মঙ্গলবার, সেপ্টেম্বর ১৭, ২০২৪

ডিমলায় এলজিইডির রাস্তা নির্মাণে অনিয়মের ও দুর্নীতি অভিযোগ

রুহুল আমিন,ডিমলা(নীলফামারী)

নীলফামারীর ডিমলা সদর ইউনিয়নের ভাটিয়া পাড়া চৌপথি হতে তিতপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় পর্যন্ত এক কিলোমিটা। চেইনেজ ১০০০ থেকে ২০০০ হাজার মিটার পর্যন্ত। সড়ক আইডি নং ১৭৩১২৪০৪৬। চলমান ওই রাস্তার কাজে ব্যাপক অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে।

জানা যায়, স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি) অর্থায়নে নির্মাণাধীন ওই রাস্তা। নির্মাণ কাজের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান বুলুরাণী ট্রেডার্স, দক্ষিণ গোমনাতি, ডোমার, নীলফামারী কাজটি পান। চলমান এ কাজে অত্যন্ত নিম্নমানের ইট, ইটের খোয়া ও কাঁদামাটিযুক্ত ভিটিবালু ব্যবহার করা হচ্ছে। এছাড়া ইটের খোয়া এবং ভিটিবালুর পরিমাণের মিশ্রণ ১/১ দেওয়ার নিয়ম থাকলেও ভিটিবালুর পরিমান বেশি এবং ইটের খোয়া কম দেওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে।

স্থানীয় ব্যক্তি জুলহাস, আব্দুল করিম, শৈলেন চন্দ্রসহ আরো অনেকে এই রাস্তার কাজ তদারকিতে ডিমলা উপজেলার এলজিডির কর্মকর্তাদের গাফিলতি এবং স্বজনপ্রীতি আছে বলেও অভিযোগ করেন।

এলজিইডির ২০২৩-২৪ অর্থ বছরে রংপুর বিভাগ উন্নয়ন প্রকল্পের অন্তর্ভুক্ত উক্ত রাস্তা নির্মাণ কাজের জন্য প্রাক্কলিত বরাদ্দ ৮৬ লাখ ৬৪ হাজার ১৬৫ টাকা। চুক্তিমূল্য ৮২ লাখ ৩০ হাজার ৯৫৭ টাকা। রাস্তা নির্মাণ কাজের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান অনিয়ম ও দুর্নীতির মাধ্যমে রাস্তার বক্স কাটিং এর পর সেই মাটি মিশ্রিত বালু দিয়ে বক্স ভরাট করণ, রোড রোলারের ব্যবহার না করা, পানি কিউরিং না করা এবং নিম্নমানের ইটের খোয়াসহ নির্মাণ সামগ্রী ব্যবহার করে ডব্লিউবিএম তৈরি করা হচ্ছে।
স্থানীয় সাধারণ মানুষজন আরো বলেন, অনিয়মের অভিযোগের পর কাজ বন্ধ রাখার অনুরোধ করা হলেও অফিস কর্মকর্তা এবং ঠিকাদারের যোগসাজশে এখনও অনিয়মের মাধ্যমে ওই কাজ সমাপ্ত করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন ঠিকাদার ও তাদের লোকজন।

এ রাস্তায় নিম্নমানের নির্মাণ সামগ্রী ব্যবহারের ফলে কিছু দিনের মধ্যেই রাস্তাটি ভেঙ্গে পানিতে যাচ্ছে সরকারি টাকা। কয়েক মাস যেতে না যেতেই ব্যবহারের অনুপযোগী হয়ে পড়বে এসব রাস্তা। ফলে সরকারি বরাদ্দের অবমূল্যায়নের কারণে জনদুর্ভোগের শিকার হতে হয় এলাকাবাসীসহ সর্বসাধারণের।

সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, রাস্তা নির্মাণের কাজে ব্যাপক দুর্নীতি ও অনিয়ম করা হচ্ছে। বালুর পরিবর্তে কাদামাটি দিয়ে তার ওপর নিম্নমানের ইটের খোয়া ছিটিয়ে দেওয়া হচ্ছে। নিম্নমানের ইটেরভাঙ্গা অংশ রাবিশ দিয়ে কাজ করে হচ্ছে। রাস্তার কাজে স্থানীয় সরকার প্রকৗশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) উপ-সহকারী প্রকৌশলী আবু বকর সিদ্দিক, কার্য সহকারীসহ কাউকে এসে তদারকি করতে দেখা যায়নি। অথচ ইট, ইটের খোয়ায় পা দিয়ে চাপ দিলে তা ভেঙ্গে যাচ্ছে।

এ বিষয়ে স্থানীয় বাসিন্দা আব্দুল্লাহ- আল মামুন বলেন, ঠিকাদারকে টেন্ডারের চুক্তি অনুযায়ী কাজ করার কথা বললেও কোন তোয়াক্কা না করে অনুমোদন বিহীন নিম্নমানের ভিটিবালু, ইট ও ইটের খোয়া দিয়ে কাজ সম্পূর্ণ করার পাঁয়তারা চালিয়ে যাচ্ছেন। অভিযুক্ত ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধি প্রভাত সাহার নিকট এ রাস্তার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, কাজের মান এলজিইডি তদারকি করে বিল দিবে। আমরা দরপত্রের নির্দেশনা অনুযায়ী কাজ করছি। অফিস আমাদের কাছ থেকে শতভাগ কাজ বুঝিয়ে নিচ্ছেন।

এলজিইডির ডিমলা উপজেলা প্রকৌশলী মো. শফিউল ইসলাম বলেন, উন্নয়ন কাজের চুক্তি মোতাবেক কাজ না হলে ও কাজে অনিয়ম হলে ঠিকাদারের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এ বিষয়ে নীলফামারী এলজিডির নির্বাহী প্রকৌশলী মো. ফিরোজ হাসান বলেন, রাস্তার কাজে অনিয়ম পেলে ঠিকাদারের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আমি খোঁজ-খবর নিয়ে বিষয়টি জানার চেষ্টা করছি।

অনুমতি ব্যতিত এই সাইটের কোনো কিছু কপি করা কপিরাইট আইনে দণ্ডনীয়।

প্রিয় পাঠক অনলাইন নিউজ পোর্টাল দ্যামেইলবিডি.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন themailbdnews@gmail.com ঠিকানায়।

সর্বশেষ