রুহুল আমিন, ডিমলা(নীলফামারী)
নীলফামারীর ডিমলায় প্রকাশ্যে দরদাম করে ঘুষ নেওয়ার ঘটনায় অভিযুক্ত শিক্ষা কর্মকর্তা নুর মোহাম্মদকে অবশেষে বদলি করা হয়েছে। প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের প্রজ্ঞাপনে তাকে সিরাজগঞ্জের চৌহালী উপজেলায় বদলি করা হয়।
বুধবার (১ নভেম্বর) প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের সরকারি পরিচালক আব্দুল আলিম স্বাক্ষরিত প্রজ্ঞাপনে এ আদেশ দেওয়া হয়।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন নীলফামারী জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা এ এম শাহজাহান সিদ্দিক।
তিনি বলেন, প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের এক প্রজ্ঞাপনে তার বদলির আদেশ জারি করা হয়েছে। তিনি গত বৃহস্পতিবার পর্যন্ত ছুটি নিয়েছেন। আদেশে বলা হয়েছে, ৭ই নভেম্বরের মধ্যে তিনি বর্তমান কর্মস্থলের দায়িত্বভার হস্তান্তর করবেন। অন্যথায় ৮ই নভেম্বর থেকে তাৎক্ষণিকভাবে অবমুক্ত বলে গণ্য হবেন।
সাম্প্রতিক সময়ে, ওই শিক্ষা কর্মকর্তার বিরুদ্ধে নামমাত্র কাজ করে বিদ্যালয়ের উন্নয়ন ও মেরামতের টাকা আত্মসাতের অভিযোগ করেছিলেন শিক্ষকগণ।
শিক্ষকদের অভিযোগ ছিল বরাদ্দের টাকা নিজের অ্যাকাউন্টে আটকে রেখে টাকা তুলে নেওয়ার জন্য প্রধান শিক্ষকদের খবর দেন। যেসব বিদ্যালয় ঘুষ দিতে অস্বীকৃতি জানায় তাদের টাকা আটকে রাখেন তিনি। এছাড়াও বিদ্যালয়ের উন্নয়ন ও মেরামতের বরাদ্দ থেকে ২০ থেকে ২৫ ভাগ টাকা ঘুষ নেন।
তাছাড়া শিক্ষক-কর্মচারীদের বিভিন্ন ফাইল সই করতে তিনি এক থেকে পাঁচ হাজার টাকা পর্যন্ত দরদাম করে নিয়ে থাকেন।
ইতিপূর্বে ওই শিক্ষা কর্মকর্তা ঘুষ গ্রহণের কথা স্বীকার করে বলেন, ট্রেজারি ও অডিট শাখায় কিছু টাকা দেওয়া লাগে। হিসাবরক্ষণ অফিস আর অডিট কর্মকর্তাকে ঘুষ দিতে শিক্ষকদের কাছ থেকে ঘুষ নেওয়া হয়। ঘুষ লেনদেন অনেক আগে থেকেই চলমান। আমি হুট করে কি এটাকে বন্ধ করতে পারি? বিভিন্ন খাতে ঘুষ দিতে হয়, এ টাকা কি আমি আমার বেতন থেকে দেব?
গত বছরের ২৪শে আগস্ট শিক্ষা কর্মকর্তা নুর মোহাম্মদের দরদাম করে ঘুষ নেওয়ার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম (ফেসবুকে) ভাইরাল হয়। প্রাথমিক অনুসন্ধানে তা প্রমাণিত হলে তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা দায়ের হয়। এতে ওই কর্মকর্তার শুনানি সন্তোষজনক না হওয়ায় জেলা প্রশাসন ও শিক্ষা অধিদপ্তর থেকে আলাদা দুটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। তদন্তে নুর মোহাম্মদের বিরুদ্ধে অসদাচরণ ও দুর্নীতির অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় তাকে বিধিমালা অনুযায়ী বর্তমান বেতন গ্রেডের দুই ধাপ নিচে অবনমিতকরণ দণ্ড দেওয়া হলেও স্বপদে বহাল রাখা হয়েছিলো।