কে. এম. সাখাওয়াত হোসেন : নেত্রকোণায় চাঞ্চল্যকর শিশু হত্যা ও দুটি মাদক মামলায় তিনজনকে যাবজ্জীবন কারাদন্ড দিয়েছেন আদালত। বৃহস্পতিবার বেলা ১২টায় নেত্রকোণা অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিজ্ঞ বিচারক এ. এফ. এম মারুফ চৌধুরী জনাকীর্ণ আদালতে এ রায় ঘোষণা করেন। একই সঙ্গে প্রত্যেক আসামী পৃথক পৃথক অর্থ দন্ড ঘোষণা করেন।
দন্ডপ্রাপ্তরা হলেন, সদর উপজেলার ছেওপুর (মুক্তির বাজার) গ্রামের অমল সরকারের পুত্র পলাশ সরকার (৩০), পৌর এলাকার মঈনপুর গ্রামের মেহেদী হাসানের ইয়াসমিন আক্তার (৩০) ও পূর্ব চকপাড়ার মৃত আব্দুল ওহাবের পুত্র মো. কাইয়ুম ওরফে কিংকন (৪০)।
আদালত সূত্রে জানা যায়, ২০১৩ সালের ২৫ আগষ্ট জেলার কলমাকান্দা উপজেলার ডুমুরিয়াকোনা গ্রামের সুমন মল্লিকের ছেলে বিশাল মল্লিককে (৬) সদর উপজেলার ছেওপুর (মুক্তির বাজার) গ্রামের অমল সরকারের পুত্র পলাশ সরকার (৩০), ডুমুরিয়াকোনা গ্রামের অনিল মল্লিকের পুত্র কনক মল্লিক ও যোগীন্দ্র চন্দ্র দাসের পুত্র স্বপন দাস নিজ ঘরে ছুরি দিয়ে জবাই করে হত্যা করে পালিয়ে যায়। ২৬ আগষ্ট আসামীদের গ্রেফতার করে বিজ্ঞ আদালতে হাজির করলে গ্রেফতারকৃত আসামীরা শিশু বিশাল মল্লিক হত্যাকান্ডে জড়িত থাকার অপরাধ স্বীকার করে বিজ্ঞ আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দী দেয়। সুমন মল্লিকের গোয়ালঘর থেকে গরু চুরির অপরাধে সামাজিক বিচারে অপমানের প্রতিশোধ হিসাবে পূর্ব পরিকল্পিতভাবে আসামীরা এ হত্যাকান্ড ঘটায়।
চাঞ্চল্যকর এ হত্যা মামলাটি ২০১৩ সালের ২৫ নভেম্বর উপপরিদর্শক (এসআই) আব্দুল কাদির আসামীদের বিরুদ্ধে আদালতে চার্জসীট দাখিল করেন। বয়স আঠারো বছরের নিচে হওয়ায় আসামী কনক মল্লিক ও স্বপন দাসকে কিশোর আদালতে মামলার জন্য প্রেরণ করেন।
পৌর এলাকার মঈনপুর গ্রামের মেহেদী হাসানের ইয়াসমিন আক্তারকে (৩০) ২০১৮ সালের ২৮ মে দিবাগত রাত সাড়ে ৮টার সময় শহরের ট্রাক স্ট্যান্ড সংলগ্ন মোটর শ্রমিক ইউনিয়ন অফিসের সামনে থেকে ৫০৭ গ্রাম হেরোইনসহ নেত্রকোণা মডেল থানা পুলিশ গ্রেফতার করে। অপর আসামী পূর্ব চকপাড়ার মৃত আব্দুল ওহাবের পুত্র মো. কাইয়ুম ওরফে কিংকনকে (৪০) পৌর শহরের হিরামন সিনেমা হলের সামনে থেকে ২৩০ গ্রাম হেরোইন বিক্রির সময় হাতেনাতে আটক করে। তারা উভয়ই দীর্ঘদিন ধরে এলাকায় মাদক ব্যবসার সাথে জড়িত।
রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবি অতিরিক্তি পিপি কমলেশ কুমার চৌধুরী, নেত্রকোণা বারের সভাপতি অ্যাড. ব্যোমকেশ ভট্রাচার্য্য ও আদালতের স্টেনোগ্রাফার মো. রাসেল মিয়া তাদের সাথে কথা বলে এসব তথ্য নিশ্চিত হওয়া গেছে।