দ্যা মেইল বিডি / খবর সবসময়

; ;

দ্যা মেইল বিডি ডট কম

তথ্য মন্ত্রণালয় কর্তৃক নিবন্ধিত অনলাইন পত্রিকা, নিবন্ধন নং- ১১

রুহুল আমিন, ডিমলা(নীলফামারী)

ভাঙ্গাচোরা শৌচাগারের দুর্গন্ধে দম বন্ধ হওয়ার উপক্রম। এছাড়া হাসপাতালের ময়লা, নোংরা বিছানায় ছারপোকার উপদ্রব। সর্বত্রই উড়ছে মশা-মাছি ও ভ্যাপসা দুর্গন্ধ। এ চিত্র নীলফামারীর ডিমলা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে। সেখানকার অপরিচ্ছন্ন পরিবেশে রোগী ও তাদের স্বজনেরা রয়েছেন দুর্ভোগের মধ্যে।

চিকিৎসা প্রার্থীরা বলছেন, হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের অদক্ষতা- অব্যবস্থাপনায় এমন পরিবেশের সৃষ্টি হয়েছে। ৫০ শয্যাবিশিষ্ট এ হাসপাতালে উপজেলাসহ অন্যান্য এলাকার বহির্বিভাগ ও জরুরি বিভাগ মিলিয়ে গড়ে প্রতিদিন ৩০০/৪০০ জনরোগী চিকিৎসা সেবা নিতে আসেন।

সরেজমিন দেখা গেছে, হাসপাতালের প্রতিটি সিঁড়ি ও মেঝেতে ধুলাবালির স্তর পড়ে রয়েছে। যেখানে সেখানে নোংরা- অপরিচ্ছন্ন পরিবেশ বিরাজ করছে। রোগীর শয্যাগুলোতে ছাড়পোকার ছড়াছড়ি। সেগুলো কামড় বসাচ্ছে রোগী ও তাদের স্বজনদের শরীরে। লোহার তৈরি নড়বড়ে বেড, ওষুধ রাখার ট্রেতেও পড়েছে মরিচা তালা- চাবিও ভাঙ্গাচুরা। বৈদ্যুতিক পাখাগুলো নষ্ট। কোনটি চলে আবার কোনটি চলে না! পুরুষ ওয়ার্ডের ৪টি শৌচাগার প্রায় ৬ মাস ধরে নষ্ট। মলমূত্র শৌচাগারের মেঝেতে সরিয়ে ছিটিয়ে রয়েছে। মল মূত্রের দুর্গন্ধে এর আশপাশ দিয়ে যাওয়া যায় না। সেখান থেকে উড়ছে মশা-মাছি। হাঁটাহাঁটি করছে বিভিন্ন ধরনের কীটপতঙ্গ। শৌচাগারের ময়লা আবর্জনা ওয়ার্ডের মেঝেতে ছুঁই ছুঁই অবস্থা। ফলে রোগ-জীবাণু ছড়িয়ে পড়ছে সমগ্র স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ওয়ার্ডে। এছাড়া মহিলা ওয়ার্ডের গোসলখানা- শৌচাগারগুলোও ব্যবহারের অনুপযোগী। শৌচাগারে ঢুকতে গেলে দুর্গন্ধে দমবন্ধ হয়ে আসে। শৌচাগারের ভিতরটা স্যাঁতসেঁতে। পানি জমে মেঝে পিচ্ছিল হয়ে গেছে। শৌচাগারে বৈদ্যুতিক বাতি নেই। তাছাড়া ডাস্টবিনের ময়লা সময় মত পরিষ্কার না করায় চারপাশে দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছে। বেশিরভাগ শৌচাগারে পানি থাকেনা।

রোগী ও স্বজনদের অভিযোগ, দুর্গন্ধে হাসপাতালে থাকতে হয় নাকে- মুখে হাত চেপে অথবা রুমাল চেপে। বারবার বলার পরও এসবের কোনো প্রতিকার হচ্ছে না। হাসপাতালে পরিচ্ছন্নকর্মীরা দিনে একবার এসে কোনোরকমে শুধু মেঝে ঝাড়ু দিয়ে যান। এরপর আর কোনো খবর থাকে না।

উপজেলার পূর্ব ছাতনাই ইউনিয়ন থেকে আসা এক রোগীর স্বজন জাহিদুল ইসলাম বলেন, হাসপাতালে মানুষ আসে সুস্থ হতে। কিন্তু এখানে যে পরিবেশ, তাতে উল্টো অসুস্থ হয়ে বাড়ি যেতে হবে। শৌচাগারের দরজা খোলামাত্র দুর্গন্ধ সারা ওয়ার্ডে ছড়িয়ে পড়ে। তখন রোগী ও রোগীর স্বজনদের নাকে- মুখে কাপর গুঁজে থাকা ছাড়া উপায় থাকে না।

মহিলা ওয়ার্ডে ভর্তি রোগীরা জানান, ভর্তির সময় হাসপাতাল থেকে যে বিছানার চাদর দেওয়া হয়েছে, এক দিন পরেই তা নোংরা হয়ে যায়। বারবার বলার পরও তা পরিবর্তন করা হয়না। বিছানায় ছারপোকার অত্যাচারে রাতে রোগীরা ঘুমাতে পারে না। ছারপোকার কামড়ে শরীর ফুলে যায়। অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে কোনরকমে শৌচকর্ম সারা গেলেও গোসলের পরিবেশ নেই এখানে।

নাম প্রকাশ অনিচ্ছুক হাসপাতালের একজন চিকিৎসক বলেন, হাসপাতাল পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখার পাশাপাশি প্রতিদিন অন্তত একবার শয্যার চাদর পরিবর্তন করার নিয়ম রয়েছে। চিকিৎসার পাশাপাশি রোগীর সুস্থতার জন্য এটা অত্যন্ত জরুরি। কিন্তু এখানে তা যথাযথভাবে হতে দেখা যায় না। আমরা প্রায়ই সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে বলি, কিন্তু কাজ হয় না! এছাড়া হাসপাতালের পেছনে রয়েছে চিকিৎসক ও কর্মচারীদের থাকার আবাসিক এলাকা। সেখানে আছে ঝোপঝাড় আর দীর্ঘদিনের জলাবদ্ধতা। পানি পচে প্রতিদিন দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছে। বাসিন্দারা বলছেন, পুরো হাসপাতাল ময়লার মধ্যে ডুবে আছে। বাধ্য হয়েই এখানে থাকতে হচ্ছে। যদিও পরিচ্ছন্নতার জন্য লাখ লাখ টাকা বরাদ্দ আসে: কিন্তু তা কোথায় খরচ হয় তা কেউ জানে না?

উপজেলা হিসাব রক্ষণ কার্যালয় সুত্রে জানা গেছে, ২০২২-২৩ অর্থবছরে হাসপাতালটির পরিছন্নতা বাবদ বিভিন্ন ভাউচারে সাড়ে আট লাখ টাকা বিল উত্তোলন করেছেন উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা।

ডিমলা উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. রাশেদুজ্জামান বলেন, সময়মতো বেডসিট পরিবর্তন করা হয়। চিকিৎসা সরঞ্জামাদির অচ্ছিষ্ট অংশ প্রথমত অস্থায়ী ডাষ্টবিনে রাখা হয়। এরপর সেখান থেকে নির্দিষ্ট স্থানে ফেলে দেওয়া হয়। আমাদের হাসপাতালে মেরামতের জন্য শৌচাগার ব্যবহার কিছুটা বিঘ্ন ঘটেছে।

স্বাস্থ্যের এই কর্মকর্তা আরো বলেন, আমাদের মাত্র দুইজন পরিছন্নতাকর্মী রয়েছে। জনবল সংকটের কারণে এই অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। আর হাসপাতালের  আবাসিক এলাকা পরিচ্ছন্নতার জন্য বরাদ্দ নেই। হাসপাতাল পরিচ্ছন্নতা বাবদ বরাদ্দের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি এ বিষয়ে কোনো তথ্য দিতে অস্বীকৃতি জানান।

Share.
Leave A Reply

মোঃ আব্দুল আওাল হিমেল
প্রকাশক ও সম্পাদক 
দ্যা মেইল বিডি ডট কম
মোবাইল: +৮৮০ ১৩১৪-৫২৪৭৪৯
ইমেইল: themailbdnews@gmail.com
ঠিকানা: ১০২/ক, রোড নং-০৪, পিসি কালচার হাউজিং সোসাইটি, শ্যামলী, ঢাকা-১২০৭

নিউজরুম: +৮৮০ ১৩১৪-৫২৪৭৪৯
জরুরী প্রয়োজন অথবা টেকনিক্যাল সমস্যা: +৮৮০ ১৮৩৩-৩৭৫১৩৩

© 2024 Themailbd.com. Designed and developed by Saizul Amin.
Exit mobile version