তাসলিমুল হাসান সিয়াম,গাইবান্ধা প্রতিনিধি:
১৯৮৪ সালে মহকুমা থেকে জেলায় রুপান্তরিত হয় গাইবান্ধা। ধীরে ধীরে অবকাঠামোগত উন্নয়ন হলেও জেলার সড়ক ব্যবস্থায় তেমন উন্নয়ন করা হয়নি । আঞ্চলিক সড়ক- মহাসড়কের সম্প্রসান ও নিয়মিত মেরামত করা হলেও গ্রামাঞ্চলের ১ হাজার ৬৪৪ কিলোমিটার সড়কে লাগেনি উন্নয়নের ছোঁয়া।
টানা বর্ষন কিংবা কয়েক ঘন্টার বৃষ্টিতে এই কাঁচা রাস্তাগুলো চলাচলের জন্য একেবারে অনুপযোগী হয়ে পড়ে। ছোট যান চলাচল তো দূরের কথা, কাদা পানিতে রাস্তা একাকার হয়ে যাওয়ায় হেঁটে চলাও দুষ্কর হয়ে পড়ে। চরম দুর্ভোগ পোহাতে হয় এসব সড়কে চলাচলকরী মানুষদের
গাইবান্ধা স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদফতরের (এলজিইডি) সুত্র জানায় ,পরিচিতি (আইডি নম্বর) তালিকায় না ওঠায় গুরুত্বপূর্ণ এসব রাস্তা পাকা হয়নি। এলজিইডি অফিস থেকে জানা যায়, ২০২২ সালের জুন পর্যন্ত গাইবান্ধায় এলজিইডির আওতায় ১ হাজার ১৫৭টি রাস্তার আইডি নম্বর নেই । এসব রাস্তার মোট দূরত্ব ১ হাজার ৬৬৪ কিলোমিটার। এর মধ্যে শুধু গাইবান্ধা সদর উপজেলায় ৪৫৬ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যরে ৩০৬টি রাস্তা রয়েছে, যেগুলো সম্পূর্ণ কাঁচা। আইডি নম্বর না থাকায় এসব রাস্তা পাকাকরণ প্রকল্প বাস্তবায়ন করা সম্ভব হচ্ছে না ।
গাইবান্ধা সদর উপজেলার রামচন্দ্রপুর ইউনিয়নের আরিফখা বাসুদেব পুর গ্রাম থেকে পলাশবাড়ী উপজেলার মনোহরপুর ইউনিয়নের মনোহরপুর গ্রামে যাওয়ার ২ কিলোমিটার রাস্তাটির গাইবান্ধা সদর উপজেলার অংশটি দীর্ঘ ৬০ বছরেও পাকা হয়নি । এতে ভোগান্তিকে সঙ্গী করে পথ চলতে হচ্ছে এই দুই গ্রামের অন্তত ছয় হাজার মানুষকে । এছাড়া এই সড়কটি দিয়ে প্রতিদিন যাতায়াত করে কয়েকশত শিক্ষার্থী । বর্ষা কালে রাস্তায় চলাচল করার পরিবেশ থাকে না জন্য বিদ্যালয়ে যেতে পারে না তারা ।
আরিফ খা বাসুদেব পুর গ্রামের পল্লী চিকিৎসক মাকছুদুর রহমান বলেন, স্বাধীনতার ৫২ বছরেও রাস্তাটির উন্নয়ন হয়নি । প্রতিদিন এই সড়কটি দিয়ে দুই গ্রামের কয়েক হাজার মানুষ গাইবান্ধা জেলা শহরে যাতায়াত করে অথচ বর্ষা কাল কিংবা টানা বৃষ্টিতে সড়কটি চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়ে । রাস্তা খারাপ হওয়ায় শুকনা মৌসুমেও দ্বিগুণ ভাড়া দিয়ে যাতায়াত করতে হয় হয় ।
৬ নং রামচন্দ্রপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মোসাব্বির হোসেন জানান, সম্প্রতি এডিবি ও ইউনিয়ন পরিষদের উন্নয়ন তহবিল থেকে ২৫০ মিটার সড়ক ঢালাই কাজ করা হয়েছে। পুরো রাস্তা পাকা করা ইউনিয়ন পরিষদের পক্ষে সম্ভব নয়। আমরা স্থানীয় সংসদ সদস্য ও এলজিইডিতে দরখাস্ত দিয়েছি ।
এলজিইডির সদর উপজেলার উপ-সহকারী প্রকৌশলী তহিদুল ইসলাম সরকার বলেন, গত বছরের শেষ দিকে এ উপজেলার ৩০৬টি রাস্তার আইডির জন্য সংশ্লিষ্ট দফতরে প্রস্তাব পাঠানো হয়। এখনও তা অনুমোদন হয়নি। একই তালিকা ২০১৯ সাল থেকেই পাঠানো হচ্ছে।
এলজিইডির জেলা নির্বাহী প্রকৌশলী ছাবিউল ইসলাম বলেন, গত বছর গাইবান্ধার ১ হাজার ৬৬৪ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যরে ১ হাজার ১৫৭টি রাস্তার তালিকা আইডির জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠানো হয়েছে। আইডি হয়ে গেলে কাঁচা রাস্তাগুলো পাকা করতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হবে।