আবু বকর ছিদ্দিক রনি, শার্শা প্রতিনিধিঃ
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে কঠোর নিরাপত্তা বলয়ের মধ্যে থাকবে যশোরের ছয় আসনের ৮২৫টি ভোটকেন্দ্র। এসব কেন্দ্রে নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তা নিশ্চিতে সব ধরনের প্রস্তুতি নিয়েছে পুলিশ প্রশাসন। কেন্দ্রগুলোয় সেনাবাহিনী, পুলিশ, আনসার, বিজিবি, ম্যাজিস্ট্রেট, এসবি ও ডিবির সদস্যরা দায়িত্ব পালন করবেন। আইনশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণে সবমিলিয়ে ১৬ হাজার সদস্য নিয়োজিত থাকবেন।
নির্ধারিত সংখ্যক পুলিশ সদস্যরা ভোটকেন্দ্রে ‘বডি ক্যামেরা’ ব্যবহার করবেন। এবার ঝুঁকিপূর্ণ কেন্দ্র (পুলিশের ভাষায় গুরুত্বপূর্ণ) চিহ্নিত করা হয়েছে ২৭৫টি।
প্রায় তিন ঘন্টাব্যাপী চলা ব্রিফিংয়ে সহকারী পুলিশ সুপার, ইন্সপেক্টর পদমর্যাদার কর্মকর্তাসহ পুলিশ ও আনসার বাহিনীর সদস্যরা অংশ নেন। এ ছাড়া নির্বাচনী দায়িত্বে থাকা সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তারা এ সময় উপস্থিত ছিলেন। ভোটারদের শান্তিপূর্ণভাবে ভোটদানের ব্যবস্থা করাসহ শতভাগ নির্বাচনী সরঞ্জাম ব্যবহার ও ভোটকেন্দ্রের নিরাপত্তা ব্যবস্থা রক্ষার নির্দেশনা দেয়া হয় ব্রিফিংয়ে।
ব্রিফিংয়ে নির্বাচনী দায়িত্ব পালনকালে প্রার্থী ও তার সমর্থকদের সাথে দূরত্ব বজায় রাখা ও ভোটের দিন দুপুরে শুকনা খাবার খাওয়ার পরামর্শ দেয়া হয়। নির্বাচনী দায়িত্ব পালনকারীদের প্রত্যেককে মাথাপিছু এক হাজার টাকা করে বরাদ্দ দেয়া হয়েছে বলে জানানো হয় এ সময়।
ব্রিফিং শেষে পুলিশ সুপার বলেন, ঝুঁকিপূর্ণ কেন্দ্র চিহ্নিত করা হলেও আমরা সেগুলো ঝুঁকিপূর্ণ বলে মনে করছি না। সেগুলোকে গুরুত্বপূর্ণ হিসেবে দেখা হচ্ছে। নির্বাচনকে ঘিরে পুরো জেলাকে নিরাপত্তার নিশ্ছিদ্র চাদরে ঢেকে ফেলা হবে।
তিনি বলেন, নির্বাচনে নিরাপত্তা দিতে ২ হাজার ৫’শ পুলিশ সদস্য, ১০ হাজার আনসার সদস্য, ৪৫০ বিজিবি সদস্য, র্যাব সদস্য, সেনা সদস্য, একাধিক এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট, গোয়েন্দা সংস্থাসহ সব মিলিয়ে ১৬ হাজার সদস্য নিয়োজিত থাকবেন। প্রতিটি কেন্দ্রে ১৫ থেকে ১৬ জন করে সদস্য থাকবেন। স্টাইকিং ফোর্স, রিজার্ভ ফোর্স ও একাধিক মোবাইল টিম থাকবে। সাদা পোশাকে গোয়েন্দা বাহিনীর সদস্যরা উপস্থিত থাকবেন।
পুলিশ সুপার আরো বলেন, পুলিশের একজন পরিদর্শক বা উপপরিদর্শকের নেতৃত্বে ৬ জন সদস্য নিয়ে মোবাইল টিম গঠন করা হয়েছে। প্রত্যেক টিম ৫টি কেন্দ্রের দায়িত্ব থাকবে। ১০টি কেন্দ্র নিয়ে একটি স্ট্রাইকিং ফোর্স থাকবে। ডিবি ও আনসারের স্পেশাল স্টাইকি ফোর্স থাকবে। পুলিশের ২৩টি স্ট্রাইকিং ফোর্স থাকবে। স্পেশাল স্টাইকিং থাকবে আরো ৮টি। ১৩৩টি মোবাইল টিম থাকবে ‘নরমাল’ ভাবে। মোট ২০১টি স্ট্রাইকিং ফোর্স থাকবে। কোথায় কোথায় ঝামেলা হতে পারে; তা আমরা চিহ্নিত করেছি। এক কথায় নিরাপত্তার চাদরে ঢাকা থাকবে পুরো যশোর।
তিনি আরো বলেছেন, দেশের একটি বড় দল নির্বাচন না করার বা বয়কটের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তারাও যদি কোনো নাশকতার সৃষ্টি করে, ভোট কেন্দ্র দখল বা পোড়ানোর ও নির্বাচনী পরিবেশ নষ্ট করার চেষ্টা করে, কোন ভোটারকে বাঁধা দেয়ার চেষ্টা চালায় তাহলে কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।
তিনি বলেন, যেসব দুষ্টু প্রকৃতির লোক ভোটকেন্দ্র দখল, জাল ভোট প্রদানসহ নানা অপতৎপরতার চিন্তা করছে তাদের কোন প্রকার ছাড় দেয়া হবে না।
নির্বাচনে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নিয়োজিত সদস্যদের পুলিশ লাইনে শুক্রবার সকালে ব্রিফিং শেষে সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান পুলিশ সুপার প্রলয় কুমার জোয়ারদার। ব্রিফিংয়ে পিবিআই যশোরের পুলিশ সুপার রেশমা শারমিন, সিনিয়র জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা আনিসুর রহমান, জেলা আনসার কমান্ডেন্ট সঞ্জয় সাহা, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার বেলাল হোসাইনসহ ঊর্ধ্বতন পুলিশ কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
আপনি যা যা মিস করেছেন
Add A Comment