মো: আরিফুল ইসলাম রনক, নওগাঁ জেলা প্রতিনিধি:
নওগাঁর নিয়ামতপুরের তরুন সাগর হোসেন (১৮) কক্সবাজার সমুদ্রসৈকতের দরিয়ানগর সৈকত এলাকা থেকে ভাসমান অবস্থায় উদ্ধার করা হয়েছে।
বুধবার (১৩ ডিসেম্বর)সকালে দরিয়ানগর পয়েন্টে কক্সবাজার-টেকনাফ মেরিন ড্রাইভ এলাকা থেকে লাশটি উদ্ধার করা হয়। কক্সবাজার সদর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) কায়সার হামিদ নিহতের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
নিহত তরুণ নিয়ামতপুর উপজেলার বাহাদুরপুর ইউনিয়নের ছাতমা গ্রামের আলম মণ্ডলের ছেলে।
পরিবার সূত্রে জানা যায়, সাগর রাজশাহী শাহ মখদুম কলেজের বিজ্ঞান বিভাগে এইচএসসি দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র ছিলেন। গত ৪ ডিসেম্বর তিনি গ্রামের বাড়ি এসেছিলেন। তবে কীভাবে কার সঙ্গে কক্সবাজারে গিয়েছিলেন, তা পরিবারের কেউ জানাতে পারেননি। পরিবারে বাবা-মাসহ তাঁর পাঁচ বছরের বোন রয়েছে। সাগরের লাশ নেওয়ার উদ্দেশ্যে কক্সবাজারে রওনা দিয়েছেন তাঁর বাবাসহ পরিবারের অন্য সদস্যরা।
সাগরের মামা হেলাল উদ্দিন বলেন, গতকাল বুধবার দুপুরে ফেসবুকে ভিডিও দেখে তিনি ভাগনে সাগরকে চিনতে পারেন। বাড়ির কাউকে কিছু না জানিয়ে কার সঙ্গে তিনি কক্সবাজারে গেলেন, তা নিয়েও ধোঁয়াশা রয়ে গেছে। ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত হওয়া প্রয়োজন বলে মনে করেন তিনি।
নিহত সাগরের মা দোলেনা বেগম বলেন, অনেক কষ্ট করে মানুষের কাজ করে ছেলেটিকে পড়াশোনা করাচ্ছিলাম। ছেলের পড়াশোনায় কোনো সমস্যা যেন না হয়, সে জন্য এনজিও ও ব্যাংক থেকে লোন নিয়ে প্রতি মাসে টাকা পাঠিয়ে দিতাম। পড়াশোনায় ভালো হওয়ায় প্রতিবেশীরাও সহযোগিতা করত। আমার ছেলের স্বপ্ন ছিল ডাক্তার হওয়ার। তার সেই স্বপ্ন আর পূরণ হলো না।’ বলেই মাটিতে লুটিয়ে পড়েন তিনি।
কান্না জরিত কন্ঠে দোলেনা বেগম আরও বলেন, ‘আমার ছেলেকে সেখানে কে নিয়ে গেল, কীভাবে নিয়ে গেল, তার সঠিক তদন্ত হওয়া প্রয়োজন। আমার সোনার মানিক তো আর ফিরে আসবে না।’
কক্সবাজার সদর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) কায়সার হামিদের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, পরিবারের সদস্যরা লাশ নেওয়ার জন্য রওনা দিয়েছেন বলে আমরা জানতে পেরেছি। তবে এখানে কি ঘটেছিল তা তদন্ত সাপেক্ষ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। আইনি প্রক্রিয়া শেষে পরিবারের কাছে লাশ হস্তান্তর করা হবে।