শাকিল বাবু
নজরুল বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি
জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ে ক্যাম্পাসের সুরক্ষা ও সার্বক্ষণিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে প্রথমবারের মতো সম্পূর্ণ ক্যাম্পাসকে ক্লোজড সার্কিট (সিসি) ক্যামেরার আওতায় নিয়ে আসা হয়েছে।
বুধবার (১১ অক্টোবর) দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের কনফারেন্স কক্ষে এক অনুষ্ঠানের মধ্যদিয়ে সিসি ক্যামেরার আওতায় সম্পূর্ণ ক্যাম্পাস কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন উপাচার্য অধ্যাপক ড. সৌমিত্র শেখর।
একদিকে ক্যাম্পাসের সীমানা প্রাচীর নির্মাণ ও অন্যদিকে সিসি ক্যামেরার মাধ্যমে সার্বক্ষণিক পর্যবেক্ষণ-এ দুইয়ের সমন্বয়ে যথাযথভাবে নিরাপত্তা নিশ্চিত করা ও স্মার্ট ক্যাম্পাস বিনির্মাণে আরও এগিয়ে যাওয়া যাবে বলে প্রত্যাশা ব্যক্ত করেন উপাচার্য।
অনুষ্ঠানে উপাচার্য অধ্যাপক ড. সৌমিত্র শেখর বলেন, “আমরা একটি সৌহার্দ্যপূর্ণ পরিবেশের মধ্যদিয়ে সুন্দর ক্যাম্পাস গড়তে চাই। সে ক্যাম্পাস গড়ার ক্ষেত্রে ইতোমধ্যেই আমরা অনেক দূরে এগিয়ে গিয়েছি। ইতোমধ্যেই চারিদিকে সীমনা প্রাচীর নির্মাণের মধ্য দিয়ে সুরক্ষিত। ক্যাম্পাসের দুদিকে দুইটি দৃষ্টি নন্দন গেট স্থাপনের কাজও অনেকদূরে এগিয়ে গেছে। দুটো গেটের মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের যে আলাদা একটি জগত হবে সেটি একটি নন্দন কানন হবে।”
সিসি ক্যামেরা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “আমরা স্বপ্ন দেখি যে আমাদের ক্যাম্পাসে কোনো দাঁড়োয়ান থাকবে না। যে কেউ একটি গেট দিয়ে প্রবেশ করে অন্য গেট দিয়ে বেরিয়ে গেলে তিনি অটো স্ক্যানিং হয়ে যাবেন। এই ক্যাম্পাস হবে নিজের বাড়ির মতো নিরাপদ ও শৃঙ্খলার সঙ্গে চলাচলের অভয়ারণ্য। এই ক্যমেরাগুলো যেমন যে কারো ব্যক্তিগত গোপনীয়তার সুরক্ষা দিবে তেমনি করে কোনো অনাকাঙ্খিত ঘটনা ঘটলে সেগুলোও খুঁজে বের করতে সহায়ক হবে।”
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন ট্রেজারার প্রফেসর ড. আতাউর রহমান, রেজিস্ট্রার কৃষিবিদ ড. মো. হুমায়ুন কবীর এবং অভিনেতা ও খন্ডকালীন শিক্ষক বৃন্দাবন দাস। এসময় বিভিন্ন অনুষদের ডিনবৃন্দ, প্রক্টর, প্রভোস্টবৃন্দ, বিভাগীয় প্রধানবৃন্দ, শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীসহ অন্যরা উপস্থিত ছিলেন।
সিসি ক্যামেরা স্থাপন সংক্রান্ত টেকনিক্যাল কমিটি সূত্রে জানা যায়, কেন্দ্রীয়ভাবে ৩২৫ টি ক্যামেরা, ৯টি বিভাগের নিজস্ব তহবিল থেকে ক্রয়কৃত ৪৯টি ক্যামেরা ও পূর্বে স্থাপিত ৫১টি ক্যামেরাসহ সার্বক্ষণিক ৪২৫টি ক্যামেরা দ্বারা নিরবিচ্ছিন্ন পর্যবেক্ষণ করা হবে।
প্রাপ্ত তথ্যমতে, ৩২৫ টি ক্যামেরা গুলো দিয়ে বাংলা ভাষা ও সাহিত্য বিভাগে ৫টি, ইংরেজীভাষা ও সাহিত্য বিভাগে ৪টি, সঙ্গীত বিভাগে ২টি, সি.এস.ই. বিভাগে ১৪টি, অর্থনীতি বিভাগে ৫টি, হিসাববিজ্ঞান ও তথ্য পদ্ধতি বিভাগে ৫টি, চারুকলা বিভাগে ৬টি, ফিন্যান্স এন্ড ব্যাংকিং বিভাগে ৫টি, ই.ই.ই. বিভাগে ১৫টি, হিউম্যান রিসোর্স ম্যানেজমেন্ট বিভাগে ৫টি, লোকপ্রশাসন ও সরকার পরিচালনবিদ্যা বিভাগে ৪টি, ফোকলোর বিভাগে ৩টি, আইন ও বিচার বিভাগে ২টি, এনভায়রনমেন্টাল সায়েন্স এন্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগে ৫টি, নৃ-বিজ্ঞান বিভাগে ২টি, পপুলেশন সায়েন্স বিভাগে ৩টি, স্থানীয় সরকার ও নগর উন্নয়ন বিভাগে ১টি, দর্শন বিভাগে ৫টি, সমাজবিজ্ঞান বিভাগে ২টি,ব্যবস্থাপনা বিভাগে ৫টি,পরিসংখ্যান বিভাগে ৫টি, মার্কেটিং বিভাগে ৩টি ক্যামেরা স্থাপন করা হয়। বিজ্ঞান অনুষদের ডিন অফিসে ২টি, কলা অনুষদের ডিন অফিসে ২টি, সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের ডিন অফিসে ৬টি, ব্যবসায় প্রশাসন অনুষদের ডিন অফিসে ৬টি, পরীক্ষা হল-১ এ ৮টি ও পরীক্ষা হল-২ এ ৮টি ক্যামেরা স্থাপন করা হয়।
এদিকে অগ্নি-বীণা হলে ১৬টি, দোলন-চাঁপা হলে ১৬টি, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলে ৪১টি ও বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হলে ৩১টি ক্যামেরা স্থাপন করা হয়। প্রশাসনিক ভবন-১ এ ৯টি ও প্রশাসনিক ভবন-২ এ ১৬টি, কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারে ১৫টি, উপাচার্য বাংলোতে ৩টি, মেডিকেল সেন্টারে ১০টি, আইসিটি সেলে ২টি ও ক্যাম্পাসের নানা স্থানে ২৮টি ক্যামেরা স্থাপন করা হয়েছে।