সেমিফাইনালের শেষ দল হিসেবে নাম লেখাতে লড়াইয়ে তিন দল। তবে আজ শ্রীলঙ্কাকে ৫ উইকেটে হারিয়ে শেষ চারে এক পা যেন দিয়েই রাখল নিউজিল্যান্ড। বিশ্বকাপে নিজেদের সর্বশেষ লিগ ম্যাচে শ্রীলংকাকে ৫ উইকেটে উড়িয়ে দিয়েছে কিউইরা। এমন রাজসিক জয়ের ফলে কিউইদের সেমিতে খেলা এখন অনেকটাই নিশ্চিত। নিউজিল্যান্ডের দাপুটে পারফরম্যান্সের সামনে পাত্তাই পায়নি শ্রীলংকা।
ব্যাঙ্গালোরের এম চিন্নাস্বামী স্টেডিয়ামে টসে জিতে আগে শ্রীলংকাকে ব্যাটিংয়ে পাঠায় নিউজিল্যান্ড। ব্যাটিংয়ে নেমে শুরুটা অবশ্য ভালোভাবে করতে পারেনি কিউইরা। দলের ৩ রানের মাথায় সাজঘরে ফিরে যান ওপেনার পাথুম নিসাঙ্কা। তবে আরেক প্রান্তে ঝড় তুলেছিলেন ওপেনার কুশল পেরেরা। বাকিদের উইকেট ছুঁড়ে দেওয়ার মিছিলে ব্যতিক্রম ছিলেন শুধু পেরেরা। মারকাটারী ব্যাটিংয়ে দলের বোর্ডে রান তুলতে থাকেন তিনি।
ক্রিজের আরেক প্রান্তে যেন দাঁড়াতেই পারছিলেন না লংকান ব্যাটাররা। কুশল মেন্ডিস, সাদিরা সামারবিক্রমা এবং চারিথ আসালাঙ্কা তিনজনই আউট হয়েছেন এক অঙ্কের ঘরে। আগ্রাসী ব্যাটিংয়ে দারুণ এক ফিফটি হাঁকান পেরেরা। তবে ফিফটির পরেই থেমেছেন তিনি। দলীয় ৭০ রানের মাথায় ২৮ বলে ৫১ রানের বিস্ফোরক ইনিংস খেলে আউট হয়ে যান পেরেরা।
ওপেনার পেরেরা আউট হওয়ার পর আর দলের হাল ধরতে পারেননি তেমন কেউ। শেষ দিকে মাহিশ থিকশানা এক প্রান্তে দাঁড়িয়ে যান। ধীরে হলেও গুরুত্বপূর্ণ রান আসে থিকশানার ব্যাট থেকে। চোট পেয়েও ধৈর্য্যের সঙ্গে দারুণভাবে ব্যাটিং করে যাচ্ছিলেন থিকশানা। শেষের দিকে দলের ইনিংসটাকে তিনিই টেনেছেন। ৯১ বলে ৩৮ রানের ইনিংস খেলে শেষপর্যন্ত টিকে ছিলেন তিনি। ৪৬.৪ ওভারের খেলা শেষে ১৭১ রানের মাথায় অলআউট হয়ে যায় শ্রীলংকা। দিলশান মাদুশাঙ্কাও যথেষ্ট ধৈর্য্যের পরিচয় দিয়েছেন। ৪৮ বলে ১৯ রানের ইনিংস খেলেন তিনি।
নিউজিল্যান্ডের হয়ে ৩ উইকেট শিকার করেন ট্রেন্ট বোল্ট। এছাড়া লকি ফার্গুসন, রাচিন রবীন্দ্র এবং মিচেল স্যান্টনার নেন ২টি করে উইকেট। ১ উইকেট তোলেন টিম সাউদি।
জবাব দিতে নেমে লংকানদের ১৭১ রানের অল্প পুঁজিকে যেন এক ফুঁ দিয়েই উড়িয়ে দিতে চাইল নিউজিল্যান্ড। ওপেনিংয়ে নামা দুই কিউই ব্যাটার রাচিন রবীন্দ্র এবং ডেভন কনওয়ে মিলে দলকে এনে দেন উড়ন্ত সূচনা। শুরু থেকেই লংকান বোলারদের ওপর চড়াও ছিলেন দুজন। মারমুখি ব্যাটিংয়ে দ্রুতগতিতে দলের বোর্ডে রান তুলতে থাকেন কনওয়ে এবং রাচিন।
আগ্রাসী ব্যাটিংয়ে ফিফটির খুব কাছে চলে গিয়েছিলেন রাচিন এবং কনওয়ে। দুজনের জুটিটাও চলে যায় সেঞ্চুরি ছোঁয়ার কাছাকাছি। তবে দুটির কোনোটিই ছোঁয়া হয়নি। উদ্বোধনী জুটি ভেঙেছে ৮৬ রানের মাথায়। ৪২ বলে ৪৫ রানের ইনিংস খেলে আউট হন কনওয়ে। রাচিনও থেমেছেন ফিফটির আগেই। দলের ৯৩ রানের মাথায় ৩৪ বলে ৪২ রান করে আউট হয়ে যান রাচিন রবীন্দ্র।
হুট করেই দুই ওপেনারের উইকেট হারিয়ে কিছুটা চাপে পড়ে যায় নিউজিল্যান্ড। কমে আসে রানের গতি। তবে চারে নামা ড্যারিল মিচেল লংকান বোলারদের চেপে বসতে দেননি। বিরুদ্ধ পরিস্থিতিতে রানের চাকা সচল রাখেন তিনি। দারুণ কার্যকরী ব্যাটিংয়ে দলকে জয়ের খুব কাছে নিয়ে যাচ্ছিলেন মিচেল। তবে দল জেতার অল্প কিছুক্ষণ আউট হন মিচেল। ৩১ বলে ৪৩ রানের দুর্দান্ত এক ইনিংস খেলে আউট হন তিনি। জয়ের বাকি কাজটা সেরেছেন গ্লেন ফিলিপস। ১০ বলে ১৭ রানের দারুণ এক ইনিংস খেলে দলকে জিতিয়ে মাঠ ছাড়েন ফিলিপস। ১৬০ বল হাতে রেখে ৫ উইকেটের জয় পায় নিউজিল্যান্ড।
শ্রীলংকার হয়ে ২ উইকেট নেন অ্যাঞ্জেলো ম্যাথিউস। এছাড়া ১টি করে উইকেট নেন মাহিশ থিকশানা এবং দুশমন্থ চামিরা।
এই জয়ের ফলে টেবিলের ৪ নম্বরে থাকল নিউজিল্যান্ড। পাকিস্তান অথবা আফগানিস্তান খুব বিশাল কোনো ব্যবধানে না জিতলে সেমিতে যাচ্ছে কিউইরাই।