কে. এম. সাখাওয়াত হোসেন : নেত্রকোণার খালিয়াজুরীতে টাকা পরিশোধ করা সত্ত্বেও যথাসময়ে এসএসসি পরীক্ষার রেজিষ্ট্রেশন সম্পন্ন না করায় ছাত্রের শিক্ষাজীবন থেকে ঝড়ে পড়েছে দুই বছর এবং শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে বিদ্যালয়ে ভর্তি, রেজিষ্ট্রেশন, ফরম পূরণ ও পরীক্ষা ফি বাবদ অর্থ নেওয়ার বিপরীতে কোন প্রকার রশিদ প্রদান না করার অভিযোগ উঠেছে নেত্রকোণার খালিয়াজুরী মডেল পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক রবীন্দ্র বিশ্বাসের বিরুদ্ধে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) বরবারের এমন লিখিত অভিযোগ দাখিল করেন খালিয়াজুরী উপজেলা সদরের বাসিন্দা মো. বকুল মিয়া। যথাসময়ে এসএসসি রেজিষ্ট্রেশনের টাকা দেওয়া হলেও ২০২৩ সালে এসএসসি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে পারেনি তার ছেলে মোজাহিদ মিয়া। প্রধান শিক্ষকের অনৈতিক কর্মকান্ড ও গাফিলতির কারণে তার ছেলে ২০২৪ সালে এসএসসি পরীক্ষাতে অংশগ্রহণ করতে পারবে না। মোজাহিদের আরেক সহপাঠী সুরুজ আলী তালুকদারের ছেলে সিয়ামের তার ছেলের মতো একই অবস্থা হয়েছে। শিক্ষা জীবন থেকে তাদের দুই বছর নষ্ট করার প্রতিকার চান অভিযোগকারী বকুল মিয়া।
এ বিষয়ে সুুরুজ আলী জানান, আমার ছেলে সিয়ামের রেজিষ্ট্রেশনের জন্য টাকা নিয়েও রশিদ দেননি প্রধান শিক্ষক। দেখা গেল ২০২৩ সালে এসএসসি পরীক্ষাতে অংশগ্রহণ করতে পরেনি। সাবেক ইউএনও এর কাছে অভিযোগ দেওয়া হলে প্রধান শিক্ষক জানায় ২০২৪ সালে এসএসসি পরীক্ষা অংশগ্রহণের ব্যবস্থা করে দিবেন। এখন স্কুলে যোগাযোগ করলে প্রধান শিক্ষক বলে ২০২৪ সালে না, ২০২৫ সালে এসএসসি পরীক্ষায় সিয়াম অংশগ্রহণ করতে পারবে। শিক্ষা জীবন থেকে ছেলের দুই বছর ঝড়ে পড়ায় আপেক্ষ করেন সিয়ামের বাবা।
খালিয়াজুরী উপজেলায় গণমাধ্যমকর্মী মৃণাল কান্তি দেব বলেন, গত তিন-চার মাস পূর্বে দিলরুবা নামে এক কৃষি শিক্ষক দীর্ঘদিন যাবত অনুপস্থিত থাকা ও মাতৃত্বকালীন ছুটি এসব বিষয়ে তথ্যাদি পেতে বিদ্যালয়ে হাজির হয়ে তথ্য অধিকারে আবেদন করি। প্রধান শিক্ষক রবীন্দ্র বিশ্বাস আবেদন গ্রহণ করেননি। পরে ডাকযোগে আবেদনটি প্রেরণ করা হলেও তিনি গ্রহণ না করায় তা ফেরত আসে।
প্রধান শিক্ষক রবীন্দ্র বিশ্বাস মুঠোফোনে বলেন, রশিদ প্রদান করে থাকি। দুই শিক্ষার্থী আমাদের সাথে যোগাযোগ করেনি। তাই তারা রেজিষ্টেশন করতে পারেনি। এখন ক্লাসে আছি। আপনার (প্রতিবেদক) সাথে সাক্ষাতে কথা হবে এর বাহিরে আর বেশি কথা বলতে চাননি তিনি।
স্কুল ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি ও খালিয়াজুরী সদর ইউপি চেয়ারম্যান গোলাম আবু ইসহাক বলেন, রশিদ প্রদান না করার বিষয়ে প্রধান শিক্ষককে বার বার বলেছি মিটিং করার জন্য। ছয় মাস পার হলেও তাকে দিয়ে মিটিং করাতে পারেনি। বেতনের বিল চলতি মাসে স্বাক্ষরের জন্য নিয়ে আসলে তাতে স্বাক্ষর করিনি। প্রধান শিক্ষককে বলে দিয়েছি মিটিং না হওয়া পর্যন্ত কোন বিলে স্বাক্ষর করবো না।
খালিয়াজুরীর ইউএনও এম. রবিকুল হাসান বলেন, অভিযোগের বিষয়টি আমার জানা নাই। গত সপ্তাহে আমি প্রশিক্ষণে ছিলাম। আজ (সোমবার) জেলা প্রশাসক মহোদয়ের কার্যালয়ে আছি। উপজেলায় গিয়ে অভিযোগের বিষয়টি খোঁজ নিয়ে দেখা হবে।