মনিরুজ্জামান খান গাইবান্ধা: গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জে চাষ হচ্ছে পাহাড়ের সুমিষ্ট রসালো কমলা। আব্দুল হালিম নামের এই কমলা চাষি যুবক বিদেশে যাওয়ার প্রস্তুতি নিয়ে প্রতারণার শিকার হয়ে শুরু করেন কমলা চাষ। আর এই কমলা চাষ তার বেকারত্বের চাকা ঘুরিয়ে পেয়েছেন সফলতা। ভাগ্য বদলে দিয়েছে কমলা।
গত দুই বছরে তিনি দুইশ’ কমলা গাছ থেকে আয় করেছেন প্রায় ৬ লাখ টাকা।
গোবিন্দগঞ্জ উপজেলা সদর থেকে ১৫ কিলোমিটার দূরে শাখাহার ইউনিয়নের বাল্যা গ্রাম। এই গ্রামের আব্দুস সামাদের ছেলে আব্দুল হালিম (২৭) বেকারত্বের কারণে অর্থ কষ্টে পড়ে অনেকের পরামর্শে বিদেশ যাওয়ার প্রস্তুতি নেন। কিন্তু ভিসার ক্ষেত্রে প্রতারণার শিকার হওয়ায় অনেকটা হতাশ হয়ে পড়েন হালিম। সেসময় আবার বিশ্ব জুড়ে চলছিল করোনার দুর্যোগ। এরই এক পর্যায়ে তার এক বন্ধুর পরামর্শে ইউটিউবে কমলা চাষ দেখে ২০১৯ সালে নিজের পুকুর পাড়ের তিন বিঘা জমিতে শুরু করেন কমলা চাষ। সেখানে ২শ’ কমলা গাছ দিয়েই শুরু হয় তার কমলা বাগান। আর বাগানে ২০২২ সালে কমলা ধরতে শুরু করে। ২০২২ সালেই স্থানীয় ব্যবসায়ীদের কাছে প্রায় ৩ লাখ টাকার কমলা বিক্রি করেন। কমলার স্বাদ-রস মিষ্টি ও কালার তুলনামূলক ভাল হওয়ায় বিভিন্ন দিকে প্রচার
হয়ে যায় তার কমলার নাম সুনাম। এবার ২০২৩ সালের মৌসুমের শুরতেই এ পর্যন্ত প্রায় ১ লাখ টাকার কমলা বিক্রি হয়েছে। এখনও গাছে প্রায় ৩ লাখ টাকা বিক্রির মত কমলা রয়েছে। তার এই সাফল্যের কথা শুনে বিভিন্ন এলাকা থেকে প্রতিদিন তার বাগান দেখতে ভিড় করছে লোকজন। পাহাড়ি ফল হিসেবে কমলার পরিচিতি থাকলেও সমতলের এই এলাকায় চাষ হওয়ায় অনেকের মধ্যে আগ্রহ সৃষ্টি হয়েছে। তার বাগানে বারি-২, চায়না-খ্রি ও দার্জিলিং, জাতের কমলা রয়েছে। এলাকাবাসী জানান, শুরুতে তার এই কাজ তেমন ভাল না লাগলেও গাছ ভর্তি পাকা কমলা দেখে এখন বেশ ভাল লাগে। এখন মনে হয় হালিম এই এলাকার জন্য অনুকরণীয় এক আদর্শ কমলা চাষী। কমলা চাষি আব্দুল হালিম বলেন, বিদেশে না গিয়ে ইচ্ছা ও উৎসাহ পেলে দেশের মাটিতেই অনেক কিছু করা সম্ভব।আমাদের দেশের প্রধানমন্ত্রী বার বার বেকারদের উদ্দেশ্য বলেন চাকরি না খুঁজে উদ্যোক্তা হওয়ার যে নির্দেশনা দেন তা আমার বেলায় একবারেই সঠিক। তার এই উৎসাহ পেয়ে আমি উদ্যোক্তা হয়ে সফলতা পেয়েছি। আমার গ্রামের বেশ কয়েকজন মানুষের কর্মসংস্থান করে দিয়েছি। গোবিন্দগঞ্জ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সৈয়দ রেজা-ই-মাহমুদ বলেন, কমলা চাষ করে হালিম যে সফলতা দেখিয়েছে তা কৃষি বিভাগের একটি সাফল্য। আগামীতে কৃষি বিভাগ তাকে সহ আরও যারা কমলা চাষে এগিয়ে আসতে চায় বা ইচ্ছুক এরকম চাষীদের কে কৃষি বিভাগ থেকে প্রযুক্তিগত সহায়তা প্রদান করা হবে।