আমিনুল হক, সুনামগঞ্জ
জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে সুনামগঞ্জ-৫ (ছাতক-দোয়ারাবাজার) আসনে বিরামহীন ভাবে প্রচার-প্রচারণায় আওয়ামী লীগের কর্মী-সমর্থকরা প্রকাশ্যে দুই ভাগে বিভক্ত হওয়ায় নৌকার মনোনীত প্রার্থী মুহিবুর রহমান মানিকের বিজয়ের পথে আওয়ামীলীগে তার কর্মী সমর্থকরা নির্বাচনী মাঠ চষে বেড়াচ্ছেন। মাঠে সরব রযেছেন নেতা-কর্মীরা। বার বার নির্বাচিত এ জনপ্রতিনিদির জন্য তারা মরিয়া হযে উঠেছেন। অন্যদিকে সুনামগঞ্জ জেলা আওয়ামীলীগের যুগ্ম সাধারন সম্পাদক স্বতন্ত্র প্রার্থী শামিম আহমদ। ইতোমধ্যে মাঠ দখলের চেষ্টায় মরিয়া হয়ে উঠেছেন প্রার্থীরা। দুই প্রার্থীর নেতা-কর্মীরা একে অন্যের সম্পর্কে বিষোদগার করছেন। নির্বাচনী মাঠে এই দুই গ্রুপের মধ্যে সংঘাত সৃষ্টির আশংঙ্কা করছেন সাধারণ ভোটাররা। সুনামগঞ্জ জেলার মধ্যে সব চেয়ে বেশী ৯জন প্রার্থী এই আসনে হলেও প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে আওয়ামী লীগ মনোনীত (নৌকা) বনাম আওয়ামী লীগের স্বতন্ত্র প্রার্থী ঈগলের সঙ্গেই। বাকি ৭ প্রার্থী নিয়ম রক্ষায় শরিক হয়েছেন নির্বাচনে।
স্থানীয় ভোটারদের সাথে কথা বলে জানা যায়, বাকী ৭প্রার্থীদের ভোটারদের কেহ চিনেই না। ভোট কোথায় দিবে? ভোটাররা আরও জানান যে সব নতুন প্রার্থীরা এসেছেন টাকা খরচ করছেন এই টাকা গুলো গরীবদের দিলে ভালো হতো অন্তত টাকা কথা বলতো। নিয়ম রক্ষায় বাকী প্রার্থীরা হলেন, জাতীয় পার্টির প্রার্থী এড. নাজমুল হুদা হিমেল (লাঙ্গল), বাংলাদেশ সুপ্রিম পার্টি (বিএসপি)র প্রার্থী আবু সালেহ (একতারা), ন্যাশনাল পিপলস পার্টি (এনপিপি)’র প্রার্থী আজিজুল হক (টেলিভিশন), বাংলাদেশ ন্যাশনালিষ্ট পার্টি (বিএনএফ)র প্রার্থী আশরাফ হোসেন (আম), গণফোরামের প্রার্থী আইয়ুব কমর আলী (উদীয়মান সূর্য্য), কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের প্রার্থী হাজী আব্দুল জলিল (গামছা) ও জাতীয় পার্টি (জেপি): এডভোকেট মনির উদ্দিন (বাইসাইকেল) প্রতীকে প্রতিদ্বন্দিতা করবেন। তৃণমূল আওয়ামী লীগ নেতারা জানিয়েছেন, দলীয় কোন্দলের কারণে প্রায় ৩যুগ ধরে ঐক্যবদ্ধভাবে দলীয় কর্মসূচি পালন করতে পারছে না উপজেলা আওয়ামী লীগ। স্থানীয় নির্বাচনেও এই দুই গ্রুপের মধ্যেই প্রতিদ্বদ্বিতা চলে আসছে দীর্ঘদিন ধরে। উভয় পক্ষের মধ্যে হামলা, সংঘর্ষে জড়িয়েছেন বহুবার। ৩লাখ ৪হাজার ভোটার ছাতক উপজেলায় একটি পৌরসভা ও ১৩ ইউনিয়নের জন প্রতিনিধিরাও দু’পক্ষে বিভক্ত থাকেন হউক সে জেলা পরিষদ, উপজেলা পরিষদ নির্বাচন কিংবা জাতীয় সংসদ নির্বাচন। ছাতকে আওয়ামী লীগের নির্বাচিত ১১টি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানের মধ্যে মানিকের পক্ষে রয়েছেন ৮ জন এবং শামীমের পক্ষে ৩ জন। ছাতক উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ফজলুর রহমান আছেন মুহিবুর রহমান মানিকের পক্ষে। তবে শামীম আহমদ চৌধুরীর পক্ষে বড় ভাই ছাতক পৌরসভার বর্তমান মেয়র আবুল কালাম চৌধুরী, সাবেক উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও এমপি মানিকের বোনজামাই অলিউর রহমান চৌধুরী বকুল ও যুক্তরাজ্য আওয়ামী লীগ নেতা আওলাদ আলী রেজাসহ বেশ কয়েকজন প্রভাবশালী নেতা প্রকাশ্যে প্রচারণায় রয়েছেন। এদিকে অনেক নেতা কর্মি প্রকাশ্যে মুহিবুর রহমান মানিকের পক্ষে মিছিল মিটিং এ রয়েছেন সেই তারাও ভেতরে ভেতরে শামীম চৌধুরীর সঙ্গে যোগাযোগ রাখছে। সুষ্ঠু ভোট হলে শামীম চৌধুরীই জয়ী হবেন এই ভেবে। ভাতগাঁও ইউনিয়নের নৌকার সমর্থক হোসেন মিয়া জানান, মানিক ছাতক দোয়ারায় জনপ্রিয়তা ব্যাপক। উন্নয়নের কিছু গাড়তি থাকায় স্বতন্ত্র প্রার্থী সেই সুযোগটা নিচ্ছে। ছাতক পৌর শহরের বাসিন্দা শামিম চৌধুরীর সমর্থক গ্লোবেল তালুকদার জানান, আমাদের অবস্থান সবদিকে ভালো। মানিক সাহেব ছাতক দোয়ারায় দৃশ্যমান কোন উন্নয়ন করেন নাই। তাই এবার মানুষ পরিবর্তন চায়। জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সম্পাদক ও স্বতন্ত্র প্রার্থী শামীম চৌধুরী বলেন, মানুষ পরিবর্তন চায় এবার মানুষ স্বচ্চ ভোটের মাধ্যমে সেই পরিবর্তন করবে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবার স্বতস্ত্র প্রার্থীদের স্বাধীনতা দিয়েছেন। পুলিশ প্রশাসন এখনও নিরপেক্ষ আছে। জয় আমাদের হবেই। সুনামগঞ্জ জেলা আওয়ামীলীগের সিনিয়র সহসভাপতি নৌকার প্রার্থী মুহিবুর রহমান মানিক বলেন, ছাতক দোয়ারার মানুষ সর্বদা সত্যর পক্ষে নৌকার বিজয় এবারও হবে। তিনি বলেন প্রধানমন্ত্রী ছাতক দোয়ারা মানুষের ভালোবাসা দেখে এবারও আমার হাতে নৌকা তুলে দিয়েছেন। ছাতক দোয়ারাবাসী নৌকার অবমূল্যায়ন করবে না।