দ্যা মেইল বিডি / খবর সবসময়

; ;

দ্যা মেইল বিডি ডট কম

তথ্য মন্ত্রণালয় কর্তৃক নিবন্ধিত অনলাইন পত্রিকা, নিবন্ধন নং- ১১

ইমন মিয়া, সাঘাটা গাইবান্ধাঃ
মেস জীবন মানেই যেনো কিছু বাস্তবতা কে সামনে থেকে দেখে জীবনের লক্ষে ছুটে চলা। মেস জীবনটা অনেকটা পাহাড় চুড়ায় উঠার মতো যদি আপনি যদি আপনার মানসিকতা দৃঢ় থাকে তবে উঠতে পারবেন না হলে পারবেন না। যখন কেউ নিজের প্রিয় শহর প্রিয় মানুষগুলো ছেড়ে মেসে উঠে তখন হয়তোবা তার মনে হাজারওটা প্রশ্ন উঠে। সারাদিন অফিসের কাজে ব্যস্ত বা ছাত্র হলে কলেজ-প্রাইভেটে সারাদিন ব্যস্ত সময় পার করলেও এই হাজার ব্যস্ততার মাঝে মনে পড়ে তার প্রিয় সেই বাড়ির কথা, বাবা-মা ভাইবোনে কথা, কিন্তু কিছু করার নেই সে বাস্তবতা মানতে বাধ্য। তবুও সারাদিন কেটে যায় নানা ব্যস্ততায়। কিন্তু যখনই সন্ধ্যা পেরিয়ে রাত নামে আর যত রাত যায় তার মনের ভিতর একাকীত্বের পাহাড়টা যেনো বড় হতে থাকে। মনে হতে থাকে আব্বু কি করছে, আম্মু কি করছে হয়তো টিভি দেখছে, হয়তো বা ঘুমিয়ে গিয়েছে। ছোট ভাইটা হয়তো পড়া শেষে বিছানা প্রস্তুত করে ঘুমানোর আয়োজন করছে। তখন মনে হতে থাকে আমিও তো একসময় এমন সময়ে পড়াশেষে ভাইটার সাথে একসাথে ঘুমোতে যেতাম, আমিও তো একসাথে সবার সাথে বসে টিভি দেখতাম। মাঝে মাঝে মা এসে দেখতো পড়তেসি কিনা। কখনো পড়া বাদে মোবাইল হাতে দেখলে বকা দিতো। এখন কই সেই বকা, সারাক্ষণ পড়া বাদে মোবাইল নিয়ে থাকলেও কেউ আর বলে না কিরে পড়া রেখে মোবাইল দেখছিস কেনো, কেউ বলে না পড়াবাদ দিয়ে বন্ধুদের নিয়ে গল্প করছিস কেনো। কেউ বলে না। তবুও কেনো জানি মাঝ রাতে হঠাৎ করেই শুনতে পাই আম্মুর সেই বকা, শুনতে পাই কিরে পড়া রেখে মোবাইল টিপিস কেন।
আধরাতে যখন ঘুম ভেঙে যায় তখন ঘুমের ঘোরে মাঝে মাঝে মনে হয় আমার নিজ বাড়িতেই আছি আবার মাঝে মাঝে তো আম্মু বলে ডেকেই উঠি কিন্তু পরক্ষণেই মনে পড়ে যে আম্মু আমার থেকে ৫৬ কিলোমিটার দূরে।

রান্না খারাপ হলেও কিছু বলা যাবে না বললে হয়তো খালা রাগ করে আর আসবেনা। বোয়া একদিন আসলে দুইদিন আসে না। কাল দুপুরে আসবো মামা, এটা বলে এর পরের দিন সকালে এসে নানা অযুহাত দিতে শুরু করে। যার সবকটায় শুধু শুধু যা সেও বুঝে আমিও বুঝি কিন্তু কিছুই বলা যাবেনা। সব চাকরিতেই সবাই বস কে বা পরিচালক কে দেখে ভয় পায় কিন্তু এইদিকে মেসে আমাদের ভয় পেতে হয় বোয়াকেই।
বোয়া যখন আসেনা তখন একবেলা না খেয়েই কাটিয়ে দেই অনেক সময় আবার যখন দেখি পরের বেলায়ও আসছে না তখন জীবন বাচাঁনোর জন্য হলেও রান্না করতে হয়, যে আমি বা আমরা কখনো রান্নাঘরেই যাইনাই এর আগে কখনো। পরিস্থির ঠেলায় মানুষ সব শিখে যায়। মেস লাইফে মাসের প্রথম ১৭ দিন যেনো মেসের ছেলেরা রাজার হালে চলে, এদের মাসের বাকি দিনের যাবতীয় চাহিদা এরা এই ১৭ দিনে বাড়ি থেকে পাঠানো টাকা দিয়ে মেটায়। বাকি দিন গুলো রুমে বসে কাটিয়ে দেয় কারণ কাছে টাকা থাকেনা সেই পরের মাসের টাকার অপেক্ষায়। মেস জীবনে গিয়ে বাজার করতে গেছে কিন্তু বাজারের টাকা বাঁচিয়ে নিজের পকেটে ঢুকায় নাই এই রকম ছেলে খুব কম পাওয়া যায়।
আমার কাছে মনে হয় মেসের ছেলেরা পারেনা এই রকম কাজ নেই,এরা বাজার করা থেকে শুরু করা রান্না করা, কাপড় কাচা, সবগুলো কাজেই পাড়ে, মেসের ছেলে এরা গরুর মাংসের থেকে পোল্ট্রির মুরগী খেতে বেশি অভ্যাস্থ। এদের পানি খেতে কোন গ্লাস লাগেনা। এদের যদি গ্লাসেও পানি দেওয়া তবু এরা সেটা বেতলে ঢেলে তার পর বোতল দিয়ে পানি খেতে ভালেবাসে। মেসের ছেলেরা কখনো অহংকারী হয় না, এরা যেকোনো পরিবেশে অন্য কারো সাথে নিজেকে খাপ খাইয়ে নিতে পারে
মেস লাইফের কথা দুপচাঁচিয়া উপজেলার সাকিব আহমেদ এর কাছে জানতে চাইলে বলেন, মেস জীবন অনেক কষ্টের। এখানে থাকা খাওয়ার সমস্যা। তাছাড়াও আপন জনদের ছেড়ে একা এক থাকতে হয়। বিভন্ন জেলা থেকে আসা নতুন রুপে মানুষ চিনা যায় নিজের পরিবার রাখে মেসের বড় ভাই বন্ধু ছোট ভাইদের নিয়ে মেস পরিবার, তবুও মেসে থাকার আনন্দটাই অন্যরকম, রোমাঞ্চকর। আমরা সংগ্রাম করে, কষ্ট করে বেঁচে থাকতে হয়। এজন্য মেসে থাকা ছেলেরা দৃঢ়চিত্তের, সাহসী, সংগ্রামী, বাস্তববাদী হয়।
দুপচাঁচিয়া উপজেলার এম এ বাতেন খান বলেন, এটাই মেসের জীবন। কিছু করার নেই। মধ্যবিত্ত পরিবারে যখন জন্ম নিয়েছি তখন স্বপ্ন পূরণ করতে এমন যুদ্ধ বাধ্যতামূলক। মেসের জীবনে নিজ দায়িত্বেই সব কাজ করতে হয়।

মেসের জীবনের প্রতি পদে পদে সংগ্রাম, ত্যাগ ও স্বপ্ন জড়িয়ে আছে। তাই মেসের জীবন প্রত্যেক মেধাবী শিক্ষার্থীরর জন্য অধিক গুরুত্বপূর্ণ। স্বপ্ন পূরণের বড় ভূমিকা রাখবে মেসের জীবন।

Share.
Leave A Reply

মোঃ আব্দুল আওাল হিমেল
প্রকাশক ও সম্পাদক 
দ্যা মেইল বিডি ডট কম
মোবাইল: +৮৮০ ১৩১৪-৫২৪৭৪৯
ইমেইল: themailbdnews@gmail.com
ঠিকানা: ১০২/ক, রোড নং-০৪, পিসি কালচার হাউজিং সোসাইটি, শ্যামলী, ঢাকা-১২০৭

নিউজরুম: +৮৮০ ১৩১৪-৫২৪৭৪৯
জরুরী প্রয়োজন অথবা টেকনিক্যাল সমস্যা: +৮৮০ ১৮৩৩-৩৭৫১৩৩

© 2024 Themailbd.com. Designed and developed by Saizul Amin.
Exit mobile version