তিমির বনিক,মৌলভীবাজার প্রতিনিধি:
গত ৭ নভেম্বর সন্ধ্যায় মৌলভীবাজার সদরের চাঁদনীঘাট ইউনিয়নের পাহাড় বর্ষিজোড়া এলাকায় ফেসবুক আইডি নিয়ে বিরোধের জেরে প্রকাশ্যে ঘরে ঢুকে বাবা-মা’র সামনে রেজাউল করিম নাঈম নামে ২১ বছর বয়সী কলেজ পড়ুয়া তরুণকে নির্দয়-অমানবিকভাবে দেশীয় অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে রক্তাক্ত করে আহত করার ১০ ঘণ্টা পর সিলেটের এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে যাত্রাপথে নেয়ার পর ভোর ৪টায় মৃত্যু হয় ওই তরুণ নাঈমের। ওই ঘটনায় গোটা জেলা জুড়ে নিন্দা আর সমালোচনার ঝড় সৃষ্টি হয়। প্রতিবেশী নুরুল ইসলামের নেতৃত্বে ওই হামলা চালানো হয়।
ঘটনার একদিন পর মূল হোতা নুরুল ইসলামকে অভিযুক্ত করে ১০ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন নিহত নাঈমের বাবা মো. চেরাগ মিয়া (মামলা নং ৮/৩৪০)। পুলিশ আসামিদের ধরতে অব্যাহত রেখেছে বলে পুলিশ জানা গেছে।
গত বৃহস্পতিবার ৯ নভেম্বর চেরাগ মিয়া বাদী হয়ে মৌলভীবাজার মডেল থানায় বর্ষিজোড়া এলাকার ইদ্রিস মিয়ার ছেলে নুরুল ইসলামকে ১নং আসামী করে ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে মোট ১০ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত ৪-৫ জনকে আসামী করে মামলা দায়ের করেন। তবে ঘটনার পরদিন সকালে সোহান নামে একজনকে পুলিশ আটক করতে সক্ষম হলেও প্রধান আসামীসহ অন্য অভিযুক্তদ বাড়ি তালা দিয়ে গাঁ-ঢাকা দিয়েছে। এখন পর্যন্ত মূল আসামী নুরুল ইসলামসহ জড়িত সব আসামীদের ধরতে পুলিশ সাঁড়াশি অভিযান চালাচ্ছে। আসামীরা সবাই নিহত নাঈম এর প্রতিবেশী ও একই এলাকার বাসিন্দা।
অন্য আসামিরা হলেন, নুরুল ইসলাম এর ছেলে মোঃ রনি মিয়া (২৩), কাদির মিয়ার ছেলে আনোয়ার হোসেন (২৪), ইদন মিয়ার ছেলে সোহান মিয়া (১৯), আব্দুল আজিজ এর ছেলে মোঃ সাইমন ইসলাম (২১), ইদন মিয়ার ছেলে মোঃ ইমন মিয়া (২১), আলামিন মিয়া (২০) পিতা অজ্ঞাত, সাকিল হোসেন (২১) পিতা অজ্ঞাত, নুরুল ইসলাম এর স্ত্রী পারভিন বেগম (৪৫) ও নুরুল ইসলাম এর মেয়ে জেসি আক্তার (২০) সহ অজ্ঞাত ৪ থেকে ৫ জন।
এদিকে কলেজ ছাত্র হত্যাকাণ্ডের প্রধান আসামি নুরুল ইসলাম ঘটনার পর থেকেই এলাকা ছেড়ে গা-ঢাকা দিয়েছেন। নুরুল ইসলাম-কে এক সময়ে বিএনপির বিভিন্ন রাজনৈতিক কর্মসূচিতে সক্রিয় দেখা গেলেও ক্ষমতার পট-পরিবর্তনের সাথে সাথে ধিরে ধিরে খোলস পাল্টিয়ে ফেলেন। অপরদিকে ছেলে হারিয়ে ঘটনার ৪দিন পর এখনো নাঈমের পরিবারে চলছে শোকের মাতম। নিহত নাঈম পরিবারে সবার বড়, তারা দুই ভাই ও একবোন।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ও মৌলভীবাজার মডেল থানার উপপরিদর্শক (এসআই) নাজমুল ইসলাম জানান, সব আসামীদের ধরতে পূলিশসহ আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর অভিযান চলছে। দ্রুতই সব আসামী ধরা পড়বে।
জানতে চাইলে মৌলভীবাজার মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হারুনুর রশিদ চৌধুরী জানান, মামলা হয়েছে, তদন্ত হচ্ছে এবং আসামীদের ধরতেও চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি।