জোবায়ের হোসেন , ফেনী প্রতিনিধি:
প্রেমিক এড়িয়ে চলায় অভিমান করে নিজের শরীরে আগুন দেয়া ফেনীর সেই কলেজ ছাত্রী মাশকুরা আক্তার মুমু (১৯) মারা গেছেন। ৩০ ডিসেম্বর, শনিবার দুপুরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ঢাকা শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে তিনি মারা গেছেন। মুমুর পিতা আবদুল মালেক এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
এর আগে সোমবার (২৫ ডিসেম্বর) দুপুরে ফেনী সদর উপজেলার পাঁচগাছিয়া ইউনিয়নের লক্ষ্মীয়ারা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান ফটকে এ ঘটনা ঘটে। মাশকুরা আক্তার মুমু ফেনী ন্যাশনাল কলেজের একাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থী। তিনি পরিবারের সঙ্গে শহরের পাঠান বাড়ি সড়কে থাকেন। তাদের গ্রামের বাড়ি জামালপুর জেলার সদর উপজেলার রামনগর এলাকায়।
মুমুর পিতা আবদুল মালেক বলেন, গত বছরের অক্টোবর-নভেম্বর মাসে মুমুর বিয়ের জন্য একটি প্রস্তাব আসে। এতে সে অসম্মতি জানিয়ে নাহিদ নামে এক সহপাঠীর সঙ্গে সম্পর্কের কথা জানান। তখন থেকে আমি আর তাকে বিয়ের জন্য চাপ দেয়নি। পরে গত বছরের নভেম্বর মাসে নাহিদের ভাই লক্ষ্মীয়ারা বাজারে আমার সঙ্গে এসব নিয়ে কথা বলে। তার ভাই বলে নাহিদকে প্রবাসে পাঠিয়ে দেবে এবং প্রবাস থেকে ফেরা পর্যন্ত আমার মেয়ে যেন তার জন্য অপেক্ষা করে। এরপর এ বিষয়ে বিগত একবছরে আর কোন কথা বলিনি। পরে নাহিদ তাকে প্রত্যাখ্যান করে। যেখান থেকে অভিমানে মুমু এ ধরনের ঘটনা ঘটিয়েছে বলে ধারণা করছি।
স্থানীয় সূত্রে জানায়, নাহিদ নামে এক ফল ব্যবসায়ীর সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক ছিল মুমুর। তাদের মধ্যে কিছুদিন ধরে টানাপোড়েন চলছিল। সোমবার সকালে ওই এলাকায় যান মুমু। কিছুক্ষণ পর লক্ষ্মীয়ারা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান ফটকের সামনে নিজের শরীরে আগুন ধরিয়ে দেয় সে।
হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় দগ্ধ মুমু সাংবাদিকদের কাছে নিজের শরীরে নিজে আগুন দিয়েছেন বলে জানান।
এদিকে এ ঘটনার পর থেকে পলাতক রয়েছে মুমুর প্রেমিক নাহিদ। নাহিদের প্রেমের সম্পর্কের কথা জানতেন না দাবি করে তার ভাই নাসির উদ্দিন সোহেল বলেন, সোমবার এ ঘটনার পরই আমাদের পরিবার এ সম্পর্কের কথা জেনেছি। তাদের প্রেমের সম্পর্ক নিয়ে দুই পরিবারের পারিবারিক কথাবার্তার যে কথা ছড়িয়ে পড়েছে তা সত্য না। এ সময় নাহিদ ও তার বাবার সাথে যোগাযোগ করতে চাইলে তথ্য দিতে অপারগতা প্রকাশ করেন সোহেল।
ফেনী সদর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার থোয়াই অং প্রু মারমা দগ্ধ ছাত্রীর মৃত্যুর তথ্য নিশ্চিত করে জানান, ঘটনার রহস্য উদঘাটনে পুলিশ কাজ করছে।