জীবনের সুন্দর মুহূর্তগুলো কাটিয়েছি ছোটবেলায়। স্কুলজীবনকে ঘিরে আছে হাজারো স্মৃতি আর হাজারো গল্প। স্কুল জীবনের স্মৃতিময় দিনগুলোর দিকে যখন ফিরে তাকাই তখন আবেগপ্রবন হয়ে পড়ি। ইচ্ছে করে আবার চলে যাই সেই সেই সুন্দর সময়টাতে, যে সময়টাতে ছিলোনা কোন চাওয়া আর পাওয়া। এখন আমাকে যদি আমাকে যদি কেহু একশত টাকা দেন আমি পূর্বের ঐ খুশি হতে পারিনা। স্কুল জীবনে বাসা থেকে যখন পাঁচ/ দশ টাকা দেওয়া হলে টিফিন পিরিয়ডে শরীফ চাচার দোকান থেকে পাঁচ টাকার গ্লুকোজ বিস্কুট, বার্মিজ আচার, ভুট্টা চিনি মিস্রিত খই ইত্যাদি। অতীতের জীবন ছিলো অনেক সুন্দর ও সুখময়।
স্কুল জীবনের দুষ্টুমি ও খেলাধুলা: আমাদের প্রত্যেকেরই স্কুল জীবনের কিছু স্মৃতি রয়েছে যা কখনোই ভুলতে পারবো না। বন্ধুদের সাথে দুষ্টুমি করার দিনগুলো সত্যিই আমার কাছে অনেক স্পেশাল। ক্লাস ফাঁকি দিয়ে নদীর পাড়ে ঘুরতে যাওয়া, গোসল করা, নদীতে ঝাঁপ দেওয়া, বন্ধুদের সাথে লুকোচুরি খেলা, ফুটবল, ক্রিকেট খেলা, স্কুল ফাঁকি দিয়ে লঞ্চে ঘুরাঘুরি করার সব স্মৃতিগুলো আমার মনের কোণে যত্ন করে রাখা। আজ অনেক বছর পার হয়ে গেলেও বারবার আমি ফিরে যাই সেই পুরনো দিনগুলোতে। আমার সেই পুরনো দিনের বন্ধুরা এখনো আমার কাছে সেই ছোট মনে হয়। বারবার ফিরে যেতে ইচ্ছে করে সেই ছোটবেলায়। বাস্তবতা বড়ই কঠিন। ছোটবেলায় ভাবতাম কবে বড় হব, বড় হয়ে এখন উপলব্ধি করতে পারছি ছোটবেলাটা আমাদের জন্য কতটা মজার ছিল।
স্পেশাল শিক্ষা দানের স্মৃতি: আমাদের স্কুল জীবনের সনটি ছিলো অনেক সুন্দর ( প্রথম শ্রেণি- ২০০১ সন, পঞ্চম শ্রেণি- ২০০৫ সন ) আমাদের ব্যাচে প্রায় ১০০+ শিক্ষার্থী ছিলাম, আমরা ছিলাম একটি মাত্র স্পেশাল ব্যাচ- ২০০৫ সনের, আমাদের ৩০ জন শিক্ষার্থী কে শিক্ষকদের রুমে স্পেশাল ভাবে শিক্ষাদান ও বৃত্তি পরীক্ষার জন্য প্রস্তুত করা হয়েছিলো। আমাদের সকলের হৃদয়ের স্পন্দন একজন প্রিয় শিক্ষক নির্মল স্যার সর্বক্ষণ কেয়ারিং ছিলাম। স্যার আমাদের পরীক্ষার কিছুদিন পড়ে তিনি ট্রান্সফার হয়ে অন্য একটি বিদ্যালয় চলে যায়।
স্কুল জীবনের সব থেকে রাগী স্যার ছিলেন- মরহুম মোঃ হাবিবুল্লাহ মাষ্টার, স্যারকে দেখলে প্রচন্ড ভয়ে থাকতেন ছাত্রছাত্রীরা। তখন আমাদের প্রধান শিক্ষক হিসেবে ছিলেন মরহুম মোঃ রফিকুল ইসলাম স্যার। আজ নিজে থেকেই বুঝতে পেরেছি স্যার আমাদের সঙ্গে কঠোর ব্যবহার করতেন শুধু আমাদের ভবিষ্যত সুন্দর করার জন্য। কিন্তু বুঝতে সময়টা দেরি হয়ে গেল। আজ আমি সবচেয়ে বেশি ফিরে পেতে চাই আমার স্কুলের বাউন্ডারি দেওয়া জীবনে।
বন্ধুদের নিয়ে লেখা: স্কুলের পাশদিয়ে হেঁটে গেলেই স্কুল জীবনের বন্ধুদের সাথে কাটানোর সেই দিন গুলো মনে পড়ে যায়। আমরা অনেক বন্ধু পেয়েছিলাম যাদের অনেকেই মাঝরাস্তায় ঝরে গেছে। স্কুলের বন্ধু গুলোর মধ্যে অনেকে খুব বড় অবস্থানে চলে গেছে। সেই ছোট্ট মুখগুলো আজ অনেক বড় বড় দায়িত্ব কৃতিত্বের সাথে পালন করে যাচ্ছে। ছোটবেলায় সব বন্ধুদের অনেক স্বপ্ন ছিল বড় হয়ে আমাদের স্কুলের জন্য ভালো কিছু করব। সময়ের সাথে সাথে ছোটবেলার বন্ধু গুলো কোথায় যেন হারিয়ে গেছে। প্রয়োজনের তাগিদে মানুষ ব্যস্ত হয়ে পড়ে, ভুলে যায় পুরনো দিনের কথাগুলো। কাজের ফাঁকে ফাঁকে একসময় মনে পড়ে ফেলে আসা দিনগুলোর কথা।
লেখক: ফয়েজ আহমেদ (মাহিন)
বিএসসি ইঞ্জিনিয়ার (ইইই)
প্রাক্তন শিক্ষার্থী (৫ম শ্রেণি- ২০০৫ সন) ১২৪নং নন্দলালপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়।