র উপজেলা জুড়ে বইছে শৈত্যপ্রবাহ, ঘন কুয়াশার চাদরে ঢাকা পড়েছে জনপদ। বিভিন্ন স্থানে ও গ্রামে আগুন জ্বালিয়ে শীত নিবারণ করছেন অনেকেই। তীব্র শীত উপেক্ষা করে জীবিকার তাগিদে খুব সকালে কাজের সন্ধানে রাস্তায় বের হচ্ছেন খেটে খাওয়া অনেকেই।এদিকে কুয়াশা কারণে দিনের বেলাতেও সড়কে হেডলাইট জ্বালিয়ে চলাচল করছে যানবাহন।
নাগরপুর বাজারের এক রিক্সা চালক বলেন,হিমেল হাওয়ায় রিক্সা চালানোই কঠিন হয়ে পড়েছে। তীব্র শীতের কারণে অনেকেই বাসা থেকে বের হচ্ছে না। এ জন্য আমাদের আয় অনেকটা কমে গেছে।
উপজেলার গয়হাটা ইউনিয়নের কৃষক আব্দুল কাদের বলেন, তীব্র শীতের কারণে আমরা জমিতে যেতে পারছি না ফলে আমাদের আয় রোজগার কমে হচ্ছে।
নাগরপুর বাজারের ৬০ বছরের এক পথচারী বলেন-এবার শীত মনে হচ্ছে অনেক বেশী। গরম কাপড় পড়েও শীত নিবারণ করা যাচ্ছে না।
ভ্রাম্যমাণ গরম কাপড় বিক্রেতা মো.বাবুল শেখ বলেন,তীব্র বাতাস আর শীত পড়ায় প্রচুর গরম কাপড় বিক্রি হচ্ছে।
গরম কাপড় কিনতে আসা এক স্কুল শিক্ষক তাসলিমা আক্তার মুন্নী বলেন,নতুন আর পুরাতন গরম কাপড়ের দাম তুলনামূলক গতবারের চেয়ে অনেক বেশী মনে হচ্ছে তারপরও গরম কাপড় কিনতে হবে।
স্কুল ছাত্র নাহিদ বলেন, বেশী শীত পড়ায় অনেক কষ্ট করে নিয়মিত স্কুলে যাচ্ছি।
নাগরপুর মহিলা কলেজ এ-র অধ্যক্ষ মো.আনিসুর রহমান জানান,তীব্র্র শীত ও ঘন কুয়াশার কারনে গড়ে ২০% শিক্ষার্থী ক্লাশ করার জন্য আসছে আর ৮০% শিক্ষার্থী অনুপস্থিত।
এদিকে ব্যাপক শীত বৃদ্ধি পাওয়ায় গ্রামের অসচ্ছল ও ছিন্নমূল জনবাসীগণের মাঝে সরকার এর পক্ষে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী কর্তৃক শীতের কম্বল বিতরণ করতে দেখা যাচ্ছে এছাড়াও বিভিন্ন রাজনৈতিক দল,সামাজিক ও সেচ্ছাসেবী সংগঠনগুলো শীতার্তদের মাঝে শীতবস্ত্র বিতরণের কাজ চলমান রাখছেন।
এ ব্যাপারে নাগরপুর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা.মো.রোকনুজ্জামান খান জানান, তীব্র শীতে নিউমোনিয়া, ৰংকিওলাইটিস, আ্যজমা, সিওপিডি, ভাইরাল ফ্লু, ডায়রিয়া রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। গড়ে এসব রোগে আউটডোরে প্রতিদিন ২৫০ জন রোগী চিকিৎসা নিচ্ছে এবং ইনডোরে গড়ে ৩০/৩৫ জন ভর্তি হচ্ছে। ঠান্ডাজনিত রোগে বেশী আক্রান্ত হচ্ছে শিশু ও বয়স্করা।এছাড়াও স্টোকের রোগীরাও বেশী আসছে।
তিনি আরও জানান,ঠান্ডাজনিত রোগ প্রতিরোধের জন্য চিকিৎসকের পরামর্শেে পাশাপাশি নিয়মিত পুষ্টিকর ও ভিটামিন সি সমৃদ্ধ খাবার খেতে হবে, পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন থাকতে হবে এছাড়াও পর্যাপ্ত শীতের পোশাক পরিধান করতে হবে এবং বয়স্ক ও শিশুদের বাহিরে বেশী বের হওয়া যাবে না।
আবহাওয়া অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়,শীত আরও বাড়তে পারে যা ফেব্রুয়ারি মাসের মাঝামাঝি পর্যন্ত থাকতে পারে। এর মধ্যে শৈত্যপ্রবাহ আসতে পারে।