স্বীকৃতি বিশ্বাস, যশোরঃ
“করোনা মহামারীতে মণিরামপুরের ৫৪৯ বস্তা ত্রাণের চাল চুরি মামলার চার্জশিটভুক্ত আসামী মণিরামপুর উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান উত্তম চক্রবর্তী বাচ্চু’র বিরুদ্ধে মহামান্য সুপ্রিম কোর্টের রুল ইস্যু”
মহামারী করোনাকালীন সময়ে ৫৪৯ বস্তা ত্রাণের চাল চুরির অভিযোগে বিশেষ ক্ষমতা আইন, ১৯৭৪ এর অধীনে দায়েরকৃত মামলার অভিযোগপত্রভূক্ত আসামী যশোর জেলার মনিরামপুর উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান জনাব উত্তম কুমার চক্রবর্তী বাচ্চুর স্বপদে বহাল থেকে দায়িত্ব পালন কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না তা ০৪ (চার) সপ্তাহের মধ্যে জানতে চেয়ে মহামান্য হাইকোর্ট বিভাগ রুল ইস্যু করেছেন।
উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগাঠনিক সম্পাদক বাবু সন্দীপ ঘোষের অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে মাননীয় বিচারপতি নাঈমা হায়দার ও মাননীয় বিচারপতি কাজী জিনাত হকের দ্বৈত বেঞ্চ এ রিট জারি করেন।
উল্লেখ্য করোনা মহামারীর সময় সারাদেশ যখন দিশেহারা তখন মণিরামপুর উপজেলা যুবলীগের আহবায়ক ও উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান প্রতিমন্ত্রী স্বপন ভট্টাচার্যের ভাগ্নে উত্তম চক্রবর্তী বাচ্চুর চালচুরির এ ঘটনা ঘটিয়ে সারাদেশে আলোড়ন তুলেছিল। তখন উত্তম চক্রবর্তী বাচ্চুসহ চালচুরি কান্ডে জড়িতদের বিরুদ্ধে মামলা হলে তাদেরকে আদালতে সোপর্দ করা হয়। যশোর জেলা ও দায়রা জজ আদালতে উত্তম চক্রবর্তী বাচ্চু আত্নসমর্পণ করলে বিচারক ইফতিখার ইসলাম মল্লিক তাঁকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন। এ বিষয়ে রাষ্ট্র পক্ষের কৌঁসুলি (পিপি) ইদ্রিস আলী বলেন, সরকারি ত্রাণের চাল চুরির মামলায় ভাইস চেয়ারম্যান উত্তম চক্রবর্তী বাচ্চু অভিযোগপত্র ভুক্ত আসামি।ঐ মামলায় তিনি আদালতে হাজির হয়ে আত্মসমর্পণ করে জামিনের জন্য আবেদন করেন। আদালত জামিন না মঞ্জুর করে তাকে যশোর কেন্দ্রীয় কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন। করোনাকালীন সময়ে ৪ এপ্রিল বিকেলে মণিরামপুর উপজেলার বিজয়রামপুর এলাকার ভাই ভাই রাইস মিল অ্যান্ড চালকলে অভিযান চালিয়ে ৫৪৯ বস্তা ত্রাণের চাল উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় চালকলের মালিক আব্দুল্লাহ আল মামুন ও ট্রাকচালক ফরিদ হাওলাদারকে আটক করেছিল পুলিশ। পরে মণিরামপুর থানার তৎকালীন উপপরিদর্শক (এসআই) তপন কুমার সিংহ আটক দুজনের নাম উল্লেখ ও অজ্ঞাত পরিচয়ের আরও কয়েকজনকে আসামি করে মামলা করেন। ঐ দুই আসামি আদালতে জবানবন্দীতে উপজেলার বিজয়রামপুর গ্রামের চালকল ব্যবসায়ী শহিদুল ইসলাম, জুড়ানপুর বিদ্যালয়ের নৈশ প্রহরী জগদীশ দাস ও একই গ্রামের বাসিন্দা আব্দুল কুদ্দুস জড়িত থাকার কথা বলেন।পরে ওই তিনজনকে গ্রেফতার করেছিল পুলিশ। তারাও আদালত স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন যাতে প্রতক্ষভাবে জড়িত ছিলেন উত্তম চক্রবর্তী বাচ্চু। মামলায় অভিযোগ পত্রে বলা হয়, ৫৪৯ বস্তা সরকারি ত্রাণের চাল। ঐ চাল ভাইস চেয়ারম্যান উত্তম চক্রবর্তী বাচ্চু বেশি মুনাফার লোভে কালোবাজারে বিক্রি করে দেন।
বর্তমানে উত্তম চক্রবর্তী বাচ্চু প্রতিমন্ত্রী স্বপন ভট্টাচার্যের (স্থানীয় সরকার ও পল্লী উন্নয়ন বিভাগ) আপন ভাগ্নে হওয়ার সুবাদে ক্ষমতার অপব্যবহার করে দেশের স্থানীয় সরকার বিভাগের আইনকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে স্বপদে বহাল আছেন এবং অপরাধ প্রমাণিত হওয়ার পরও প্রকাশ্যে দাপটের সহিত মণিরামপুরে ঘুরে বেড়াচ্ছেন।
তারই পরিপ্রেক্ষিতে মণিরামপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগাঠনিক সম্পাদক মণিরামপুরবাসীর পক্ষ হয়ে ৩১/১০/২০২৩ তারিখে বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টে করোনা মহামারীর সময় ৫৪৯ বস্তা ত্রাণের চাল চুরির অভিযোগে বিশেষ ক্ষমতা আইন, ১৯৭৪ এর অধীনে দায়েরকৃত মামলার অভিযোগপত্রভূক্ত আসামী যশোর জেলার মনিরামপুর উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান জনাব উত্তম কুমার চক্রবর্তী বাচ্চুর স্বপদে বহাল থেকে দায়িত্ব পালন কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না তা ০৪ (চার) সপ্তাহের মধ্যে জানতে চেয়ে মহামান্য হাইকোর্ট বিভাগ রুল ইস্যু করেছেন। যার তত্বাবধানে ছিলেন মাননীয় বিচারপতি নাঈমা হায়দার ও মাননীয় বিচারপতি কাজী জিনাত হকের দ্বৈত বেঞ্চ। যার সিরিয়াল নম্বর ১৮৬।
উল্লেখ্য সন্দীপ ঘোষের এ দাবিকে মণিরামপুর সাধারণ মানুষ একাত্বতা প্রাকাশ করেছে। এবং উত্তম চক্রবর্তী বাচ্চুসহ তারসাথে জড়িত সবার দ্রুত বিচার দাবি করেছে।