ভোট কেন্দ্রে যেতে অসমর্থ- এমন চার ধরনের ভোটারের জন্য নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচন থেকে চালু করা হয়েছে পোস্টাল ভোট। প্রবাসী, কারাবন্দি, নির্বাচনী এলাকার বাইরে বসবাসকারী ও শারীরিকভাবে অক্ষম ভোটাররা ডাকযোগে (পোস্টাল ব্যালটে) ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারবেন।
দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচন ঘিরে নিজ নির্বাচনী এলাকার বাইরে অবস্থানরত ভোটারদের জন্য এই পোস্টাল ব্যালটের মাধ্যমে ভোটের বিষয়টি প্রচারের জন্য বলেছে নির্বাচন কমিশন।
বুধবার নির্বাচন ভবনে আন্তঃমন্ত্রণালয় সভায় বলা হয়েছে, আগ্রহী বাংলাদেশি ভোটার তালিকাভুক্ত প্রবাসীরা চাইলে দূতাবাসের মাধ্যমে এই সুযোগ কাজে লাগাতে পারে।
বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও দপ্তরের ৪০ জন প্রতিনিধির অংশগ্রহণে আড়াই ঘণ্টার ওই বৈঠক শেষে ইসি সচিব মো. জাহাংগীর আলম জানান, আইনের আলোকে পোস্টাল ব্যালটে শুধু এবার নয়, সবসময় ভোট দেওয়ার সুযোগ ছিল।
২০০৮ সালে চালু হওয়া এই বিধানের প্রযোগ তেমন হয়নি। নির্বাচন কমিশন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে এই ভোটের দিকে জোর দৃষ্টি দিয়েছে। গত দুটি জাতীয় নির্বাচনে ভোটারদের খারাপ অভিজ্ঞতা থাকা এবং মাঠের প্রধান বিরোধী দল যদি নির্বাচনে অংশ না নেয় তাহলে ভোটকেন্দ্রে ভোটারদের আনা অনেকটা চ্যালেঞ্জ হবে। তবে নির্বাচনে জনগণের ব্যাপক আগ্রহ রয়েছে। সাম্প্রতিক অতীতে হওয়া সিটি কর্পোরেশনে বিএনপি নির্বাচনে অংশগ্রহণ না করলেও সেগুলোতে কোথাও কোথাও ৫০% এর বেশি ভোট পড়েছে। এদিক বিবেচনায় ইসির পোস্টাল ভোটকে ব্যাপক প্রচারণায় নিয়ে আসা ভালো ফল দেবে বলে মনে করেন নির্বাচন বিশেষজ্ঞরা।
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পর জারি করা পরিপত্রে (৩) পোস্টাল ব্যালটের বিষয়টির ব্যাপক প্রচারে রিটার্নিং কর্মকর্তাদের নির্দেশ দিয়েছে সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান ইসি। আন্তঃমন্ত্রণালয়ের বৈঠকেও ইসির পক্ষ থেকে বিদেশে বাংলাদেশ মিশনসহ সংশ্লিষ্টদের মধ্যে ভোটদানের এই প্রক্রিয়া নিয়ে প্রচারণা চালানোর কথা বলা হয়েছে।
নির্বাচনী আইন অনুযায়ী, চার ধরনের ভোটার পোস্টাল ভোট দিতে পারবেন। তারা হচ্ছেন- নির্বাচনী দায়িত্বে নিয়োজিত ব্যক্তিবর্গ, প্রবাসী, সরকারি চাকরিজীবী যিনি চাকরিসূত্রে নিজ এলাকার বাইরে বসবাস করেন ও কারাবন্দি।
ইসি বলছে, চাকরিসূত্রে নিজ এলাকার বাইরে বসবাসকারী ব্যক্তি, কারাবন্দি ও প্রবাসীরা নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার ১৫ দিনের মধ্যে সংশ্লিষ্ট রিটার্নিং কর্মকর্তা বরাবর পোস্টাল ভোটের জন্য আবেদন করতে পারবেন।
আবেদন পাওয়ার পর রিটার্নিং কর্মকর্তা আবেদনকারী ভোটারের কাছে একটি পোস্টাল ব্যালট পেপার ও একটি খাম পাঠাবেন। সঙ্গে ভোট দেওয়ার নির্দেশনা, ঘোষণাপত্র, একটি ছোট ও একটি বড় খামসহ প্রয়োজনীয় কিছু কাগজ সরবরাহ করবে ইসি। ওই ব্যালটে ভোট দেওয়ার পর নির্ধারিত খামে করে ডাক বিভাগের সার্টিফিকেট অব পোস্টিংয়ের মাধ্যমে এটি ডাকযোগে রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে ফেরত পাঠাবেন ভোটার।