আমিনুল হক, সুনামগঞ্জ
দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে জন্মস্থাানের মাটিকে ভালোবেসে জীবন সায়াহ্নে এসে এ জীবন মানুষের সেবায় উৎসর্গ করতে চান সুনামগঞ্জ-৪ আসনের মনোনীত প্রার্থী ড. মোহাম্মদ সাদিক। অন্যদিকে জাতীয় পার্টির মনোনীত প্রার্থী সাধারণ মানুষ যাহাতে শান্তিতে বসবাস করতে পারে, কোন প্রকার অপশক্তি সিন্ডকেটের কাছে মানুষ জিম্মি না হয় সেই লক্ষে কাজ করছেন বলে তিনি অঙ্গিকার করছেন। ড. সাদিক তিনি তার আঞ্চলিকতাকে লালন করে মানুষের মন আকৃষ্ট করার চেষ্টা করছেন। সুনামগঞ্জ-৪ আসনে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী ড. মোহাম্মদ সাদিক। নির্বাচন করতে এসে সুনামগঞ্জ সদর ও বিশ্বম্ভরপুর উপজেলা ঘুরে বঞ্চনা ও অবহেলার চিত্র দেখে ব্যাথিত। তার নির্বাচনী প্রতিটি সভায় মন্ত্রমুগ্ধ বক্তব্য শোনার জন্য মানুষের ভিড় পরিলক্ষিত হয়। তিনি বলেন, আমি এবার আশাউড়া থেকে মিয়ারচর, রঙ্গারচর থেকে গৌরারংসহ সুনামগঞ্জের উত্তর, পশ্চিমে ছুটে গেছি। কোন কোন জায়গায় গিয়ে আমি আপনাদের বঞ্চনা ও অবহেলার ইতিহাস দেখে সত্যি ব্যথিত হয়েছি। সামান্য চাকুরি করেছি। যেখানে সুনামগঞ্জ-৪ আসনের মানুষের একমাত্র রাস্তা, সেতুর জন্য বছরের পর বছর অপেক্ষমান মানুষ। আমি নির্বাচিত হলে প্রথমেই সেতুর কাজ করবো। পরে পৈন্দা নদীতে সেতু, সাতগাঁওয়ের রাস্তা, মিয়ারচরের বাঁধ, সুনামগঞ্জ শহররক্ষা বাঁধ, সুনামগঞ্জ শহরকে সম্প্রসারণ করে ডলুরা পর্যন্ত নিয়ে যাওয়ার কাজ হবে । আমাদের এলাকার ধারারগাঁও সেতু হয় না, পৈন্দা নদীতে, ফতেপুরে, বিশ্বম্ভরপুরে সেতু হয় না। সেতুর অভাবে এই এলাকার মানুষ ছিটমহলের মতো বসবাস করছে। সুনামগঞ্জ শহর সুরমা নদী গিলে খাওয়ার প্রসঙ্গ উল্লেখ করে তিনি বলেন, সুনামগঞ্জ শহরকে সুরমা নদী ঘ্রাস করছে। নদী শাসন না করলে শহরের অস্তিত্ব বিলীন হয়ে যাবে। তিনি বলেন, শহর রক্ষায় প্রকল্প নেওয়া না হলে জুবিলী স্কুল, লঞ্চঘাট, ডিসির বাংলো, জজের বাংলো হুমকিতে পড়বে। এমনটি হলে সুনামগঞ্জের অস্তিত্ব থাকবে না।
ড. মোহাম্মদ সাদিক নৌকা প্রতীকে সুনামগঞ্জ-৪ আসনে প্রার্থী দেওয়ার প্রসঙ্গে বলেন, ৯ মাস আগে এখানে জেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলন হয়েছিল। নবনির্বাচিত নেতৃবৃন্দসহ সর্বস্তরের নেতৃবৃন্দ দাবি তুলেছিলেন এই আসনে নৌকার প্রার্থী দেওয়ার জন্য। নেত্রী সুনামগঞ্জের নেতাদের কথা রেখেছেন। নেত্রীর কাছ থেকে প্রতীক এনে দিয়েছেন। তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ হলো কথা রাখার, জনগণের কথা রাখে। তাই আগামী ৭ জানুয়ারি সুনামগঞ্জের উন্নয়নবঞ্চিত মানুষের উন্নয়নের জন্য নৌকা প্রতীকে ভোট দিবেন।
নির্বাচিত হলে অবহেলিত সুনামগঞ্জকে উন্নয়ন অভিযাত্রার ট্রেনের সঙ্গে সুনামগঞ্জের ট্রেনকে লাগিয়ে দেওয়ার অঙ্গীকার করে তিনি বলেন, ডাক্তারের জন্য রোগী মরে, প্রকৌশলী ভুল করলে দালান ভেঙ্গে পড়ে, ড্রাইভার ভুল করলে গাড়ি এক্সিডেন্ট করে। বিশ্বম্ভরপুর-সুনামগঞ্জ সদরের ৩ লাখ ৪২ হাজার ভোটার। সুনামগঞ্জ-বিশ্বম্ভরপুরকে বঞ্চিত করে, জনগণের ভাগ্যেও উন্নয়নে কাজ করবো।
তিনি বলেন, সারা পৃথিবী তাকিয়ে আছে আমাদের ম্যাজিক লিডার শেখ হাসিনার দিকে। তিনি বলেন, আমি লিডার হতে আসি নাই। আমি আপনাদের ওয়ার্কার হয়ে এসেছি। নেত্রী আমাকে ওয়ার্কারের স্বীকৃতি দিয়েছেন। এখন আপনারা আমাকে ৫ বছরের জন্য ওয়ার্কার করলে আমি কথা দিচ্ছি আপনাদের সুখে দুখে আনন্দ বেদনায়, দুঃখের সারথী হয়ে কাজ করবো।
তিনি আরো বলেন, আপনারা যাতে নৌকা প্রতীক না রাখতে পারেন গত মাসে গুজব ছড়িয়ে দেওয়া হয়েছিল নৌকা থাকবে না। শত গুজবের মধ্যেও শেখ হাসিনা তার সিদ্ধান্ত বহাল রেখেছেন আপনাদের জন্য। তিনি বলেন, আগামী ৭ জানুয়ারি যদি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হই আমার ঘরের দরজা ও মনের দরজাও উম্মুক্ত থাকবে।
এদিকে সুনামগঞ্জ-৪ আসনে জাতীয় পাটির মনোনীত প্রার্থী পীর ফজলুর রহমান মিসবাহ নির্বাচনী সভায় বলেন আমি দায়িত্বে থাকাকালীন সময়ে এলাকার মানুষের জন্য কাজ করেছি। মানুষের আস্থাা ও সমর্থন অনেকগুণ বৃদ্ধি পেয়েছে। এতে করে নির্বাচনে এই আসনে লাঙলের গণজোয়ার বইছে। ভোটারদের যে ভালোবাসা ও সমর্থন রয়েছে, এখানে নির্বাচনে বিজয়ের ব্যাপারে আমি শতভাগ আশাবাদী। পীর মিসবাহ আরোও বলেন, অনেক কে ভয় দেখানো হচ্ছে বলছেন, ভোট দিলেও পাস, না দিলেও পাস করবে তারা। ভোটকেন্দ্রে মানুষকে যেতে বাধা দিয়ে নিজেরা ভোট দিয়ে বিজয় নিশ্চিত করতে চায়। এরা ভোটারদের ভয় পায়। ভোটারদের ভোট কেন্দ্রে যেতে কেউ কোন বাধা দিলে আমাকে জানাবেন, নির্বাচন কমিশনের মাধ্যমে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থাা নেওয়া হবে। তিনি বলেন, আমাদের সংবিধান বলে দেশের মালিক হচ্ছে জনগণ। জনগণের অধিকার রয়েছ পছন্দের দল করার, তার মত প্রকাশের স্বাধীনতাও সংবিধানে দেওয়া হয়েছে। কিন্তু মিথ্যা মামলা হামলা দিয়ে হয়ানি করার অধিকার রাষ্ট্র কাউকে দেয়নি। তিনি বলেন, সাধারণ মানুষের প্রতীক হচ্ছে লাঙল। আজ লাঙল প্রতীকের বিরুদ্ধে বিভিন্ন জায়গায় বৈঠক হয়। বৈঠকে তারা সংসদ সদস্য হওয়ার আগেই কাউকে মন্ত্রী বানিযে দিচ্ছে। ৭ তারিখে আপনারা ভোটকেন্দ্র গিয়ে লাঙলকে বিজয়ী করলে তাদের মন্ত্রণালয় গঠনের আশা শেষ হয়ে যাবে। তিনি বলেন, আজকে দেশে প্রকৃত আলেমরা পর্যন্ত কথা বলতে পারে না উল্লেখ করে তিনি বলেন, মসজিদে মাহফিল কমিটি পছন্দ মতো বক্তা আনতে পারে না। আপনারা ঠিক করে দেন কোন বক্তা আনা যাবে, আর কোন বক্তা আনা যাবে না। এখন মানুষের কথা বলার স্বাধীনতা নেই।