এ,এম স্বপন জাহান
মধ্যনগর উপজেলা প্রতিনিধি:
আগামী দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার প্রতিবাদে ৪৮ ঘণ্টার হরতালের দ্বিতীয় দিন আজ।তবে মাঠে নেই মধ্যনগর উপজেলা বিএনপিসহ বিভিন্ন ইউনিয়ন ও ওয়ার্ডের নেতাকর্মীরা। পুলিশি আতঙ্কে দিন পার করছেন মধ্যনগর উপজেলা বিএনপির নেতাকর্মীরা। গ্রেপ্তারের ভয়ে অনেকেই বাড়ি ঘর ছাড়া হয়েছে । এছাড়াও উপজেলা বিএনপির সিনিয়র নেতারাও রয়েছেন আড়ালে-আবডালে। এমনকি উপজেলা পর্যায়ের নীতিনির্ধারকদের মোবাইলও বন্ধ পাওয়া যাচ্ছে। পুলিশের গ্রেপ্তার এড়ানোর কৌশল হিসেবে তারা মোবাইল বন্ধ রাখছে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে।
গত ৩১ অক্টোবর থেকে চলমান হরতাল, অবরোধের সমর্থনে মিছিল কিংবা কোনো সভা-সমাবেশ দেখা যায়নি চোখে পরার মত।বিএনপির চলমান আন্দোলনের শুধু চতুর্থ দফার ৪৮ ঘন্টার অবরোধের দ্বিতীয় দিনে সুনামগঞ্জ জেলা যুবদলের বন পরিবেশ বিষয়ক সহ সম্পাদক এম শহীদের নেতৃত্বে পিকেটিং ও বিক্ষোভ মিছিল ছাড়া মধ্যনগর উপজেলা বিএনপির কোন কর্মসূচি বাস্তবায়ন হয় নি।হরতাল-অবরোধ কর্মসূচির শুরু থেকেই মধ্যনগরে দলটির এমন নাজুক অবস্থা দেখা গেছে।
হামলা ও সংঘর্ষের ঘটনায় ২৮ অক্টোবর মহাসমাবেশ পণ্ড হওয়ার পরের দিন ২৯ অক্টোবর সারা দেশে সকাল-সন্ধ্যা হরতাল দেয় বিএনপি।এর পর থেকে থেমে থেমে চলতে থাকতে বিএনপি ও সমমনা দলগুলোর আন্দোলন কর্মসূচি। এরই মধ্যে নির্বাচন কমিশন গত ১৫ নভেম্বর বুধবার তফশিল ঘোষণা করেছে।আগামী ৭ জানুয়ারি হবে ভোট।
হরতাল-অবরোধে দোকানপাট, ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান, কল-কারখানা, অফিস-আদালত ও স্কুল-কলেজ খোলা ছিল।মধ্যনগর থেকে ধর্মপাশা রোডে যানবাহন চলাচল ছিল স্বাভাবিক।তবে সতর্ক অবস্থানে ছিল মধ্যনগর থানা পুলিশ।হরতাল অবরোধ ঘিরে যাতে কোন বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি না করতে পারে সেজন্য পুলিশের টহল জোরদার করা হয়েছে বলে জান যায়।
এ অবস্থায় বিএনপির এই অবরোধ কর্মসূচিতে মধ্যনগর উপজেলা বিএনপির ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে বিভিন্ন রাজনৈতিক মহল সহ তৃনমূল বিএনপির কর্মীদের মধ্যে।তারা দাবী করছেন অযোগ্য নেতাদের বিভিন্ন কমিটিতে দায়িত্ব দেওয়ার কারনেই মাঠে দাড়াতে পারছে না বলে অনেকই ধারনা করছেন।
এদিকে গ্রেফতার আতঙ্কে আত্মগোপনে চলে গেছেন উপজেলা বিএনপি এবং অঙ্গ সংগঠনের শীর্ষ ও মধ্যমসারির নেতারা। গত ২৮ অক্টোবর বিএনপির মহাসমাবেশ কে কেন্দ্র করে উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক,যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক, ছাত্রদলের সদস্য সচিব কারাগারে,নতুন করে বিএনপির ১২ নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে নাম উল্লেখ সহ অজ্ঞাতনামা রেখে নাশকতার মামলার করে মধ্যনগর থানা পুলিশ এরই মধ্যে সেই মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে সেচ্ছাসেবক,যুবদল সহ তিন নেতাকে।সিনিয়র ও মধ্যমসারির নেতারা মাঠে না থাকায় একধরনের নিরব হয়ে রয়েছে উপজেলা বিএনপি। ঝুঁকি নিতে চাচ্ছেন না কেউ। এর ফলে মধ্যনগরে হরতাল অবরোধের কোন প্রভাব পড়ছে না বলে জানা গিয়েছে।
অপরদিকে আগামী ৭ জানুয়ারি দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন উপলক্ষে মাঠে সক্রিয়ভাবে ভোটের লড়াই চালিয়ে যাচ্ছেন মনোনয়ন প্রত্যাশীরা।তারা প্রতিদিনই সভা সমাবেশ মিছিল মিটিং করে জনগনের মন জোগানোর চেষ্টা চালাচ্ছেন।বিএনপির বর্তমান কর্মসূচি মাথায় না নিয়েই শান্তি সমাবেশ সহ বিভিন্ন কর্মসূচি চালিয়ে যাচ্ছেন বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গিয়েছে।
এ বিষয়ে বিএনপির সিনিয়র নেতাকর্মীদের মধ্যে অনেকের ফোন বন্ধ থাকায় তাদের বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয় নি।
মধ্যনগর উপজেলা বিএনপির অন্যতম নেতা ও সুনামগঞ্জ জেলা যুবদলের বন ও পরিবেশ বিষয়ক সহ সম্পাদক এম শহীদ বলেন,উপজেলা বিএনপির পদপদবীতে যারা আছে,তারাই গ্রেপ্তার আতংকে পালিয়ে বেড়াচ্ছে হরতাল অবরোধ পালন করবে কে।আমি নিজ উদ্যোগে নেতাকর্মীদের মনোবল চাংগা রাখতে ও সাহস যোগাতে রাস্তায় দাড়িয়েছিলাম।আমি সহ ১২ জনের নাম উল্লেখ করে মিথ্যা মামলা দিয়েছে।দল করলে মামলা হামলার ভয় পেলে চলবে না।আমাদের ঐক্যবদ্ধ হয়ে এই স্বৈরাচারী সরকারের পতনের জন্য হলেও রাজপথে নামতে হবে।
এবিষয়ে মধ্যনগর বিএনপির একাদিক নেতাকর্মীদের সাথে কথা বলে জানা যায়,সিনিয়র নেতাকর্মীরা মামলা ও গ্রেপ্তারের আতংকে মাঠে নামছে না বলে চলমান আন্দোলন কর্মসূচিতে মধ্যনগর উপজেলা বিএনপির এই নাজুক অবস্থা।
এ দিকে বিএনপি সহ সমমনা দলগুলোর হরতাল কেন্দ্র করে যেকোনো নাশকতা প্রতিরোধে কঠোর অবস্থানে রয়েছে পুলিশ। মধ্যনগর বাজার ও পিপরাকান্দা ঘাটে পুলিশের টহল বাড়ানো হয়েছে। কোনো ধরনের অরাজকতা ও পিকেটিং প্রতিরোধে সতর্ক অবস্থানে রয়েছে মধ্যনগর থানা পুলিশ।